অনলাইন ডেস্ক ॥ বাবা-মায়ের বিচ্ছেদে শিশু-সন্তানের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিচ্ছেদের ৩৬ মাসের মধ্যে এসব শিশুর স্থূলকায় হওয়ার আশঙ্কা থাকে। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সাইন্সের এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় বলা হয়, বিচ্ছিন্ন পরিবারে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের ২৪ মাসের মধ্যে শিশুদের সবচেয়ে বেশি ওজন বাড়ে, যা একই সময়ে একসঙ্গে থাকা বাবা-মায়ের শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি।
২০০০ এবং ২০০২ সালে জন্ম নেয়া সাত হাজার ৫৭৪ জন শিশুর ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। এতে বলা হয়, ছয় বছর বয়সের আগে যেসব শিশুর মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়েছে, তাদের মধ্যে ওজন বাড়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
গবেষণায় ব্যবহৃত তথ্য সংগ্রহ করে ইউকে মিলেনিয়াম কোহর্ট স্টাডি। তারা যুক্তরাজ্যে চলতি শতাব্দীর শুরুর দিকে জন্ম নেয়া শিশুদের জীবনযাত্রা পর্যবেক্ষণ করে থাকে। ডেমোগ্রাফি নামক এক জার্নালে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
নয় মাস থেকে শুরু করে তিন, পাঁচ, সাত, ১১ ও ১৪ বছর বয়সী শিশুদের ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়। তবে গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ঠিক রাখতে পরে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোর কারণে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের তথ্য বাদ দেয়া হয়।
গবেষণায়, শিশুদের শারীরিক ভর সূচক বা বডি ম্যাস ইনডেক্স পরিমাপের জন্য তাদের উচ্চতা, ওজন, বয়স এবং লিঙ্গ বিবেচনায় নেয়া হয়। বডি ম্যাস ইনডেক্স হচ্ছে, শিশুরা সু-স্বাস্থ্যবান, অতিরিক্ত ওজন নাকি স্থূলকায় তা নির্ধারণের বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি।
গবেষকরা বলছেন, ভাঙনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এমন পরিবারের সদস্যদের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবার দাবিকে সমর্থন করেছে তাদের গবেষণা। গবেণোয় বিচ্ছেদের পর শিশুদের কেন ওজন বাড়ে তার অর্থনৈতিক ও অন্যান্য কিছু কারণ ও পরামর্শ উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হচ্ছে-
>> আলাদা হওয়ার পরিবারে ফলমূল এবং শাক-সবজির জন্য বরাদ্দ কম থাকে
>> বাবা-মায়েরা পুষ্টিকর খাবার রান্নার চেয়ে অর্থ উপার্জনে বেশি সময় ব্যয় করেন
>> খেলাধুলাসহ পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে খরচ কমানো
>> শিশুদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলায় বাবা-মা উদাসীন থাকেন
>>আবেগ-প্রবণতার কারণে বাবা-মায়েরা শিশুদের বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়ান এবং
>> একই কারণে এসব পরিবারের শিশুরা চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খায়।
গবেষকরা বলেন, বিচ্ছেদের পর সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যায়। তারা জানান, বিচ্ছেদের পরপরই শিশুদের যাতে ওজন বেড়ে না যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রতিবেদনে তারা লিখেছেন, শুরুতেই পদক্ষেপ নিলে ওজন বৃদ্ধি প্রতিরোধ সম্ভব। তা না হলেও অন্তত ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায়। কারণ এই প্রক্রিয়া শিশুদের অস্বাস্থ্যকর স্থূলকায় হওয়ার দিকে ঠেলে দেয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: