ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী হবে কারিগরি ও মাধ্যমিক শিক্ষা ॥ দীপু মনি

প্রকাশিত: ১০:১৭, ১৭ জুন ২০১৯

 আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী হবে কারিগরি ও মাধ্যমিক শিক্ষা ॥ দীপু মনি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী মাধ্যমিক ও কারিগরি শিক্ষার পরিবর্তন করা হচ্ছে। এ তথ্য জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, মাধ্যমিক ও কারিগরি শিক্ষা হবে আন্তর্জাতিক বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী। এ লক্ষ্য নিয়ে মাধ্যমিক ও কারিগরি শিক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তনের চিন্তা করছে সরকার। ভবিষ্যত সব সময়ই অনিশ্চিত। এটি এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। দেশ ও বিদেশের শ্রম বাজারের ক্ষেত্রেও এই চ্যালেঞ্জ প্রযোজ্য। রবিবার রাজধানীতে স্কিল এ্যান্ড এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (স্টেপ) আওতায় কারিগরি শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা স্কিলস কম্পিটিশনের চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম জাকির হোসেন ভূইয়া। আরও ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোঃ আলমগীর, কারিগরি অধিদফতরের মহাপরিচালক রওনক মাহমুদ, স্টেপ প্রকল্পের পরিচালক এ বি এম আজাদ প্রমুখ। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, দেশে-বিদেশে শ্রমবাজারে ভবিষ্যতে কি ধরনের পরিবর্তন হবে তা আমাদের গবেষণা করতে হবে। সে অনুযায়ী আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। উপযুক্ত মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব। সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দেশের কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের উন্নয়নে প্রতি উপজেলায় তরুণ-তরুণীদের জন্য একটি করে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পরিকল্পনা রয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি ২৮ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান তৈরি করার। যার মধ্যে প্রতি উপজেলা থেকে এক হাজার তরুণ-তরুণীর জন্য বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকবে। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য শুধু ভবন তৈরি করে দেয়াটা যথেষ্ট নয়। বরং প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রশিক্ষক ও শিক্ষক নিয়োগ এবং তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে শ্রম বাজারের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উপযুক্ত কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে। একই সঙ্গে সামাজিকভাবে কারিগরি শিক্ষার মূল্য ও চাকরির ক্ষেত্রে এর উপযোগিতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণদান করার কাজে সরকারী কেন্দ্র ব্যবহার করতে পারবে, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতিমালা ২০১১ সেই সুযোগ করে দিয়েছে। এতে করে সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। নির্বাচিত হওযার আগে আমরা যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তার মধ্যে একটি হল দেশের শিক্ষা খাতের সর্বস্তরে উন্নয়ন সাধন। এ উদ্দেশ্যে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার ক্ষেত্রে কারিকুলাম এবং পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আমরা এটাও জানি, শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষাদান পদ্ধতির ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, যার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের প্রয়োজন উদ্ভাবনী চিন্তা, উদ্যোক্তা এবং আরেকটু সাহসী হওয়ার। ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার কুফল আমরা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি, যা নতুন এবং নিজস্বভাবে চিন্তা করতে আমাদের নিরুৎসাহিত করে। মোঃ আলমগীর বলেন, আমরা আমাদের বর্তমান উৎপাদনের মাধ্যমে উন্নত দেশ হতে পারব না। আমাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। আর তা করতে হলে বাজার চাহিদা অনুযায়ী আমাদের আন্তরিকতার সঙ্গে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে। উল্লেখ্য, এ স্কিল কম্পিটিশনে ১৬২টি সরকারী বেসরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রায় আড়াই হাজার প্রজেক্ট জমা দেয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট ২০১৪ সাল থেকে সরকারী-বেসরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের লক্ষ্যে স্কিলস কম্পিটিশন আয়োজন করে আসছে।
×