ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কেশবপুরে জমি নিয়ে বিরোধ ॥ বাড়িঘরে আগুন

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১৯ জুন ২০১৯

কেশবপুরে জমি নিয়ে বিরোধ ॥ বাড়িঘরে আগুন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর ॥ বুধবার সকালে কেশবপুরে কাস্তা গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও মারপিটের অভিযোগে মামলা করায় তিন পরিবারের ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রভাবশালী প্রতিপক্ষরা আজ বুধবার প্রথম দফায় তিন পরিবারের বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে তদের দাবিকৃত জমির দখল নিয়ে বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীদের হামলায় ২ মহিলাসহ ৪ জন আহত হয়। পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে মঙ্গলবার রাতে কেশবপুর থানায় মামলা দাখিল করা হয়। থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসামিদের এবজনক আটক করে। মামলা করায় বুধবার সকালে আবারও প্রতিপক্ষ ইব্রাহিম গং তাদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। মামলার অভিযোগে ও কাস্তা গ্রামে আবুবক্কর সিদ্দিক জানান, এক গ্রামের প্রতিবেশী সবুর শেখের ছেলে ইব্রাহিম হোসেনের সাথে বসতভিটার জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের বিরোধ চল আসছিল। বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার সকালে ইব্রাহিম হোসেন, শরিফুল ইসলাম, আক্তারুজ্জামান, সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৮/২০ জন যুবক লোহার রড, সাবল, দা, কুড়াল নিয়ে আবুবকর সিদ্দিকের পরিবারের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারিরা আবুবকর সিদ্দিকের ছেলে মিজানুর রহমানের বসতঘর, রান্নাঘর, গোয়ালঘর ও বিচলী গাদা ভেঙে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। গোয়াল ঘরে থাকা ওই পরিবারের একটি খাসি ছাগাল পুড়ে মারা যায়। খবর পেয়ে বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা আবুবকর সিদ্দিক, মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী ফরিদা পারভিন ও ফতেমা বেগমকে মারপিট করে আহত করে। আহতদের কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে হামলাকারিরা ওই তিন বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। শেষে তারা ওই তিন পরিবারের বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তা বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়ে তাদের দাবিকৃত জমি দখল করে নেয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে মিজানুর রহমান বাদি হয়ে ইব্রাহিম হোসেন, শরিফুল ইসলাম, আক্তারুজ্জামান, সাইফুল ইসলামসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। আবু বকর সিদ্দিক জানান, মামলা করার কারনে বুধবার সকালে ইব্রাহিম গং আবারও বাড়িতে হামলা করে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমাদের আবারও মারপিট করে আহত করেছে। আমার ছেলে রেজওয়ান হোসেনকে মেরে আহত করায় তাকে আজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইব্রাহিম হোসেন জামায়াতের একজন শীর্ষ নেতা ও হিংস্র প্রকৃতির লোক। তারা আমাদের পৈতৃক বসতভিটার জমির জোর করে দখল করে নিতে সে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছে। সে আমার পরিবারের বাড়িঘর ভাঙচুর করেও ক্ষান্ত হযনি, পানি খাওয়ার টিউবয়েলটিও বেড়া দিয়ে ঘিরে বন্ধ করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে ইব্রাহিম হোসেন বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে তা সঠিক নয়। জমি নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকবার মাপামাপি হয়েছে। সর্ব শেষ তারা সার্ভেয়ার এনে মাপামাপি করেছে। তারা আমার জমি ছাড়বে না বলে ওই জায়গায় রান্নাঘর ও গোয়ালঘর বানিয়ে রেখেছে। তাই তাদের উচ্ছেদ করে আমার জমি দখলে নিয়ে বেড়া দিয়েছি। কেশবপুর থানার ওসি (তদন্ত) শাহাজান আলী জানান, বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং আক্তারুজ্জামান নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে বুধবারের ঘটনা তিনি জানেন না বলে জানান।
×