ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ মানাংকে হারাতে চায় আবাহনী

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ১৯ জুন ২০১৯

আজ মানাংকে হারাতে চায় আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ব্যবস্থাপনায় এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) তত্ত্বাবধানে ‘এএফসি কাপ ২০১৯’র হোম ম্যাচ আগামীকাল বুধবার বিকেল পৌনে ৬টায় ঢাকা আবাহনী লিমিটেড বনাম নেপালের মানাং মার্শিয়াংদি ক্লাবের মধ্যে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচ উপলক্ষে উভয় দলের প্রধান প্রশিক্ষক ও দলের অধিনায়কের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুরে মতিঝিলের বাফুফে ভবনের কনফারেন্স রুমে এক প্রি-ম্যাচ প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রি-ম্যাচ প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন মানাংয়ের প্রধান প্রশিক্ষক চিরিং লোপসাং, দলের অধিনায়ক বিরাজ মহারজন; আবাহনীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান প্রশিক্ষক মারিও লিচিনো গারেইরো ও দলের স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন। আবাহনীর কোচ এবং অধিনায়ক জানান, খেলাটি তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এএফসি কাপে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাদের টিকে থাকতে জয় প্রয়োজন। তাই তারা ভাল খেলা উপহার দিয়ে জয়ী হতে চান। নেপালের কোচ বলেন, উভয় দলই খুবই শক্তিশালী এবং এই ম্যাচে জয়ী হওয়ার জন্যই তারা এখানে এসেছেন। এই ম্যাচ উপভোগের জন্য কোন টিকেটের প্রয়োজন হবে না। সব দর্শকের জন্য স্টেডিয়ামের গ্যালারি উন্মুক্ত থাকবে। খেলাটি সরাসরি সম্প্রচারিত হবে ফক্স স্পোর্টস এশিয়াতে। আবাহনীর কোচ মারিও বলেন, ‘আমাদের ভাল প্রস্তুতি হয়েছে। দু’দিন আগে ভাল দলের সঙ্গে প্রিমিয়ার লীগে ম্যাচ খেলেছি। আমরা জয়ের জন্যই বুধবার খেলতে নামবা’ জীবনের ভাষ্য, ‘আমরা গত ম্যাচটা ভাল করেছি। বিগ ম্যাচ। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে ধারণা আছে। তাদের বিপক্ষে খেলেছি। কোচ আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত করেছেন। জয়ের জন্যই নামব। আমরা ভাল পজিশনে আছি। হোম ম্যাচ, তাই এই ম্যাচে বড় সুযোগ থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী।’ জীবন আরও বলেন, গত ৩ এপ্রিল মানাংয়ের বিপক্ষে এ্যাওয়ে ম্যাচটি জিতলেও আবাহনী ওই ম্যাচে খুবই চাপে ছিল। ভারতের চেন্নাইন এফসি এবং আবাহনীর পয়েন্ট সমান (৪ ম্যাচে ৭)। কিন্তু গোল গড়ে এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয়পর্বে যাবার রেসে এগিয়ে চেন্নাইন। তাই আজ যে কোন মূল্যেই ম্যাচে জিততে চায় ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনী। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের মধ্যে তলানিতে আছে মানাং। ৪৭ বছর বয়সী আবাহনী মোট ৩৬টি ট্রফি করায়ত্ত করেছে। পক্ষান্তরে ৩৭ বছর বয়সী মানাং জিতেছে ২৪টি। সংবাদ সম্মেলনে আবাহনীর কোচ মারিওর অভিমত, ‘আমাদের অবশ্যই এই ম্যাচটি জিততে হবে। যে করেই হোক ম্যাচটা জিততে চাই। সানডেকে আমাদের প্রয়োজন। প্রিমিয়ার লীগে গত ম্যাচেই সে হ্যাটট্রিক করেছে। এএফসি কাপে আগের ম্যাচগুলোতে মাত্র এক গোল করেছে। আশাকরি মানাংয়ের বিপক্ষে সে স্কোর করতে পারবে।’ মারিও আরও যোগ করেন, ‘আমাদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার ডিফেন্ডার তপু বর্মণ এবং মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ এবং ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েলিংটন প্রিয়রি এই ম্যাচে থাকছে না ইনজুরির কারণে।’ জীবন জানান, ‘আমাদের জন্য বড় একটা সুযোগ। এই বছর নিয়ে তিনবার খেলছি এএফসি কাপ। এবার বড় সুযোগ কোয়ালিফাই করার। এ সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাই না। ক’দিন আগেই জাতীয় দলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কোয়ালিফাই করাটাও অবশ্যই উৎসাহ জাগাচ্ছে আমাদের। আমি জাতীয় দলে ভাল সুযোগ তৈরি করেও কিন্তু গোল করতে পারিনি। মানাংয়ের বিপক্ষে গোল করতে চাই। সর্বোচ্চটা দিয়ে তাই চেষ্টা করব।’ তাছাড়া গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে বেশি গোলে জিততে হবেই। তাই আবাহনীর কোচ চাইছেন যত বেশি সম্ভব গোল আদায় করে নিতে। নেপালের কোচ লোপসাং বলেন, ‘খুবই গুরুত্ব সহকারে খেলব ম্যাচটি। তিন পয়েন্টের জন্যই আমরা এখানে এসেছি। তাই জয়ের জন্যই নামব। এখানকার আবহাওয়া খুবই গরম যা আমাদের ভীষণ ভোগাচ্ছে। তারপরও আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছি।’ মানাং অধিনায়ক বিরাজ বলেন, ‘এই ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। আবাহনীও অনেক ভাল দল। ভাল লড়াই হবে। এর আগে আমাদের আর্টিফিশিয়াল টার্ফে ম্যাচটি হয়েছিল। এবার ম্যাচ হচ্ছে ঘাসের মাঠে। এটি কোন পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।’ দুই ড্র, একটিতে ২-২ এবং একটিতে ১-১ গোলে ড্র, অন্যটিতে হার। কিন্তু একটিও জয় নেই মানাংয়ের। একটি ম্যাচে পেনাল্টি পেয়েও জিততে পারেনি তারা। মানাংয়ের কোচ বিষয়টিকে দেখছেন নিজেদের দুর্ভাগ্য হিসেবে। তিন দলের মধ্যে চেন্নাইকেই ভাল মনে হয়েছে তার। তিনি বলেন, ‘স্কোর করতে না পারাটা আমাদের দলের বড় সমস্যা বলে মনে করছি। সেই সমস্যা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব বলে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশ এখন অনেক ভাল করছে। এটা আমার সেকেন্ড হোম। তাই আমি মোটেই ভয় পাচ্ছি না।’ গত ৩ এপ্রিল নেপালের ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠেয় মানাংয়ের বিপক্ষে এ্যাওয়ে ম্যাচে আবাহনীতে ছিল জাতীয় দলের ১৩ ফুটবলার, মানাংয়ের ছিল ১৭ খেলোয়াড়। ফলে লড়াইটা হয়েছিল সমানে-সমান। তবে গোল করে এগিয়ে যাবার পর আবাহনী রক্ষণাত্মক খেলায় শেষদিকে তাদের ওপর চেপে বসে মানাং। ফলে সামগ্রিকভাবে বল নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল মানাংই (৬৪%)। অফসাইডেও দু’দলই সমান ছিল (২-২)। অথচ ঘরের মাঠ-দর্শক আর আবহাওয়া সব নিজেদের পক্ষেই ছিল মানাংয়ের। কিন্তু সফরকারী আবাহনী এগুলোকেই পাত্তা না দিয়ে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলার চেষ্টা করে। তাতে সফলও হয় তারা। নিজেদের রক্ষণদুর্গ অক্ষত রেখে আক্রমণে যায় তারা। ওই ম্যাচে আবাহনীর জয়ের নায়ক ছিলেন আফগান ডিফেন্ডার মাসিহ্ সাইঘানি।
×