ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচের মাঠে খেলেছিলেন ডালিয়া-ও!

প্রকাশিত: ১০:০৫, ১৪ জুন ২০১৯

বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচের মাঠে খেলেছিলেন ডালিয়া-ও!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ডালিয়া ফুলের আদি বাসস্থান মেক্সিকোতে। এটি একটি বিখ্যাত শীতকালীন ফুল। চমৎকার সৌরভ ছড়ায়। বাংলাদেশেও ডালিয়া আছে। তবে ফুল নয়। খেলোয়াড় ডালিয়া। পুরোনাম ডালিয়া আক্তার। শীতকালে ডালিয়া ফুলের জন্ম হলেও বাংলাদেশের ডালিয়ার জন্ম গরমকালে, ২ জুন, ১৯৮২ সালে। একটুকুই যা পার্থক্য, ফুলের মতো খেলোয়াড় ডালিয়াও তার উদ্ভাসিত নৈপুণ্যের সুবাস ছড়িয়ে আসছেন বহু বছর ধরে, ছড়াচ্ছেন এখনও। সেটা এখন আবার খেলোয়াড়ের পাশাপাশি কোচ হিসেবেও। পাঠক প্রশ্ন করতে পারেন, ডালিয়া আসলে কোন্ খেলার খেলোয়াড়? এটা এক কথায় বলা খুবই মুশকিল। অনেক খেলাই খেলেছেন তিনি। শুরুটা তার সাঁতার দিয়ে। ১৯৯৫ সালে জাতীয় শিশু সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েই ক্রীড়াঙ্গনে পথচলা আরম্ভ। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে এ্যাথলেটিক্স, হ্যান্ডবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন খেলেছেন। এরপর ফুটবল। চোট পাওয়ায় সেটা ছেড়ে শেষ পর্যন্ত থিতু হন হ্যান্ডবলেই। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল ও জাতীয় হ্যান্ডবল দলে অধিনায়কত্ব করার বিরল কীর্তিও আছে তার। এই দুটি খেলা দিয়েই সবচেয়ে বেশি খ্যাতি কুড়িয়েছেন বাবা-মায়ের সাত সন্তানের মধ্যে পঞ্চম ডালিয়া। চলমান আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে জনকন্ঠ শুক্রবার ডালিয়ার সাক্ষাতকার নিতে গিয়ে তার খেলোয়াড়ী আরেকটি অজানা অধ্যায়ের সন্ধান পেয়েছে। তিনি ক্রিকেটারও ছিলেন! এ প্রসঙ্গে জার্মানিতে হ্যান্ডবলের ওপর ডিপ্লোমা কোচেস কোর্স করা ডালিয়া বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি অল্পবিস্তর ক্রিকেটও খেলেছি। এটা অনেকেই জানে না। তবে যে সময় খেলেছি, তখন বাংলাদেশে মেয়েদের জাতীয় দলই ছিল না। চর্চাও হতো খুবই কম। ২০০০ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যেদিন বাংলাদেশ তাদের অভিষেক টেস্ট খেলে ভারতের বিরুদ্ধে, সেদিন আমিও খেলেছিলাম।’ কিভাবে? একগাল হেসে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ফুটবল ও হ্যান্ডবল দলের সাবেক অধিনায়ক ডালিয়া বলেন, ‘ওই ম্যাচে প্রথম যখন টি-ব্রেক হয়, তখন মাঠে আবাহনী ও বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থা এই দুটি মহিলা দলের মধ্যে একটি সিক্স-এ-সাইড ম্যাচ হয়েছিল। আমার অধিনায়কত্বে আমার দল আবাহনীকে হারিয়েছিল। বিপক্ষ দলের ক্যাপ্টেন তাজকিয়াকে নিজের প্রথম বলেই (ফাস্ট বোলার ছিলাম) কট এ্যান্ড বোল্ড করেছিলাম। স্কুলে পড়ার সময় ক্লাস টেন পর্যন্ত ক্রিকেট খেলেছি।’ ডালিয়া ২০০৬-২০১০ পর্যন্ত জাতীয় নারী ফুটবল এবং ২০০১-২০০৯ পর্যন্ত জাতীয় নারী হ্যান্ডবল দলের অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৯৯ সালে বিজেএমসি হ্যান্ডবল দলে যোগ দিয়ে (ওইবারই টানা ১১ বার রানার্সআপ বিজেএমসি প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয়। আসরে সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ডালিয়ারই) এখনও ওই দলেই আছেন। ২০১৭ সালে জাতীয় মহিলা হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারধারীও তিনি। বিজেএমসির মেয়েদের ফুটবল দলটি গড়ে ওঠেছে তার হাতেই। বাংলাদেশের পুরুষ হ্যান্ডবলের ইতিহাসে প্রথম মহিলা কোচও তিনি (২০১৮ সালে জাতীয় পুরুষ হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতার ছিলেন ঢাকা জেলা দলের কোচ, মাদারীপুর জেলা পুরুষ দলেরও কোচিং করিয়েছেন)। ঢাকার সাউথ ব্রিজ স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষিকা ডালিয়া গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে আবুধাবীতে অনুষ্ঠিত স্পেশার অলিম্পিক গেমসে মহিলা হ্যান্ডবল বিভাগে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন।
×