মোরসালিন মিজান ॥ গ্রীষ্ম গেছে। গরমটা সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়ার কথা, না, নিয়ে যায়নি। তালপাকা গরমে গাছের প্রায় সব তাল পেকেছে। পিঠা করে খাওয়াও মোটামুটি শেষ। কিন্তু গরম কমছে না। দিনে গরম। রাতেও তা-ই। টেকা একদম মুশকিল হয়ে গেছে। ঘামে শরীর ভিজছে। শুকোচ্ছে। আবার ভিজছে। অসহনীয় অবস্থা। মাটির পিঞ্জিরা থেকে প্রাণপাখি যেন বের হয়ে যেতে চাইছে! এ অবস্থায় কবে আর কিভাবে শীতল হবে ধরণী? কয়েকদিন ধরে এই এক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন রাজধানীবাসী।
গত ১৪ জুন আনুষ্ঠানকিভাবে বিদায় নিয়েছে গ্রীষ্ম। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ দুই ছিল মাস খরার। দাবদাহে গা পুড়েছে। বর্ষা শুরু হলেই রক্ষা। এ আশায় বর্ষার জন্য প্রতিক্ষা করে ছিলেন সবাই। ১৫ জুলাই থেকে নতুন এই ঋতু শুরু হয়েছে। কিন্তু গরম কমছে না। গ্রীষ্মের কাল বলেই মনে হচ্ছে। এখনও আগের মতোই তাপ বিকিরণ করছে সূর্য। চোখ রাঙাচ্ছে। টেপের পানিতেও ভেবে চিন্তে হাত দিতে হয়। ভুল করলে ত্বকে ফুসকা পড়বে নিশ্চিত।
অথচ তাপমাত্রা খুব বেশি নয়। বুধবারের কথাই ধরা যাক, এদিন ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এরপরও মারাত্মক গরম অনুভূত হচ্ছে। কেন? উত্তরে আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল বলেন, সাধারণত রাতে তাপমাত্রা কমে। কিন্তু এখন সেভাবে কমছে না। উল্টো দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য অনেক কমে এসেছে। গড় ব্যবধান কমে যাওয়ার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, এ কারণে গা অত্যধিক ঘামছে। এ অবস্থায় বাঁচার উপায় কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বৃষ্টি-ই দূর করবে নাগরিক ক্লান্তি। গরম থেকে মুক্তি দেবে।
কিন্তু বৃষ্টি তো মাঝে মাঝে হচ্ছে। এমনকি আষাঢ়ের প্রথম দিনই শ্রাবণধারা নেমেছিল। এখনও কম বেশি হচ্ছে। কিন্তু গরম তো কমছে না। বৃষ্টি যতক্ষণ হচ্ছে, যতক্ষণ বইছে ঝিরিঝিরি হাওয়া, ততক্ষণই আরাম। তার পর থেকে ভ্যাপসা গরম। তাহলে? জবাবে আবহাওয়া অফিস বলছে, গরম এত যে, অল্পস্বল্প এবং অনিয়মিত বর্ষণে আর কাজ হচ্ছে না। বৃষ্টি বাড়লে এবং নিয়মিত হলে ক্রমেই শীতল হতে শুরু করবে ধরণী। সুতরাং এখন সকল চাওয়া বৃষ্টির কাছে। বর্ষার ষোলোআনা চাই। কিন্তু একটু দেরি হবে বলেই আভাস। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। আর তাহলে সারাদেশে মৌসুমি বায়ুর বিস্তার ঘটতে দেরি হতে পারে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় না থাকায় বৃষ্টি হলেও, বর্ষাকে পুরোপুরি পাওয়া হবে না। তাই আয় বৃষ্টি ঝেপে...।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: