ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চাষীর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রতিবছর বেশি করে ধান কেনা হবে

প্রকাশিত: ০৯:৪৪, ২৭ মে ২০১৯

 চাষীর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রতিবছর বেশি করে ধান কেনা হবে

তপন বিশ্বাস ॥ কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রতিবছর বেশি করে ধান কিনবে সরকার। এই লক্ষ্যে সারাদেশে দুইশ’ প্যাডি সাইলো নির্মাণ করবে। এর ধারণ ক্ষমতা হবে ১০ লাখ মেট্রিক টন। আগামী বোরো মৌসুমের আগেই অন্তত একশ’টি সাইলো নির্মাণ সম্পন্ন হবে বলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জনকণ্ঠকে জানান। এছাড়া সরকারী উদ্যোগে পাঁচটি অটোরাইস মিল নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে যাতে সরাসরি ধান কেনা হয় তা তদারকির জন্য কুড়িটি মনিটরিং টিম কাজ করছে। কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তারা বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করবে। তিনি বলেন, সারাদেশে ৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার দুইশ ‘প্যাডি সাইলো’ নির্মাণের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে হাতে নেয়া হয়েছে। সরকার ১৪ শতাংশ আর্দ্রতাসম্পন্ন ধান কিনছে। যে কারণে অনেক কৃষককে বাধ্য হয়ে চাতাল মালিকদের কাছে কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। প্যাডি সাইলো নির্মাণ করা হলে কৃষক সেখানে নিজের ধান শুকিয়ে বিক্রি করতে পারবে। আগামী এক মাসের মধ্যে এ প্রকল্পের জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করা হবে। এদিকে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা দেড় লাখ টনের বেশি ধান কেনার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এছাড়া সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার সুপারিশ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বৈঠকশেষে কমিটি সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এবার ধানের উৎপাদন বেশি হয়েছে। আমরা এজন্য সরকারকে বলেছি, দেড় লাখ টন ধান কেনার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তার চেয়ে যেন বেশি কেনা হয়। ভর্তুকি দিয়ে হলেও কমিটি চাল রফতানির সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া কমিটি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে বলেছে, যাতে মধ্যস্বত্বভোগীরা কোন সুযোগ না পায়। যে কারণে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। দেড় লাখ মেট্রিক টন ধান কেনা সম্পন্ন হলে গোডাউনে রাখার সংকুলান থাকলে আরও কেনা হবে। কিন্তু আমাদের ধান রাখার মতো গুদাম নেই। চাল ও ধান একই গুদামের রাখা সম্ভব নয়। যে কারণে আমরা প্যাডি সাইলো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হাওড়সহ ধান উৎপাদনের ভিত্তিতে সারাদেশে মোট দুইশ’ প্যাডি সাইলো নির্মাণ করা হবে। এর প্রতিটির ধারণ ক্ষমতা হবে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে প্যাডি সাইলো নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই এটি একনেকে পাঠানো হবে। একনেকে অনুমোদিত হলে টেন্ডারের মধ্যেমে দ্রুত এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, আশা করি আগামী ইরি-বোরো মৌসুমের মধ্যে অন্তত একশ’ সাইলো নির্মাণ করা সম্ভব হবে। বর্তমানে চালের ধারণক্ষমতা রয়েছে ২১ লাখ মেট্রিক টন। এই দুইশ’ প্যাডি সাইলো নির্মাণ সম্পন্ন হলে ধারণক্ষমতা আরও দশ লাখ মেট্রিক টন বেড়ে যাবে। দেশে তখন মোট ধারণক্ষমতা হবে ৩১ লাখ মেট্রিক টন।
×