ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী কারাগারে

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ২০ জুন ২০১৯

সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী কারাগারে

অনলাইন রিপোর্টার ॥ সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে দুদকের দায়ের করা একটি মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় অবৈধভাবে সরকারি জমি বিক্রি করে প্রায় ৪১ লাখ টাকা ক্ষতি করা সংক্রান্ত মামলায় আদালত এ আদেশ দেন। আজ বৃহস্পতিবার বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকারের আদালত এই নির্দেশ দেন। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়ার আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুদকের মামলায় লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। এই মামলায় আজ আদালতে জামিন নিতে গেলে আদালত তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীসহ দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অপর আসামি হলেন জমির ক্রেতা জাহানারা রশিদ। তিনি জামিনে আছেন। মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আদমদীঘিতে বিলুপ্ত একটি পাট ক্রয়কেন্দ্রের (রানীনগর পাট ক্রয়কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত) সম্পত্তি দরপত্র ছাড়াই গোপনে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেওয়া হয়। পাট ক্রয়কেন্দ্রের প্রায় আড়াই একর জমিসহ স্থাপনা ও যন্ত্রপাতির বর্তমান বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা। কিন্তু সরকারি ওই সম্পত্তি ২৪ লাখ টাকায় বগুড়া শহরের জাহানারা রশিদের কাছে বিক্রি করা হয়। আদমদীঘি ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘির দরিয়াপুর মৌজার ২ দশমিক ৩৮ একর জমির ওপর কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। এটি নওগাঁর রানীনগর উপজেলা সদরের পাশে অবস্থিত। কয়েক বছর ধরে ওই কেন্দ্রে পাট কেনা বন্ধ আছে। ওই জমির ওপর ছয় হাজার ৯৫৪ বর্গফুটের তিনটি টিনের গুদামঘর আছে। রয়েছে ১ হাজার ২০০ বর্গফুটের বারান্দা, ১ হাজার ৫৫০ বর্গফুটের ইটের তৈরি একটি দালান, হস্তচালিত একটি জুটপ্রেসার, চেয়ার, লোহার সিন্দুকসহ নানা ধরনের আসবাব ও শতাধিক মূল্যবান গাছ। দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারি এই জমি ইজারা নেওয়ার জন্য ২০১০ সালের ১১ মে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন জাহানারা রশিদ। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের আওতায় সরকারি জমি ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ইজারার টাকা পরিশোধ করেননি। মন্ত্রীর আত্মীয় হওয়ার কারণে জাহানারা জমি দখলে নিয়েছিলেন। ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে তিনি ওই জমি ক্রয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি সম্পত্তি বিক্রয়ের নীতিমালা ভঙ্গ করে উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়াই বিক্রি করেন। সরকারি মূল্যের ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার ২১ টাকা মূল্যের জমি বিক্রি করা হয় মাত্র ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৪ টাকায়। তৎকালীন মন্ত্রী এসব করেছেন একক ক্ষমতাবলে। নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে তিনি সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার ২১ টাকা ক্ষতি করেছেন। এতে দণ্ডবিধির ৪২০/১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তদন্তে এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
×