ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মারিয়া আহমেদ মিতু

এই বর্ষায় করণীয় এবং বর্জনীয়

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ১৭ জুন ২০১৯

এই বর্ষায় করণীয় এবং বর্জনীয়

ভীষণ গরমের পরে বর্ষাকাল নিয়ে আসে স্বস্তি। কিন্তু বৃষ্টি হোক বা না হোক বর্ষাকাল হলো এমন একটা সময় যে সময়ে ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে শুরু করে আরও অনেক রকমের সমস্যায় পড়তে হয়। এই সময়ে তাই একটু বেশি সাবধানতা বজায় রাখতে হবে। কিছু অভ্যাস বদলে ফেলে, কিছু নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু বর্ষাকালটা হয়ে উঠবে আরও বেশি সুন্দর। বর্ষাকালে নিজেকে সুন্দর রাখতে কি করণীয় আর বর্জনীয় তারই কিছু টিপস দেখে নেয়া যাক- -যদি বৃষ্টিতে ভিজে থাকেন তাহলে ঘরে ফিরে আগেই নিজের মাথাটা ভাল করে মুছে ফেলতে হবে। আর তারপরে একটু স্নান করে নিতে হবে এতে ঠা া লাগার সম্ভাবনা থাকে না। বর্ষাকালে ঈষদুষ্ণ পানিতে স্নান করা ভাল কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই গরম জল ত্বককে লাল করে করে দেয় সে ক্ষেত্রে ট্যাপের জলে স্নান করা ভাল এতে স্কিনের কোন ক্ষতি বা ড্যামেজ হবে না। -আজকাল আমাদের সব কিছুতেই তাড়া। তাই নিজের জন্য সময় দেয়ার সময়টাও কমে যাচ্ছে। আজকাল মুখ পরিষ্কারের নতুন ট্রেন্ড হলো ফেসিয়াল ওয়াইপ যা প্যাকেটের মধ্যে পাওয়া যায়। এটা ক্যারি করা সুবিধে আর জল ছাড়াই যেখানে ইচ্ছে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু বর্ষাকালে ফেসিয়াল ওয়াইপ ব্যবহার না করাই ভাল। ফেসিয়াল ওয়াইপ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে তাতে যদি মুখ ঠিকমতো পরিষ্কার না হয় তাহলে কিন্তু ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন, ত্বক ফেটে যাবার সম্ভাবনা থাকে। -বর্ষাকালে পায়ের যত্ন অবশ্যই নিতে হবে। কারণ এই সময় পায়ের সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়। বর্ষাকালে পেডিকিওর করতে হবে নিয়ম করে। ভাল হয় যদি আপনি পেডিকিওর বাড়িতেই করতে পারেন। তবে পেডিকিওর করার সময় খেয়ালে রাখতে হবে পেডিকিওর করার সমস্ত জিনিস যেন স্টেরিলাইজ করা থাকে। স্টেরিলাইজ করার জন্য সমস্ত উপকরণকে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিতে পারেন। যদি আপনি পার্লারে পেডিকিওর করান তাহলে খেয়াল রাখতে হবে সেখানে সব জিনিসগুলো স্টেরিলাইজড করা কিনা। এই সময় স্বাস্থ্যের দিকটা খেয়াল রাখতেই হবে। চেষ্টা করবেন পায়ের কিউটিকলটা না উঠাতে। -বর্ষাকালে সঠিক জুতা নির্বাচন করাটা খুবই জরুরী। বর্ষাকালে অনেকেই পা ঢাকা জুতা পরেন কিন্তু সেটা সঠিক নয়। কারণ বর্ষাকালে রাস্তায় ময়লা জল কাঁদা এবং আর্দ্রতার ফলে পা ভিজে ও চটচটে হয়ে যায় আর সেই ভেজা জুতা পায়ে নিয়ে সারাদিন অফিসে বা কলেজে থাকলে পায়ের গোড়ালি ফেটে যায় ও দুর্গন্ধও বের হতে থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বাড়িতে ফিরে পা খুব ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। এই সময়ে পা খোলা ওয়াটারপ্রুফ জুতা পরতে হবে তাহলে এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এখন কম বেশি সব দামেই দারুণ উজ্জ্বল রঙের ওয়াটারপ্রুফ জুতা পাওয়া যায় যা পরলে দেখতেও ভাল লাগবে আর এই সমস্যাগুলোও হবে না। -এ তো গেল জুতার কথা। এবার আসি পোশাকের কথায়। বর্ষাকাল মানেই সর্দি-কাশি জ্বর আর ইনফেকশন। এই সময়ে টাইট পোশাক পরবেন না, কারণ টাইট পোশাক ত্বকের খুব কাছাকাছি থাকে আর তাই যত টাইট পোশাক পরবেন বর্ষার নোংরা জল ধুলো জামাতে লেগে ইনফেকশনের চান্স আরও বাড়িয়ে দেবে। এই সময়ে তাই ঢিলে সিল্ক বা সিনথেটিকের পোশাক পরা দরকার কারণ এগুলো খুব সহজে শুকিয়েও যায়। -এই সময়ে বাতাসে খুব আর্দ্র হয় তাই মেকআপ কিন্তু নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তাই ভাল ব্র্যান্ডের মেকআপ ব্যবহার করুন। -বাড়িতে ফিরে মুখ ধোবার জন্য একটা পাতিলেবুর রসের সঙ্গে জল মিশিয়ে সেটা দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এতে সারাদিনের ট্যান চলে যাবে আর মুখের চটচটে ভাবও দূর হবে। -এই সময়ে রোদ অনেক কম থাকে আর আকাশের মুখ থাকে ভার তাই অনেকেই সানস্ক্রিন (sunscreen) লাগান না। রোদ উঠলেই যে sunscreen লাগাতে হবে তা কিন্তু একদম ভুল ধারণা। রোদ না থাকলেও sunscreen লাগাতে হবে সূর্যের ইউভি (UV) রশ্মির থেকে বাঁচতে। তাই আকাশ যতই মেঘলা থাকুক না কেন বেরোনোর আগে sunscreen মনে করে লাগাতেই হবে। সবশেষে বলি স্বাস্থ্যের দিকটা খেয়াল রাখতে হবে। বাইরের খাবার, পানি যতটা পারবেন খাবেন না। এই সময়টা পেট খারাপ, ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে তাই হাত পরিষ্কার রাখবেন। সব সময় সঙ্গে ছাতা রাখতে হবে আর এভাবেই সুস্থ ও সুন্দরভাবে বর্ষাকে উপভোগ করুন।
×