ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল ভার্সিটি ভিসির কক্ষ ভাংচুরে মামলা

প্রকাশিত: ১০:০৮, ১৩ জুন ২০১৯

 বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল ভার্সিটি ভিসির কক্ষ ভাংচুরে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অফিস ভাংচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে শাহবাগ মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় কয়েকজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা অন্তত ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার আসামি হিসেবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তার পর্যালোচনা করছে। হামলাকারীদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। নিয়োগ নিয়ে সৃষ্ট ঝামেলা এড়াতে করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ মার্চ বিএসএমএমইউতে দুই শ’ চিকিৎসক নিয়োগ পরীক্ষার ফল মে মাসে প্রকাশিত হয়। ১৮০ মেডিক্যাল অফিসার ও ২০ ডেন্টাল চিকিৎসক পদে ২শ’ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ চিকিৎসক অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষায় একটি পদের বিপরীতে ৪ জন করে পাস করেন। ওই হিসেবে ৭১৯ মেডিক্যাল অফিসার ও ডেন্টাল বিভাগের ৮১ জন মিলে মোট ৮২০ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১০ জুন সোমবার থেকে উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। নিয়োগ নিয়ে এর আগেও অগ্নিসংযোগ, বোমা হামলাসহ নানা হাঙ্গামা হওয়ার প্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা শুরুর বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ দেন। প্রথমদিন শান্তিপূর্ণভাবেই মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়। বুধবার বেলা এগারোটার দিকে প্রথম দফা মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়। দ্বিতীয় দফা শুরুর পরেই দুপুর একটার দিকে শুরু হয় ঝামেলা। শুরু হয় আন্দোলন। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ভাংচুরের পর্যায়ে চলে যায়। আন্দোলনকারীরা ভিসির কক্ষে ঢোকার চেষ্টা করেন। পুলিশ বাধা দিলে আন্দোলনকারীরা ভিসি অফিস ভাংচুর করে। এমন পরিস্থিতিতে মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। শাহবাগ মডেল থানার ওসি আবুল হাসান জনকণ্ঠকে জানান, মঙ্গলবার রাতে প্রক্টর অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ বাদী হয়ে শাহবাগ মডেল থানায় ভিসি অফিসে ভাংচুরের ঘটনায় নাশকতার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত হিসেবে ৪০ থেকে ৫০ আন্দোলনকারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, যারা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে পরীক্ষা বাতিল চাচ্ছিলেন, তারাই ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থল ও তার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে ভাংচুরে জড়িতদের শনাক্তের কাজ চলছে। তবে বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কেউ আটক হয়নি। এদিকে আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করেছেন। নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা না হলে আবার আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। আন্দোলনকারীরা ভিসির পদত্যাগও দাবি করেন। তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ নিয়ে জটিলতার সূত্র ধরে গত ৩ জুন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কাগজে পরপর দুবার আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে। এর একদিন পর গভীর রাতে আবারও রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে দুটি পেট্রোলবোমা ছোড়ার ঘটনা ঘটে। একটি বিস্ফোরিত হলেও অপরটি অবিস্ফোরিত থাকে। যে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়েছে, সেটি অতটা শক্তিশালী ছিল না। যদিও বোমা বিস্ফোরণের পর সেখানে আগুন লেগেছিল। শাহবাগ থানা পুলিশ বোমাটি উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করে। ওই ঘটনায় গত ৭ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন করেন, হাসপাতালটি নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঘেরা। সেখানে পেট্রোলবোমা কিভাবে গেল? এটি একটি নীলনক্সা। এর পেছনে ওপর মহলের পৃষ্ঠপোষকতা আছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ওই হাসপাতালের কেবিন ব্লকে চিকিৎসাধীন। নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করেন তিনি। হাসপাতালে বোমা ঢোকার পেছনে একটি বড় রকমের মাস্টারপ্ল্যান আছে। সরকার কি উদ্দেশে এমন মাস্টারপ্ল্যান করেছে সেটা বলা মুশকিল বলেও দাবি করেন রিজভী। বোমা উদ্ধারের ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা হয়।
×