ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গলাচিপায় নববধূ সুখী হত্যার রহস্য ৮ দিনেও মেলেনি

প্রকাশিত: ০৭:১২, ১৫ জুন ২০১৯

গলাচিপায় নববধূ সুখী হত্যার রহস্য ৮ দিনেও মেলেনি

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর গলাচিপায় চাঞ্চল্যকর নববধূ সুখী হত্যা রহস্য ৮ দিনেও উদঘাটন হয়নি। যদিও পুলিশ ঘটনার পর থেকেই সুখীর স্বামী ফিরোজ মোল্লাকে আটক রেখে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সর্বশেষ ফিরোজকে গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ আদালতে রিমান্ডের আবেদন করেছে। কিন্তু এরপরেও স্বামীর কাছ থেকে এ হত্যা সম্পর্কে কোন তথ্য মেলেনি। পুলিশ এখন সুখীর প্রেমসহ প্রধানত তিনটি বিষয় সামনে রেখে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। পুলিশ আশা করছে অচিরেই এ হত্যা রহস্যের উন্মোচন হবে। সুখী হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে গত ৯ জুন রবিবার রাতে। স্বামীর বিছানা থেকে রহস্যজনক ভাবে এদিন রাতে সুখী (১৮) নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ৩৬ ঘন্টা পর মঙ্গলবার ১১ জুন দুপুরে সুখীর লাশের সন্ধান মেলে। সুরতহাল রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, সুখী বেগমকে অত্যন্ত নির্মম ভাবে গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় এবং লাশ বাড়ি সংলগ্ন খালের কচুরিপানার স্তুপের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা হয়। ঘটনার মাত্র তিন মাস আগে ডাকুয়া ইউনিয়নের পাড়ডাকুয়া গ্রামের জাকির হাওলাদারের মেয়ে সুখী বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ফুলখালী গ্রামের শামসু মোল্লার ছেলে ফিরোজ মোল্লার বিয়ে হয়। ঘটনার তিনদিন আগে ৭ জুন শুক্রবার সুখী প্রথমবারের মতো স্বামীর বাড়ি যায় এবং রবিবার স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি ফেরত নাইওর আসে। এদিন রাতেই সুখী খুন হয়। লাশ উদ্ধারের পর এ হত্যাকান্ডে সন্দেহভাজন হিসেবে সুখীর স্বামী ফিরোজ মোল্লাকে আসামি করে ১৪ জুন শুক্রবার রাতে নিহতের ভাই রাশেদ হাওলাদার বাদি হয়ে থানায় দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ ফিরোজ মোল্লাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে এবং সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে। যদিও লাশ উদ্ধারের পর থেকেই পুলিশ নিহত সুখীর স্বামীকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু হত্যা রহস্যের কোন কিনারা হয়নি। গলাচিপা থানা সূত্রে জানা গেছে, নববধূ সুখী হত্যা রহস্য উন্মোচনে পুলিশ প্রধানত তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। প্রথমত সুখীর সাথে পূর্বেকার প্রেমের সম্পর্ক। দ্বিতীয়ত-পারিবারিক বিরোধ এবং ঘটনাটি আপনজন কেউ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে কিনা। গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ আখতার মোর্শেদ জানান, বিভিন্ন দিক অনুসন্ধান করার পর সন্দেহের তীর বার বার স্বামী ফিরোজ মোল্লার দিকেই যাচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, ফিরোজ আটক হওয়ার পর থেকে সে পুলিশকে এলোমেলো তথ্য দিয়ে আসছে। এছাড়া, সুখীর সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র কিছুই খোয়া যায়নি। এতে করে আপনজনের দিকেও সন্দেহের তীর গাঢ় হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে রহস্য উদঘাটনে সহজ হবে। সন্দেহের তালিকায় অন্য কেউ রয়েছে কিনা তদন্তের স্বার্থে তিনি তা প্রকাশ করতে চাননি। এদিকে, এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নিহতের সঙ্গে এলাকার এক যুবকের দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ঘটনার পর থেকে ওই যুবকসহ পুরো পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। পুলিশ এ বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে।
×