ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাহারি সাজ পোশাকে ঈদ

প্রকাশিত: ০৯:০১, ২৭ মে ২০১৯

 বাহারি সাজ পোশাকে ঈদ

ঈদের আমেজ এখন বাংলার প্রতিটি ঘরে, প্রতিটি পরিবারে। যার ঢেউ এসে পড়েছে পথে, শপিংমলে। ঢাকার মার্কেটসহ সারাদেশে চলছে এখন ঈদের তুমুল উৎসবমুখর গুঞ্জরণ। বিশেষ করে কেনাকাটার ধুম লেগেছে ফ্যাশন হাউস থেকে শুরু করে বিভিন্ন শপ হাউসে। এই ধুম চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত। ঈদের কেনাকাটায় সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় পোশাক আর এই পোশাকের মধ্যে শাড়ি হলো অন্যতম। বাঙালী নারীর কাছে শাড়ির কদর সব থেকে বেশি। অন্যান্য ড্রেসের সঙ্গে শাড়ি থাকবেই। শাড়ি না হলে যেন নারীর ঈদটাই থেকে যায় অপূর্ণ। তাই শপিংমলসহ বিভিন্ন মার্কেটের শাড়ির দোকানে যেন এখন পা ফেলারও যায়গা নেই। দেশীয় শাড়ির পাশাপাশি বিদেশী শাড়িও ঈদের কেনাকাটার তালিকায় স্থান পায়। দেশীয় শাড়ির মধ্যে সর্বাধিক চাহিদা হলো টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি ও জামদানি শাড়ির। এর পাশাপাশি মিরপুরের বেনারসি, কাতানের রয়েছে বিপুল সমাদর। জর্জেট, অর্গেসুতা, কামিতভরমসহ অভিজাত নামের সব বাহারি শাড়ি ও বিভিন্ন ড্রেস হাউসে। তবে এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি। টাঙ্গাইলের শাড়িতে সাম্প্রতিক ডিজাইনের বৈচিত্র্য এবং সহনীয় দাম নারীদের এই শাড়ির প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার অন্যতম মূল কারণ। সুতি, সিল্ক, হাফসিল্কসহ নানা নামের টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি ঈদের সময় থাকে নারীর কালেকশন লিস্টের শীর্ষে। এর পরই থাকে জামদানি এবং মিরপুরের বেনারসি-কাতান। জামদানি কিছুটা বেশি দামের হলেও মিরপুরের বেনারসি-কাতানের দামটাও রয়েছে নাগালের মধ্যে। যার ফলে টাঙ্গাইলের তাঁত পল্লী, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ তাঁত পল্লীসহ সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনার গাঁয়ের জামদানি ফ্যাক্টরি এবং মিরপুরের বেনারসি পল্লীতে চলছে তাঁত শিল্পীদের অবিশ্রান্ত ব্যস্ততা। ঈদের মাস কয়েক আগে থেকেই দেশীয় শাড়ির এই চেনা অঞ্চলগুলোতে গিয়ে হাঁটতে-হাঁটতে তাই অনর্গল তাঁতের খটাংখট শব্দের মুখরতা কানে আসাটা স্বাভাবিক। মেয়েদের নিত্য ব্যবহার্য পোশাক সালোয়ার কামিজ আনে বৈচিত্র্যতা। পাজামা, ওড়না ও কামিজের ভিন্নধর্মী নকশা সালোয়ার কামিজকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে যা সহজেই দৃষ্টি কাড়ে ক্রেতাদের । ভয়েল, পপলিন, প্রিন্ট, আদ্দি কটন, কটন জর্জেট, টিসি সিনথেটিক কালার ইত্যাদি কাপড়ের সমন্বয়ে এবার প্রস্তুত হয়েছে সালোয়ার কামিজ। (আবহাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে সালোয়ার কামিজের কাপড় সিলেকশন করা হয়েছে। সালোয়ার কামিজের