ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

তিনবার জাল খুঁজে পেলেও জয় পায়নি ব্রাজিল!

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ২০ জুন ২০১৯

 তিনবার জাল খুঁজে পেলেও জয় পায়নি ব্রাজিল!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পুরো ম্যাচে একতরফা আধিপত্য বিস্তার করে খেলে স্বাগতিক ব্রাজিল। পাত্তাই পায়নি ভেনিজুয়েলা। আক্রমণের ঢেউয়ে প্রথমার্ধে একবার, দ্বিতীয়ার্ধে দুইবারসহ পুরো ম্যাচে মোট তিনবার প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ায় রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে সেলেসাওদের জালে একবারও বল প্রবেশ করাতে পারেনি ভেনিজুয়েলা। এরপরও ম্যাচশেষে জয় মেলেনি ব্রাজিলের! কারণ তিনটি গোলের একটিও যে বৈধ ছিল না। একবার ফাউল, একবার অফসাইড ও শেষবার অপরিষ্কার অফসাইডের কারণে গোল বাতিল হয়ে যায়। যে কারণে চলমান কোপা আমেরিকা ফুটবলে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে গোলশূন্য ড্রয়ের হতাশায় পুড়তে হয়েছে ব্রাজিলকে। বুধবার সকালে সালভাদরের ফন্টে নোভা এ্যারানায় ম্যাচটি জিতলে এক খেলা বাকি থাকতেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যেত কুটিনহো, ফিরমিনোদের। কিন্তু ভাগ্যের খাড়ায় ড্র হওয়ায় অপেক্ষা বেড়েছে গ্রুপে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। তবে এ ড্রয়ের পরও পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ব্রাজিল। ‘এ’ গ্রুপের দুই ম্যাচ শেষে তাদের সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে পেরুর ঝুলিতেও ৪ পয়েন্ট। কিন্তু গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় এক নম্বরে অবস্থান করছে ব্রাজিল। গ্রুপের আরেক ম্যাচে বলিভিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে পেরু। ফলে শেষ আটের খেলার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে ফ্লোরেস, ফারফানদের। ম্যাচে প্রাধান্য থাকলেও গোল মিসের মহড়া করতে থাকে ব্রাজিল। বেশ কয়েকটি সুযোগ মিসের পর ম্যাচের ৩৯ মিনিটে ঠিকই জালের ঠিকানা খুঁজে পান লিভারপুল ফরোয়ার্ড রবার্টো ফিরমিনো। কিন্তু বাদ সাধেন রেফারি, যার দায় পুরোটা ফিরমিনোরই। কেননা ডান পাশ থেকে আসা দানি আলভেসের ক্রস রিসিভ করতে গিয়ে তিনি ডি বক্সের মধ্যে ফেলে দেন ভেনিজুয়েলার ডিফেন্ডার ভিলানুয়েবাকে। ফলে ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি, গোল করেও বঞ্চিত হন ফিরমিনো। গোলশূন্য অবস্থায় থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল। বিরতি থেকে ফিরে দ্বিতীয়ার্ধে নামার সময়ই রিচার্লিসনের বদলে গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে মাঠে নামান ব্রাজিলিয়ান কোচ টিটে। মাঠে নেমে মাত্র ১৫ মিনিট পরই বল জালে জড়ান ম্যানচেস্টার সিটি তারকা জেসুস। কিন্তু এবারও গোল বাতিল করে দেন রেফারি। যার পেছনে আবারও থেকে যায় ফিরমিনোর নাম। ডি বক্সের বাইরে থেকে জেসুসের শট ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে দিকভ্রষ্ট হয়ে গেলে তা পান ফিরমিনো। কিন্তু তখন তিনি ছিলেন অফসাইড পজিশনে। ফলে তার কাছ থেকে ফিরতি বল পেয়ে জেসুস গোল করলেও সেটি ভিএআরের (ভিডিও এ্যাসিসটেন্ট রেফারি) সহায়তা নিয়ে বাদ দিয়ে দেন রেফারি। যে কারণে আরও একবার হতাশায় পুড়েন স্বাগতিক দর্শকরা। গোল বাতিলের এই খেলা বাকি ছিল ম্যাচের শেষ পর্যন্ত। যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচে হয়তো আর কোন গোল হবে না ঠিক তখনই ৮৭ মিনিটে গোল করেন ব্রাজিলের আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক ফিলিপ কুটিনহো। কিন্তু এবারও ভিএআরের সহায়তা নিয়ে গোল বাতিলের ঘোষণা দেন রেফারি। তবে এবারের গোল বাতিলের কারণ পরিষ্কার ছিল না কারও কাছেই। ঘটনাবহুল ম্যাচে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে দুই দফায় আরও ৯ মিনিট যোগ করা হয়। এ ৯ মিনিটেও বেশ কয়েকটি জোরালো আক্রমণ করে ব্রাজিল। কিন্তু ফিনিশিং ব্যর্থতায় কোনটিতেই গোল পায়নি তারা। ফলে গোলশূন্য ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিকদের। ম্যাচ শেষে ব্রাজিল কোচ টিটে অবশ্য দুটি ভিএআর সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোন দ্বিমত করেননি। তিনি বলেন, দুই গোলের বিষয়ে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভিএআর’র সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। আমি এখানে কোন কিছু দাবি করতে চাচ্ছি না। টিটে আরও বলেন, আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারিনি। পুরো দল কিছুটা নার্ভাস ছিল। আক্রমণভাগেও ব্যর্থতা চোখে পড়েছে। ভেনিজুয়েলা কোচ রাফায়েল ডুডামেল শিষ্যদের পারফর্মেন্সের প্রশংসা করে বলেন, ম্যাচটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে গ্রুপপর্ব পার করতে না পারলে এই ফল কোন কাজে আসবে না।
×