ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্যাম্পাসে ঈদ আনন্দ

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ২৬ মে ২০১৯

 ক্যাম্পাসে ঈদ আনন্দ

ঈদ খুশির। ঈদ আনন্দের। প্রতি বছরই ঈদ আসে খুশির বারতা নিয়ে। ঈদের দিনটি হয়ে ওঠে নানা রঙে রঙিন। ঈদের দিনটিকে একটু আলাদাভাবে কাটানোর জন্য, ঈদের আনন্দ আর উছ¡াসটুকু প্রাণভরে উপভোগ করার জন্য সবার মধ্যেই কাজ করে এক অন্য রকম অনুভূতি। তাই সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ঈদের দিনটির জন্য। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই আগ্রহটা থাকে অনেক। তবে ঈদের সময়ও অনেকেই থাকেন ক্যাম্পাসে। এম এ আজাদ কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে পবিত্র ঈদে ক্যাম্পাসেই থাকেন। সেই সুবাধে ক্যাম্পাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় থেকে কয়েক বন্ধু মিলে ঈদ উদযাপন করেন। একই কথা বললেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্রী নুসরাত জাহান করভী এবং আইন বিভাগের ছাত্রী তানিয়া আফরোজ শান্তা। তাদের একজনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলায় এবং অন্য জনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়। তারা বললেন, একটা উল্লেখযোগ্য সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তাই আমরা ক্যাম্পাসেই ঈদ পালন করি। করভী এবং তানিয়ার মতো দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রোজা, ইফতার ও ঈদ ক্যাম্পাসেই উদযাপন করেছেন। আবার পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজমুল, সনন, ওয়াদুদ, মারজান ও শামসুদ্দিন শামস বললেন, ঈদের সময় গ্রামের বাড়ি না গিয়ে ক্যাম্পাসে ঈদ উদযাপন করার মতো শিক্ষার্থীও তাদের ক্যাম্পাসে কম নয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রশিবির বললেন, ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি, আমরা চাই ঈদে সব ঝগড়া, বিবাদ, ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলে সারা বিশ্বের মানুষ মেতে উঠুক এক অনাবিল শান্তি সুখের উল্লাসে। আর যারা এ আনন্দটা ক্যাম্পাসে কাটাবে তাদের কাছে এটি হবে অন্য রকম অভিজ্ঞতা। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মনির, রাকিব, নাজমুল, মিমি, মিতু ও মাহিয়া বলেন, তাদের শিক্ষা জীবনের শেষ প্রান্তে তারা শেষ বছরের ঈদ ক্যাম্পাসেই কাটিয়েছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ও সাংবাদিক এরশাদুল বারী কর্নেল। তিনি জানান, তার রাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষা জীবনের বিদায়ের বছর। তাই এবারে তারা কয়েক বন্ধু ক্যাম্পাসে শেষ বারের মতো মহাআনন্দে ঈদ উদযাপন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র নজিবুল ইসলাম মাঈনুল, দর্শন বিভাগের আমানুল্লাহ ফয়সাল ও ইংরেজী বিভাগের ছাত্রী জিনিয়া ঈদ ক্যাম্পাসে পালন করার কারণ ও অনুভূতি ব্যক্ত করেন এভাবে। ঈদের সময় ক্যাম্পাসে থাকার কারণ সম্পর্কে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র আমিনুল ইসলাম (সালমান) বলেন, অনেক শিক্ষার্থী আছে যাদের আর্থিক সঙ্গতি ভাল নয়। আমার মতো অনেকের বাড়ি দূরে হওয়ার কারণে এবং এ সময় নিরিবিলি পরিবেশে ক্যাম্পাসে ভাল পড়াশোনা করা যাবে বলে ক্যাম্পাসেই থেকে যায়। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুইনুল ইসলাম জানান, তার বাড়ি থেকে টাকা আসে না। সে একটা টিউশনি করে চলত। কিন্তু কিছু দিন আগে তার টিউশনিটা চলে যায়। বাড়ি যাওয়ার খরচ অনেক। ছোট ভাই-বোনদের জন্য কিছু নিয়ে যেতে হয়। টিউশনিটা হারিয়ে সে অনেকটা বেকায়দায় পড়েছিল। তাই এবার ঈদ সে ক্যাম্পাসেই করেছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস পার্ট-৩ এর শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান সুরভী জানান, ঈদের বন্ধে তাদের ক্যাম্পাসে নেমে এসেছে সুনসান নীরবতা। আর যারা ক্যাম্পাসে ঈদ কাটায়নি এবং যাদের বাড়ি ঢাকা থেকে অনেক দূরে তাদের ঈদের আনন্দটা একটু অন্য রকম হবে। কষ্টকর আবার সুখেরও বটে। ইমাদুল হক প্রিন্স
×