ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৌদির কনিষ্ঠতম রাষ্ট্রদোহীর ১৮ বছর হলেই মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ২২:৩২, ১০ জুন ২০১৯

সৌদির কনিষ্ঠতম রাষ্ট্রদোহীর ১৮ বছর হলেই মৃত্যুদণ্ড

অনলাইন ডেস্ক ॥ আরব বসন্তের সময় সরকার বিরোধী মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন ১০ বছর বয়সী মুর্তাজা কুরেইরিস। ২০১১ সালে সৌদি আরবে প্রবল গণ-আন্দোলন হয়। তখন সরকার বিরোধী সাইকেল মিছিলে অংশ নেন মুর্তাজা। এজন্য রাজতন্ত্র বিরোধী হিসেবে তাকে গ্রেফতার করে সৌদির পুলিশ। তবে নাবালক হওয়ায় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারছিল না সৌদি সরকার। কিন্তু আর কিছুদিন পর ১৮ বছর পূর্ণ হলে মুর্তাজার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ তথ্য জানিয়েছে। খবরে সৌদি রাজতন্ত্র পরিচালিত নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মুর্তাজা কুরেইরিস ও তার বন্ধুরা সাইকেল মিছিল করেছিল। দেশের পূর্ব প্রান্তে সেই মিছিল করার সময় সরকারের নজরে আসে তার গতিবিধি। তারপর থেকেই মুর্তাজার নাম ছিল পুলিশের খাতায়। তিন বছর এমন পর্যবেক্ষণ চলে। এরই মাঝে ১৩ বছর বয়স হলে গোপনে সৌদি আরব থেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাহরাইনে পালিয়ে যাওয়ার সময় পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে ধরা পড়ে মুর্তাজা। সৌদি আরবের ইতিহাসে সবচেয়ে কনিষ্ঠতম রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে মুর্তাজাকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলখানায়। এরপর শুরু হয় বিচার। নাবালক হিসেবে সৌদি সরকার কোনোভাবেই এই বিদ্রোহীকে চরম শাস্তি দিতে পারেনি। অগত্যা জেলে রেখেই তার সাবালক হওয়ার অপেক্ষা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, চার বছর জেলে রয়েছে মুর্তাজা। সদ্য ১৮ বছরে পা রাখতে চলেছে সে। এরপরই তাকে চরম রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। সেই লক্ষ্যেই সরকার আইনি পদক্ষেপ শুরু করেছে। মুর্তাজার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে- তার একটি হলো সরাসরি নাশকতায় মদদ দেয়া। পুলিশের দাবি, মুর্তাজার বড় ভাই আলি কুরেইরিস আওয়ামিয়া শহরের থানায় পেট্রোল বোমা ছুঁড়েছিলেন। সেই সময় তার সঙ্গে ছিল মুর্তাজা। ওই ঘটনার পর আলিকে মেরে ফেলা হয়। এখন চরম শাস্তির অপেক্ষায় মুর্তাজা। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সব অভিযোগ প্রমাণ করতে মরিয়া সরকার। সরকারের দাবি, জেরায় সব স্বীকার করেছে মুর্তাজা। যদিও মুর্তাজার পরিবারের অভিযোগ, প্রবল অত্যাচার চালিয়ে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। বিচারের নামে প্রহসন চালানো হয়েছে। মুর্তাজার কি ফাঁসি হবে? নাকি তার শিরচ্ছেদ করা হবে প্রকাশ্যে? ভয়ঙ্কর সেই শাস্তির পদ্ধতি নিয়ে চলছে জল্পনা। ততই বাড়ছে উদ্বেগ। আর এ নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হতে শুরু করেছে।
×