পাশাপাশি ওড়নার বৈচিত্র্য এবার লক্ষণীয়, এর কাটিং ডিজাইন এবং লেআউটে রয়েছে ভিন্নতা। সুতার কাজ, ক্রিস্টাল, মেটাল আইটেম এবং কড়ি দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে সালোয়ার কামিজ এবং ওড়নায়)তাছাড়া শিপন জর্জেটের স্ট্রাইপ পাঠানের হেভি কাজের সালোয়ার কামিজ প্রচুর উঠেছে বাজারে। স্টোন এবং স্ট্রিং পাইপের ডিজাইনের সালোয়ার কামিজ এবার বাজারে বেশ। সুতি কাপড়ের চাহিদাও এবার বেশ রয়েছে। পাইপিন এবং টারসোলর সমন্বয়ে কটন এবং এন্ডি কটনের ডিজাইন করা হয়েছে। এ সম্বন্ধে ডিজাইনার হৃদি হাসান বলেন, সব বয়সী মেয়েদের জন্য সালোয়ার কামিজ প্রস্তত হলেও নতুন নতুন ডিজাইনের সালোয়ার কামিজ মূলত তরুণীদের কথা মাথায় রেখে করা হয়। দুয়ারে ঈদ। কেনাকাটার ধুম পড়েছে বাজারে। এমন কোন মার্কেট বা দোকান নেই, যেখানে ক্রেতার ভিড় লক্ষ্য করা যায় না। সবকিছুই অবশ্য চাহিদা এবং রুচির পরিবর্তন। এক বছর ঘুরে আসে ঈদ। এর মধ্যে আবার এক মাস সিয়াম সাধনা। তাই ঈদের আনন্দ যেন চোখে মুখে লেগে থাকে সবার। কিভাবে এই স্বপ্নময় ঈদকে রাঙিয়ে তোলা যায় বাস্তবে সে পাঁয়তারা চলতে থাকে ছোট বড় সবার মধ্যে। একটু বেশি ব্যস্ততা দেখা যায় কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের মধ্যে। ঈদের বেশ কিছুদিন আগেই তাদের ক্লাস যেমন বন্ধ হয় তেমনি কেনাকাটার ক্লাসটা যেন শুরু। যত তড়িঘড়ি করে কেনাকাটা সারা যাবে, তত আগে বাড়িতে পা রাখা যাবে। তবে তড়িঘড়ি যাই থাকুক না কেন পছন্দের পোশাকটি বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সবাই সচেতন। দেখে শুনে বুঝে কালারফুল পোশাকটিই নিজের করে নিতে পারদর্শী সবাই। এদিকে সজাগ এবং চতুর তরুণরা। মার্কেট বা দোকান মালিকরাও পিছিয়ে নেই। তারাও চায় যে ছেলেরা যেন আমাদের ব্র্যান্ডের প্রতি দুর্বল থাকে। তাই প্রতিবারই তারা নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক হাজির বা কালারফুল শার্ট এবং বিভিন্ন ডিজাইনের টি শার্ট সমাহার ঘটায়। এই ঈদেও কি এর ব্যতিক্রম হবে? চলুন ঘুরে আসি তরুণদের জন্য কি ধরনের শার্ট এবং টি শার্টের আয়োজন চলছে। ফ্যাশন ডিজাইনার বাহার পাটোয়ারী নতুন ব্র্যান্ড আইডলের শো-রুম পরিপূর্ণ করেছেন। ৬০টি ডিজাইনের এবং ৩০টি রংয়ের শার্ট ঈদের জন্য বাজারে এনেছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে তরুণরা একেবারে ভিন্নতা চায়। তারা শর্ট শার্ট পরতে খুবই স্বাচ্ছন্দ্য পায়। মাঝে মধ্যে তাদের কি ধরনের পোশাক পছন্দ সেটা আমাদের কাছে বলে এবং আমরা সেভাবেই করার চেষ্টা করি। ঈদের কেনাকাটার আগে অবশ্য আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখা প্রয়োজন। আর শিশুদের পোশাক নির্বাচনের বেলায় এ বিষয়টি তো আরও জরুরী। ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। এই খুশি যেন ম্লান না হয়ে যায় সেদিকটা খেয়াল রাখাও জরুরী।
×