ওরা কিছু দুঃসাহসী তরুণ, অদম্য প্রাণশক্তি নিয়ে বদলে দিতে চাইছে আমাদের পরিচিত পৃথিবী। সবারই বয়স ত্রিশের নিচে, এ বয়সেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাফল্য ছুঁয়ে তারা এখন প্রস্তুত আরও বড় লড়াইয়ের জন্য। তাদের এই লড়াই কতটা বদলে দেবে আমাদের জীবন সে উত্তর থাকুক সময়ের হাতে, আপাতত আমরা জেনে নেই এমন কিছু তরুণের গল্প। ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্ব,
লিখেছেন- পপি দেবী থাপা
আন্না চিফ (২৯) ডায়ালগ
আন্না চিফ ডায়ালগের বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ডায়লগ একটি টেলিমেডিসিন সেবা যোগানদাতা প্রতিষ্ঠান। যেটির প্রতিষ্ঠা ২০১৬ সালে। প্রতিষ্ঠার দু’বছরের মধ্যেই কানাডাজুড়ে এ ধরনের সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। বর্তমানে দেশে ও দেশের বাইরে ১৫০টিরও বেশি কোম্পানি সেবা নিচ্ছে ডায়ালগের। এটি এমন একটি প্লাটফর্ম যেখান থেকে গ্রাহক কোম্পানির কর্মচারীরা ভিডিও চ্যাটের মাধ্যমে চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোন বিষয়ে দেশসেরা ডাক্তার নার্সদের সেবা নিতে পারেন।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এখন পর্যন্ত ডায়ালগ পুঁজি সংগ্রহ করেছে ১৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে ডায়াগ্রাম, হোয়াট স্টার ক্যাপিটাল হোল্টজব্রিঙ্ক ভেনচার এবং পোর্টাগ ৩ এর মতো প্রতিষ্ঠান। টেকনলজি খাতে তাদের বলা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল কোম্পানি। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিষয়ে স্নাতক আন্না চিফ ডায়লগ প্রতিষ্ঠার আগে ম্যাকেঞ্জিতে কাজ করেছেন কিছুদিন। ডায়ালগ প্রতিষ্ঠার ধারণাটি তার মাথায় আসে মৃত্যুশয্যায় শায়িত দাদির সেবা করতে গিয়ে। ডাক্তাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে পরামর্শ গ্রহণের ঝক্কি এড়াতে তার মাথায় ডানা মেলে ডায়ালগের ধারণা।
নিকলাস কর্টেজ (২৯) অটরিয়াম
উন্নত দেশগুলোতে প্রয়োজনীয় আইনী সেবা গ্রহণ যখন বিশাল ব্যয়ের ধাক্কা তখন তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে অটরিয়াম। শুরুতেই এই ল’ফার্মটি অন্য ফার্মগুলোর মতো ঘণ্টা হিসেবে উকিল নিয়োগের জন্য ফি ধার্য করে না। আপনি চাইলে মাত্র ৫শ’ ডলারে তাদের সেবা গ্রহীতার তালিকায় নাম লেখাতে পারবেন। অটরিয়ামে সহজ এবং স্বল্প ব্যয়ে আইনী সেবা গ্রহণের মূল টার্গেট কিন্তু সদ্য প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলো। প্রাথমিক আইনী বিষয়গুলো সম্পন্নের জন্য অটরিয়াম তাদের নিজস্ব প্রস্তুতকৃত সফটওয়ার ব্যবহার করে থাকে। যে সফটওয়ারের মাধ্যমে কারও সাহায্য ছাড়াই অফার লেটার বা টার্ম শিট প্রস্তুত করার মতো কাজগুলো খুব সহজেই করা সম্ভব। কর্টেজ অটরিয়াম প্রতিষ্ঠা করেন ই- স্পোটর্স স্ট্রিমিং সার্ভিস টুইচের জাস্টিন ক্যান এবং আইনজীবী অগী রাকোকে নিয়ে। মজার ব্যাপার হলো কর্টেজ নিজে কিন্তু আইনজীবী নন। কিন্তু আইনী খরচের এই বিশাল ধাক্কাটির বিষয় তার নজরে আসে যখন তিনি জাস্টিন ক্যানের হয়ে এনজেল ইনভেস্টমেন্টের বিষয়টি দেখাশোনা করছিলেন। সেখান থেকে তার মাথায় আসে কম খরচে আইনী সেবা প্রদানের ধারণাটি। আর আজ তার প্রতিষ্ঠিত অটরিয়াম দুই দফায় ৭৫.৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ লাভ করেছে জেনারেল ক্যাটালিস্ট এবং এন্ড্রিসিন হরউইচের মতো জায়েন্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। বলা হচ্ছে অটরিয়াম আমূল বদলে দেবে আইনী সেবার খোলনলচে।