ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ই-কমার্স কেনাকাটায় সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট আরোপ

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ১৬ জুন ২০১৯

 ই-কমার্স কেনাকাটায় সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট আরোপ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অনলাইন ব্যবসায় তথা ই-কমার্স থেকে ভ্যাট অব্যাহতি তুলে নেয়া হয়েছে। এখন থেকে ই-কমার্স কেনাকাটায় সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট (মূল সংযোজন কর) দিতে হবে। গত ১৩ জুন অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় সোশ্যাল মিডিয়া ও ভার্চুয়াল বিজনেসে ই-কমার্সকে অন্তর্ভুক্ত করে এই ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘এটা একটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। যখন এই খাত বিকাশের পথে, তখনই এ ধরনের সিদ্ধান্ত ক্রেতাদের অনলাইন বিমুখ করবে। কারণ তাদের কেনাকাটার খরচ অনেক বেড়ে যাবে।’ এ বিষয়ে দেশের সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘ই-কমার্সে ভ্যাট আরোপ অবশ্যই যৌক্তিক নয়। এটা হয়তো ভুল করে হয়েছে। গতবারও এমনটা হয়েছিল। আমি মনে করি, আরও অন্তত ৫ বছর ই-কমার্সে ভ্যাট অব্যাহতি থাকা উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘ই-কমার্সে সবে শুরু। এখন ক্রেতাদের অনলাইনমুখী করার সময়। ভ্যাট আরোপ করলে তা হবে না। আমরা মনে করি ই-কমার্সে এখনও ভ্যাট আরোপের সময় হয়নি।’ এ বিষয়ে ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ‘ফেসবুক, ইউটিউব, গুগলকে ভ্যাটের আওতায় আনতে গিয়ে ই-কমার্সকেও ভার্চুয়াল বিজনেস হিসেবে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব। এটা এই খাতের বিকাশে প্রধান অন্তরায় হবে বলে আমি মনে করি।’ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আজকের ডিলের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাসরুর বলেন, ‘ই-কমার্স ব্যবসার ওপর ভ্যাট আরোপ উদীয়মান এই শিল্পের ওপর বিরাট আঘাত। গত ২ থেকে ৩ বছরে এই শিল্পে ১০ হাজারের বেশি নতুন উদ্যোক্তা এসেছেন। কর্মসংস্থান হয়েছে ২ লাখের বেশি তরুণের।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের যেখানে সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও তরুণদের কর্মস্থান, সেখানে এই ভ্যাট আরোপ সরকারের নিজস্ব নীতির পরিপন্থী। এছাড়া এটি সরকারের ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা-২০১৮ -এর পরিপন্থী।’ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান প্রিয়শপ ডট কমের প্রধান নির্বাহী আশিকুল আলম খান জানান, ই-কমার্সকে ভার্চুয়াল ব্যবসায়ের সংজ্ঞায় ফেলে সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব এই খাতে এক প্রকার দুর্যোগ ডেকে আনবে। উল্লেখ্য, গত অর্থবছরে অনলাইন ব্যবসায় তথা ই-কমার্সে পাঁচ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাব করা হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠন, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর উদ্যোগের ফলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিষয়টি ছাপার ভুল বলে উল্লেখ করে এবং বাজেট পাসের সময় ওই ভ্যাট বাদ দেয়া হয়। এরও আগে একবার ই-কমার্সে চার শতাংশ ভ্যাটের প্রস্তাব করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্টদের আপত্তির মুখে সেবারও তা পাস হয়নি।
×