ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পরিপাটি অন্দরের সজ্জা

প্রকাশিত: ০৯:০২, ২৭ মে ২০১৯

  পরিপাটি অন্দরের সজ্জা

প্রস্তুতি নিতে হয় দিনকয়েক আগে থেকেই। ঘরজুড়ে উৎসবের রঙ ছোঁয়ানো বলে কথা! ঈদে ঘর সাজানোর জন্য নতুন আসবাব কিনতেই হবে, এমন নয়। ছোটখাটো পরিবর্তন করেও বদলে ফেলতে পারেন অন্দরের সাজ। কেবল সদর দরজা নয়, ঈদের দিন অন্দর থাকা চাই পরিপাটি। অতিথি আপ্যায়ন করা হয় ড্রইংরুমে। তাই এ ঘর ঘিরে একটু বাড়তি নজরদারি করতে হয়। রোজার ঈদে বদলে ফেলেছিলেন যে পর্দা, তা এবার পরিষ্কার করে ধুয়ে ইস্ত্রি করলেই দেখবেন ঘর কেমন ঝকঝকে। এতে করে উজ্জ্বল হবে পুরো ঘরের সাজসজ্জাই। আসবাবগুলো দীর্ঘদিন ধরে হয়তো একই স্থানে রয়েছে। সেগুলো জায়গা বদল করে রাখুন। বেশ পরিবর্তন আসবে ঘরে। কাঠের আসবাবের রঙ বিবর্ণ হয়ে গেলে পলিশ করিয়ে নিন। নতুনের মতোই চকচকে হয়ে উঠবে। এক ঘরের শোপিস আরেক ঘরে একটু অন্যভাবে সাজিয়ে নিতে পারেন। পরিবর্তনটা খারাপ লাগবে না। ঈদ উপলক্ষে বাড়তি কিছু যোগও করতে পারেন ঘরে। যেমন সাইড টেবিলে একটি সুদৃশ্য আতরদানি রাখা যায়। কিংবা লম্বা মোমদানি রাখতে পারেন। ঈদের দিন ফুল সাজিয়ে রাখার জন্য ক্রিস্টালের ফুলদানি কিনতে পারেন। মেঝেতে বিছানো শতরঞ্জি বা কার্পেটটি বদলে নতুন ডিজাইনের একটি বিছিয়ে দিন। পাশেই বসার ব্যবস্থা করে আরামদায়ক কিছু কুশন ছড়িয়ে দিন। একঘেয়েমি সাজ থেকে মুক্তি মিলবে কিছুটা হলেও। ঘরে মাটির পটারি থাকলে সেখানে নতুন রঙ লাগিয়ে ঝকঝকে করে তুলুন। চাইলে আইকা দিয়ে ছোট ছোট গ্লাস বসিয়ে সাধারণ পটারিকে উৎসবের আমেজ দিতে পারেন। সম্ভব হলে দেয়ালগুলোয়ও দিতে পারেন রঙের ছোঁয়া। দেয়ালে সুন্দর একটি পেইন্টিং টানিয়ে দিতে পারেন। আলো-আঁধারির মায়ায় সাজাতে চাইলে ঘরের কোণে রাখতে পারেন ল্যাম্পশেড। ঘর দেশীয় কায়দায় সাজানো হলে বাঁশ বা বেতের তৈরি ল্যাম্পশেড ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন ইনডোর প্লান্ট দিয়েও ঘরের সাজে নতুনত্ব নিয়ে আসা যায়। বসার ঘরে ক্যাকটাস কিংবা বনসাই রাখতে পারেন। দরজার বাইরে পাম ট্রি রাখা যেতে পারে। দেয়ালজুড়ে পাতাবাহারও রাখতে পারেন। ঈদের দিন ঘরের পরিবেশে থাকা চাই স্নিগ্ধ ও পবিত্রতা। মিষ্টি টুংটাং শব্দে অতিথিকে স্বাগত জানাতে দরজার সামনে ঝুলিয়ে নিন নজরকাড়া ডিজাইনের একটি উইন্ড চাইম। উপলক্ষটা যেহেতু উৎসবের, সেহেতু শোয়ার ঘরেও নিয়ে আসতে পারেন খানিকটা বিশেষত্ব। বিছানার চাদর ও পর্দা বদলে ফেলার পাশাপাশি পরিবর্তন করে নিতে পারেন দীর্ঘদিনের টেবিল ল্যাম্পটিও। এতে ভিন্নতা আসবে ঘরের সাজে। অগোছালো অবস্থায় থাকা টেবিল কিংবা বুকশেলফটিকে একটু যত্ন নিয়ে গুছিয়ে ফেলুন। ঘরের ফ্যান ও লাইটও মুছে নিন। ঝকঝকে শোয়ার ঘরটি স্বস্তি নিয়ে আসবে মনে। অতিথিদের খাবার পরিবেশন করতে হয় ডাইনিং রুমে। সেজন্য ঈদের দিন আকর্ষণীয়ভাবে খাবার রুম ও টেবিল সাজিয়ে তুলুন। টেবিল ক্লথটি পরিষ্কার করে ফেলুন সময় থাকতেই। চাইলে ক্লথের পাড়ঘেঁষে লেইস লাগিয়ে নিতে পারেন। তবে পুরনোটা বদলে নতুন একটি কিনে নিলেই ভালো করবেন। টেবিল ম্যাটগুলোও পরিবর্তন করে নেয়া যায়। পর্দা ও দেয়ালের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাছাই করুন টেবিল ক্লথ। কাঁটাচামচ, ছুরি, ন্যাপকিন, গ্লাসের ঢাকনি ইত্যাদি টেবিলের একপাশে সাজিয়ে রাখুন। এক কোণে রাখতে পারেন বেত বা বাঁশসুদৃশ্য ফলের ঝুড়ি। ট্রে, গোল বাটি, কাপ-পিরিচ, প্লেট সবকিছুই থাকা চাই নাগালের মধ্যে। টেবিলের মাঝখানে ছোট্ট একটি ফুলদানি রাখা যেতে পারে। চমৎকার একটি মোমদানিও খাবার টেবিলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে অনেকাংশে। অতিথিদের মুগ্ধ করার জন্য কারুকাজ করা পানদানি অথবা লবণদানি রাখতে পারেন। খাবার টেবিলকে আলোকিত করে পরিবেশে বিশেষত্ব নিয়ে আসতে উপরে ঝুলিয়ে দিন ল্যাম্পশেড। তাজা ফুল ছাড়া উৎসবের আয়োজন পূর্ণতা পায় না। তাই ঈদের আগের দিন থেকেই জোগাড় করে ফেলুন পছন্দমতো তাজা ফুল। সুরভিত হবে অন্দর আর হাজারো কাজের ভিড়ে উৎফুল্ল হয়ে উঠুক গৃহবাসীর মনও।
×