ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিশ্বকাপ হবে এবার

প্রকাশিত: ১০:০৭, ২৫ মে ২০১৯

সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিশ্বকাপ হবে এবার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ১৯৯২ সালে পঞ্চম ওয়ানডে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৯ দল নিয়ে। সেবার রবিন লীগ পদ্ধতিতে সব দলই পরস্পরের সঙ্গে মোকাবেলা করেছিল প্রাথমিক রাউন্ডে। পরে শীর্ষ চার দল নিয়ে সেমিফাইনাল হয়েছিল। তাই প্রতিযোগিতাটা ছিল কঠিন। দুয়েকটি ম্যাচ হারলেও সুযোগ ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর। ২৭ বছর ও মাঝে ৬ বিশ্বকাপ পেরিয়ে গেছে, আবারও সেই ফরমেটে এবার ১২তম আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবার দল আরেকটি বেশি। ১০ দল নিয়ে বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের মাটিতে গড়াতে আর মাত্র ৫ দিন বাকি। এর আগে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর অধিনায়কেরা আইসিসি আয়োজিত আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। তবে ইতিহাসের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও কঠিন হবে বলে অভিমত জানিয়েছেন তারা। গত বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে রানার্সআপ হয় নিউজিল্যান্ড। সেই বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড। তারা আর ট্রফি বাইরে যেতে দেয়নি। ক্রিকেটের জন্মভূমি ইংল্যান্ড তিনবার ফাইনালে উঠলেও শিরোপা স্বাদ নিতে পারেনি। এবার তারা অন্যতম ফেবারিট। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ১০ এ থাকা দলগুলো নিয়েই এবার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অবশ্য সেরা ৮ দল সরাসরি সুযোগ করে নিয়েছে আর বাকি দুই দলকে আসতে হয়েছে বাছাইপর্ব খেলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তান বাছাই পেরিয়ে আসলেও জিম্বাবুইয়ে ব্যর্থ হয়েছে। প্রথমবারে জিম্বাবুইয়ে বিশ্বকাপ খেলতে পারছে না এবার। অর্থাৎ বর্তমান বিশ্বের সেরা ১০ দলই এবার বিশ্বকাপ খেলবে। আর ফরমেটটাকেও এমন করা হয়েছে যে কোন দলই নিশ্চিত হতে পারবে না তাদের সাফল্য নিয়ে। এই ময়দানী লড়াইয়ে নামার আগে অধিনায়করা নিজেদের মনোভাব জানিয়েছেন। গতবারের দুই ফাইনালিস্ট ও এবারের আয়োজক দেশের অধিনায়ক দিয়ে শুরু করে সেই কথামালাগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে দেয়া হলো- এ্যারন ফিঞ্চ (অস্ট্রেলিয়া) ॥ আমরা বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন, এটা যেমন সত্যি তেমনি এটাও সত্যি যে নতুন একটা আসর শুরু হচ্ছে। সব কিছুই একেবারে গোড়া থেকে শুরু করতে হবে। আমাদের ভাগ্য ভাল যে বিশ্বকাপ জেতা দলের ৬ জনকে এখনও আমাদের সঙ্গে পাচ্ছি। কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড) ॥ গত বিশ্বকাপে যারা আমাদের দলে ছিল, তাদের অনেকেই আছে। তাদের অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য বাড়তি পাওয়া। একটা ব্যাপার আমার কাছে মনে হয়েছে যে র‌্যাঙ্কিং, ফেবারিট, আন্ডারডগ- এসব নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। তবে আমি বলতে চাই সব দলই অনেক ভারসাম্যপূর্ণ আর ওই নির্দিষ্ট দিনটায় যেকোন কিছুই হতে পারে। ইয়ন মরগান (ইংল্যান্ড) ॥ এটা ১০ দলের বিশ্বকাপ, বিশ্বের সেরা ১০ দল খেলছে। আসরটা প্রচণ্ড প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আশা করছি খুব ভাল ক্রিকেট হবে বিশ্বকাপে। স্বাগতিক হিসেবে একটা সুবিধা তো আছেই! আমরা বেশিদিন নিজেদের বাসায় থাকতে পেরেছি, নিজেদের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পেরেছি। অনেক দিন ধরেই আমরা এই বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা নিয়েছি। মাশরাফি বিন মর্তুজা (বাংলাদেশ) ॥ সর্বশেষ আয়ারল্যান্ডে হয়ে যাওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে আমরা ভাল করেছি। আশা করছি ২ জুন ফাফের দলের বিপক্ষেও ভাল করব। ক্রিকেটে নিজেদের দিনে যেকোন দলকেই হারিয়ে দেয়া সম্ভব। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দলের জন্য, আমরা যদি শুরুটা ভাল করি, যদি সেটা ধরে রাখি তাহলে আমরা অনেক দূরে যেতে পারব। তবে সে জন্য শুরুটা খুব ভাল হতে হবে। বিরাট কোহলি (ভারত) ॥ বিশ্বকাপে সবাই বড় রানের কথা বলছে, দেশেও সংবাদ সম্মেলনে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল এই বিষয়ে। আমি বলেছি বিশ্বকাপে ২৬০-২৭০ রান করাও ৩৫০-৩৬০ করার মতোই কঠিন হবে। কারণ এটি বিশ্বকাপ, সবাইকেই চাপের মুখে খেলতে হবে, সবাই জেতার জন্য সর্বস্ব দিয়ে লড়াই করবে। আমি বলছি এই বিশ্বকাপে ২৫০ রান করেও কোন কোন দল ম্যাচ বাঁচাবে। এটাই হবে এ বিশ্বকাপের সৌন্দর্য। সরফরাজ আহমেদ (পাকিস্তান) ॥ সব দলই খুব ভারসাম্যপূর্ণ, সব দলই খুব ভাল দল। ইংল্যান্ডে পাকিস্তানের পারফর্মেন্স বরাবরই ভাল। ১৯৯২ সালে টেস্ট সিরিজের কথা যদি ধরি, এরপর ২০০৯ সালের বিশ্ব টি২০, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানের রেকর্ড বেশ ভাল। এই বিশ্বকাপেও আমরা খুব ভাল করার বিষয়ে আশাবাদী। ফাফ ডু প্লেসিস (দক্ষিণ আফ্রিকা) ॥ গত কয়েক বছরে দেখবেন খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট হচ্ছে ঘরে এবং ঘরের বাইরে। এমন নয় যে শুধু ঘরের মাঠেই একটা দল ভাল খেলছে। তবে বিশ্বকাপের মতো একটা টুর্নামেন্ট যেটা চার বছরে একবার আসে সেটায় ভাল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও অপেক্ষায় আছি মাঠে নেমে পড়ার। আর মাশরাফির ইচ্ছাটা পূরণ হতে দেব না। দিমুথ করুনারত্ন (শ্রীলঙ্কা) ॥ আমরা গত কয়েক বছরে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। ইংল্যান্ডে খেলারও আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা আছে। আশা করছি আমরা ভালই করব। প্রস্তুতি আর আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য আমরা একটু আগেভাগেই ইংল্যান্ডে চলে এসেছিলাম। কন্ডিশনের সঙ্গে আমরা বেশ মানিয়ে নিয়েছি। আমরা নিজেদের সেরা চেহারাতেই আছি, আশা করছি ভাল করব। জ্যাসন হোল্ডার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ॥ খুবই রোমাঞ্চকর একটা বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে। আগে বিশ্বকাপে যেমন হতো যে একটা দল চার-পাঁচটি ম্যাচ খেলত। এবার আরও কয়েকটি ম্যাচ বেশি খেলতে হবে। এখন ফরমেটটা বেশ রোমাঞ্চকর হয়েছে। বিশ্বকাপে এখন সবার সঙ্গে সবার খেলা, তাই শেষ ম্যাচে যে দলটা ট্রফি হাতে উদযাপন করবে তারা জানবে যে কতটা কষ্টকর ছিল পুরো যাত্রাটা। গুলবাদিন নায়েব (আফগানিস্তান) ॥ এখানে শীর্ষ সব দলের সঙ্গে থাকতে পেরে, শীর্ষ সব ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা খুবই অধীরভাবে অপেক্ষা করছি মাঠে নামার, নিজেদের সেরাটা দেয়ার আর আফগানিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করার। আশা করি আমরা সেটা ভালভাবেই করতে পারব আর নিজেদের সেরা খেলাটা খেলব।
×