ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অবকাঠামো খাতে প্রায় সাড়ে ৬১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ১৩ জুন ২০১৯

 অবকাঠামো খাতে প্রায় সাড়ে ৬১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ৬১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। এ খাতে গত অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৫৩ হাজার ৮১ কোটি টাকা। যোগাযোগ খাতের মধ্যে সড়ক বিভাগে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। যোগাযোগ খাতের টেকসই ও নিরাপদ সড়ক মহাসড়ক উন্নয়ন, সেতু টানেল নির্মাণ ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন, সমন্বিত ও আধুনিক নগর পরিবহন ব্যবস্থা, আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা, রেলপথ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বাণিজ্য সহায়ক নৌপথ ও বন্দর উন্নয়ন, বিমানবন্দর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ খাতে প্রায় সাড়ে ৬১ হাজার কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়। যোগাযোগ অবকাঠামো ॥ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখা ও উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে আধুনিক, নিরাপদ এবং পরিবেশ বান্ধব পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূণথ। ডড়ৎষফ ঊপড়হড়সরপ ঋড়ৎঁস এর ঞযব এষড়নধষ ৪০ ঈড়সঢ়বঃরাবহবংং ওহফবী, ২০১৮ র্যাংকিং অনুযায়ি ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩০ তম স্থানে। বাংলাদেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জে নর অগ্রযাত্রায় যোগাযোগ অবকাঠামো ক্ষেত্রে বিপুল বিণিয়োগ করা অত্যন্ত জরুরী। এ লক্ষে সরকার যোগাযোগ অবকাঠামো বিশেষ করে রেলপথকে অন্যতম অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচনা করে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। টেকসই ও নিরাপদ সড়ক-মহাসড়ক উন্নয়ন ১১৬। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশে রুপান্তরের লক্ষ্যে সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কার, নতুন সড়ক নির্মাণ, উড়াল সেতু, ওভারপাস নির্মাণ, সেতু/কালাভার্ট নির্মাণ ইত্যাদি জনগুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়নের লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সকল জাতীয় মহাসড়ককে চার বা তার চেয়ে বেশি লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ৫০৯ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চার বা তার চেয়ে বেশি লেনে উন্নীত করা হয়েছে। আরো ৫০৭ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেন বা তারচেয়ে বেশি লেনে নির্মাণ কাজ চলমান। সরু ও ক্ষতিগ্রস্থ সেতু ও কালভার্ট পুননির্মাণ করা হচ্ছে। জোনভিত্তিক জেলা মহাসড়ক সংস্কার, উন্নয়ন ও মেরামত কাজ চলমান আছে। বিশ্বায়নের সুফল অর্জন ও বাজার অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হওয়ার লক্ষে সাসেক রোড কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-১ ও ২ বাস্তবায়ন হচ্ছে। সারাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী ব্রিজসমূহের স্থলে কংক্রিট সেতু নির্মাণ করা হবে। সেতু-টানেল নির্মাণ ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন সমন্বিত ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপনে পদ্মা বহুমুখী সেতু, কর্ণফুলি নদীর তলদেশে টানেল এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালি পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ সহ আরো বৃহত প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর দুই কিলোমিটার আজ দৃশ্যমান। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৭ ভাগ। দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। সমন্বিত আধুনিক নগর পরিবহণ ব্যবস্থা রাজধানীর অভ্যন্তরীণ সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, প্রবেশ ও নির্গমন মহাসড়কের যানজট নিরসন সহ ঢাকা-পাশর্^বর্তী এলাকার জন্য পরিকল্পিত ও সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা জবারংবফ ঝঃৎধঃবমরপ ঞৎধহংঢ়ড়ৎঃ চষধহ (২০১৫-৩৫) বাস্তবায়ন করছি। এর আওতায় দেশের প্রথম মেট্রোরেল, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। পাশাপাশি বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত গণপরিবহন ব্যবস্থা, বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর সড়ক পরিবহন ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় মহাসড়কের ১২১টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান চিহ্নিত করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং আট হাজার ১০০ স্পটে ডাইরেকশনাল সাইন সিগন্যাল ও কিলোমিটার পোস্ট স্থাপন করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এছাড়া ধীরগতির যানবাহনের জন্য জাতীয় মহাসড়কে পৃথক লেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা বৃদ্ধি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দক্ষ গাড়ি চালক তৈরীর কার্যক্রম অব্যাহত আছে। গণসচেতনতা মূলক কার্যক্রম চলমান। মোটরযানের ডিজিটাল ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানের লক্ষ্যে ঢাকা, চট্টগ্রা,-রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে চারটি স্বয়ংক্রিয় যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৭ জেলায় যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন করার কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। মেঘনা সেতুতে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে টোল আদায় চালু হয়েছে।
×