ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কোচিং সেন্টারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃতি, আটক ৩

প্রকাশিত: ০৭:২০, ১৫ জুন ২০১৯

কোচিং সেন্টারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃতি, আটক ৩

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির অভিযোগে ময়মনসিংহের সানরাইজ কোচিং সেন্টার শনিবার বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। ছবি বিকৃতির ঘটনায় দায়ী কোচিং সেন্টার পরিচালকের ভাই ও দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। বিশেষ সুবিধা নেয়ার ধান্দায় অভিনব কৌশলে কোচিং সেন্টারের ব্যানার পোস্টারে জাতির জনক ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি জুড়ে দেয়ার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ জানায়, নগরীর রামবাবু রোডের সানরাইজ কোচিং সেন্টার কর্তৃপক্ষ তাদের সাইনবোর্ডে ব্যবহার করা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতি করে জনসমক্ষে ব্যবহার করে আসছিল। দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহ শহরে কোচিং সেন্টারগুলো এ ধরনের অপরাধ করে আসলেও প্রশাসনের ভূমিকা ছিল নিরব। অভিযোগ আছে বিএনপি পন্থী এমনকি শিবিরের কোচিং সেন্টারগুলো অপরাধ করে আসলেও প্রশাসনের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। বিষয়টি নেত্রকোণা জেলা ছাত্রলীগ কর্মী আনিসুজ্জামান রনীর নজরে এলে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এক পোষ্ট দিয়ে ময়মনসিংহ পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। কিন্তু তারপরও ময়মনসিংহ পুলিশ সাড়া দেয়নি। পরবর্তীতে নেত্রকোনার ছাত্রলীগ কর্মীরা বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসকে অবহিত করেন। মোবাইল ফোনে শনিবার সনজিত চন্দ্র দাস বিষয়টি ময়মনসিংহের পুলিশ সুপারসহ প্রধানমন্ত্রী দপ্তরকে অবহিত করার পর টনক নড়ে ময়মনসিংহ পুলিশ প্রশাসনের। একই সঙ্গে ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘শক্ত বিচার হওয়া উচিৎ, জাতির পিতা ও নেত্রীর ছবিচ এভাবে ব্যবহার করার (এটা ব্যবসা করার পন্য না) ধৃষ্ঠতা দেখিয়ে কেউ পার পাবেনা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামরা করছি। নেত্রী, জাতির পিতার প্রশ্নে কোন্ ছাড় হবেনা।’ সঞ্জিৎ চন্দ্র দাশ তার ফেসবুক পোস্টটি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ সরকারের আরো গুরুত্বপূর্ন ছয় জনকে ‘ট্যাগ’ করেন। পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের এ ফেসবৃক পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরায় হয়ে যায়। এছাড়া সানরাইজ কোচিং সেন্টারের এ ধরনের অপকৌশলের বিষয়টি সঞ্জিত আওয়ামী লীগের শীর্ষ বেশ কয়েকজন নেতাকেও টেলিফোনে অবহিত করেন। তার এ পোস্টের পর ছাত্র লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে জেলা পর্যায় পর্যন্ত ব্যাপক প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়। তার ফেসবুকে কয়েকশ কমেন্টস পরে। এর মধ্যে নেত্রকোণা জেলা ছাত্রলীগ কর্মী আনিসুজ্জামান রনী কমেন্টসে লেখেন, ‘সানরাইজ কোচিং সেন্টারের মালিকপক্ষ এবং যে প্রেস থেকে এ পোস্টারগুলো ছাপানো হয়েছে তাদের কিভাবে সাহস হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশরত্ম শেখ হাসিনার ছবি পেছনে রেখে তাদের কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন ছাপানোর এবং সেই পোস্টার দেয়ালে লাগানোর দৃঃসাহস তারা কোথায় পায়। আমার জানতে ইচ্ছে করে। ময়মানসিংহ জেলা ছাত্রলীগ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের যে সকল নেতৃবৃন্দ আমার ফ্রেন্ডলিস্টে আছেন তাদের সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি’। এমন অবস্থায় শনিবার দুপুরে কোতেয়ালি মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মনসুরের নেতৃত্বে পুলিশ নগরীর রামবাবু রোডের সানরাইজ কোচিং সেন্টারে এক অভিযান চালায়। অভিযানেব ঘটনার সত্যতা পেয়ে কোচিং সেন্টার বন্ধসহ এর পরিচালকের বড় ভাই ও কোচিং সেন্টারের দুই শিক্ষককে আটক করে। পুলিশ হেফাজতে এদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ওসি অপারেশন জানান, আটককৃত তিনজনসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে।
×