ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচন

এবার ইভিএমে ভোট দিতেই আগ্রহ বেশি ভোটারদের

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ১৮ জুন ২০১৯

এবার ইভিএমে ভোট দিতেই আগ্রহ বেশি ভোটারদের

সমুদ্র হক ॥ সোমবার দিনভর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট প্রদানের ডেমোর (অনুশীলন) মাধ্যমে বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপ নির্বাচনের শোরগোল আরও বাড়ল। আজও (মঙ্গলবার) ডেমো প্রদর্শন চলবে। কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল ইভিএমে ভোটারদের আগ্রহ বেশি। বগুড়ায় এই প্রথম প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে ২৪ জুন। একাদশ নির্বাচনে এই আসনের বিএনপির বিজয়ী প্রার্থী কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ গ্রহণ না করায় আসনটি শূন্য হয়। ভোটগ্রহণে হাতে আর সময় নেই। সময় দ্রুত ছুটছে। প্রার্থীগণ রাতের সুখ নিদ্রাকে বিরতি দিয়েছেন। বড় তিনটি দলই প্রার্থী দিয়েছে। সঙ্গে আছে দুই খুচরা দুই দল ও দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী। সাকল্যে সাতজন। তবে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম টি জামান নিকেতা এবং বিএনপির প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও শেরপুর-ধুনট আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের মধ্যে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিকেতা এই প্রথমবার সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তার মনোবল বাড়াতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, কেন্দ্রীয় অন্য নেতা এবং স্থানীয় নেতাগণ সভা সমাবেশ করে বগুড়ার উন্নয়নে টি জামান নিকেতাকে ভোট প্রদানের আবেদন নিবেদন করছেন। এস এম টি জামান নিকেতা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জনসংযোগের মাঠে আছেন। জনসংযোগ শহর এলাকাতেই বেশি। বিএনপি প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য নির্বাচনে অভিজ্ঞ (তার আসন থেকে চারবার নির্বাচিত) হওয়ায় সদর আসনের ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, নির্বাচিত হলে তিনি শপথ গ্রহণ করে সংসদে বগুড়ার উন্নয়নের কথা বলবেন। তিনি দিন রাত এক করে দৌড়ঝাঁপ করছেন এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। তাদের পাশাপাশি দশম সাধারণ নির্বাচনে এই আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ও গেল একাদশ নির্বাচনে পরাজিত জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওমরের জনসংযোগ এখন এককভাবে। গেল নির্বাচনে তিনি মহাজোটের প্রার্থী থাকায় আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছিলেন। এবার এককভাবে মাঠে নেমেছেন। জনসংযোগে শুধু জাপার নেতা কর্মীদের দেখা যায়। আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে জাসদ (ইনু গ্রুপ)। বিএনপির সঙ্গে তাদের অন্যতম শরিক জামায়াতকে তেমন দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে বাকি চার প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠুর জনসংযোগ চোখে পড়ে। তার বড় সুবিধা হলো : মোটর শ্রমিকদের শক্তি। মুসলিম লীগের রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মিনহাজের জনসংযোগের অন্যতম বাহন রিক্সার মাইকে রেকর্ড করা কথা। ভোটারদের অনেকে তাদের চেনে না। উপনির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা আগামীকাল (১৯ জুন) বগুড়ায় উপনির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) প্রশিক্ষণের দিক নির্দেশনা দেবেন। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী সকল প্রার্থীর সঙ্গে মত বিনিময় করবেন। বগুড়া-৬ আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪শ’৫৮ জন। মহিলা ভোটার বেশি। পৌর এলাকা ও ১১ ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্র ১৪১টি। একাদশ নির্বাচনে এই আসনে বিএনপি প্রার্থী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২ লাখ ৫ হাজার ৯শ’৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। জাপা প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওমর পেয়েছিলেন ৩৯ হাজার ৯শ’৬১। ওই ভোট গ্রহণ করা হয় ম্যানুয়ালি ব্যালট পেপারে। নির্বাচন কমিশনার, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন আশাবাদী ইভিএমেও সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ করে দ্রুত ফল দেয়া যাবে। ইভিএমের ভোট প্রদানের ডেমোতে অংশ নেয়া মধ্য বয়সী সুত্রাপুরের নুরুল আমিন বললেন ‘বাপো ভোট তো দেমো। গণনা ঠিক থাকপি তো। কিবে কিবে কেম্বা শোনা যায়। কম্পুটার যন্ত্রত বলে কিবে করা যায় (বাপু ভোট তো দেব। গণনা ঠিক থাকবে তো। কি যেন শোনা যায়। কম্পিউটারে নাকি কি যেন করা যায়)।’ নির্বাচনী কর্মকর্তাগণ তাদের এই শঙ্কা হাতে কলমে দেখিয়ে দিয়ে ভীতি দূর করে দিচ্ছেন। তরুণ ভোটার মিতা আক্তার বলল,এখন প্রযুক্তি অনেক এগিয়ে আধুনিক ও উন্নত। নির্বাচন কর্মকর্তাগণ সুষ্ঠুভাবেই ভোটগ্রহণ করবেন বলে আশা করছি।
×