ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বৈষম্যের সিন্দাবাদের দৈত্য চেঁপেই রইল জাতির ঘাড়ে

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ১৪ জুন ২০১৯

বৈষম্যের সিন্দাবাদের দৈত্য চেঁপেই রইল জাতির ঘাড়ে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ “সমৃদ্ধির পথ চলায় বৈষম্যের যে সিন্দাবাদের দৈত্য জাতির ঘাড়ে চেপে বসে আছে তা থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় বাজেটে নেই। বরং মধ্যবিত্তকে চাপে রেখে ধনীদের প্রতি পক্ষপতিত্ব দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। স্মার্ট ফোন আর ফিচার ফোনের মধ্যে শুল্ক কার্যকীকরণ করে তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও ডিজিটাল ডিভাইজকে আরও রাঙিয়ে তুললেন তিনি। পোশাক শিল্পের মালিকদের জন্য প্রণোদনা বাড়লেও পোশাক শিল্প শ্রমিকরাই সেই তিমিরেই রইলেন। আর যে কৃষক ধানসহ তার উৎপাদিত ফসলের দাম না পেয়ে তাদের পণ্যমূল্য সহায়তারও কোন ব্যবস্থা নেই বাজেটে। বাংলাদেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধির পিছনে যারা মূল শক্তি সেই কৃষক, শ্রমিক, নারী উদ্যোক্তা অবহেলিতই রইলেন এই বাজেটে। শুক্রবার বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন ১৪ দলের অন্যতম শরিক ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। মেনন বলেন, ঋণ খেলাপীদের বিশষে ছাড় দিয়ে জারি করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের প্রতিবাদ করেছিলাম। হাইকোর্ট সেই প্রজ্ঞাপন আটকে দেয়ায় তা এখনও কার্যকর হয়নি। কিন্তু ঐব্যবস্থার ঘোষণার পরিণতিতেই গত এক মাসে ঐ ঋণ খেলাপের পরিমাণ ১৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে একলক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে- যা বাজেটের পরিমাণের এক পঞ্চমাংশ। অর্থমন্ত্রী ইচ্ছাকৃত খেলাপীদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থার কথা বলছেন। ব্যাংক খাতের সংস্কারের কথাও বলেছেন। কিন্তু সবই ভবিষ্যত বাচক, বর্তমান এখনও ব্যাংক লুটেরাও খেলাপীদের হাতেই বন্দী। দেশের অর্থনীতিক বৈষম্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মেনন বলেন, “কেবল আয় বৈষম্যই নয়, আঞ্চলিক বৈষম্য, গ্রাম-শহরের বৈষম্য অর্থনীতির ভারসাম্যতা নষ্ট করছে। বাংলাদেশের সম্পদ এখন কেন্দ্রীয়ভূত মুষ্টিমেয় ধনীর হাতে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানের বাইশ পরিবারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল এদেশের মানুষ। এখন এদেশে ‘সুপার ধনী’-দের সংখ্যা আরও কম। তারাই ক্ষমতার চার পাশে বলয় তৈরী করে রেখেছে। বঙ্গবন্ধু সে ‘শোষিতের গণতন্ত্র’- এর কথা বলতেন। অর্থনীতির বর্তমান উদারবাদী ধারা তাকে কোন পরিণতি দেবে ২০২১ সালের সুবর্ণজয়ন্তীতে এই বাজেট পাঠে তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়না। রাশেদ খান মেনন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা-কর্মীদের জনজীবনের প্রতিটি ইস্যুতে জনগণকে আন্দোলন ও সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে মেনন বলেন, দেশের অর্থনীতি ও দেশকে রাহুমুক্ত করতে স্বাধীনতার ঘোষণারপত্রের সাম্য, মানবিক মর্যাদাবোধ ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করার বিষয়টিকে বিশেষভাবে তুলে ধরতে হবে।
×