ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত টাইগারদের সংগ্রহ ১৩০/২ (২২ ওভার)

বাংলাদেশের টার্গেট ৩৮২

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ২১ জুন ২০১৯

 বাংলাদেশের টার্গেট ৩৮২

জিএম মোস্তফা ॥ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রানের পাহাড় গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের ২৬তম ম্যাচে র্নিধারিত ৫০ ওভার শেষে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ৩৮১ রানের বিশাল স্কোর গড়েছে বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এবারের আসরে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর ফলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩৮২ রান। নটিংহ্যামের ট্রেন্টব্রিজে টস জিতে এদিন প্রথমেই ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। দলীয় ১২১ রানে প্রথম সাফল্যের দেখা পায় বাংলাদেশ। রুবেল হোসেনের হাতে ক্যাচ বানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক এ্যারন ফিঞ্চকে সাজঘরে ফেরত পাঠান সৌম্য সরকার। আউট হওয়ার আগেই ক্যারিয়ারের ২৪তম অর্ধশতক তুলে নেন ফিঞ্চ। ৫১ বলে ৫ চার আর দুই ছক্কায় ৫৩ রান করেন অসি অধিনায়ক। ফিঞ্চ আউট হয়ে গেলেও বাংলাদেশের বোলারদের দাপটের সঙ্গে খেলে যান অস্ট্রেলিয়ার আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার। মাশরাফি-সাকিব-মুস্তাফিজদের দেখে শুনে খেলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১৬তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ২০১৯ বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় শতক। শুধু শতরান করেই কিন্তু থেমে যাননি ওয়ার্নার। সৌম্য সরকারের বলে রুবেলের হাতে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে খেলে যান ১৬৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। ১৪৭ বলে ওয়ার্নারের ইনিংসটি সাজানো ছিল চৌদ্দটি চার ও পাঁচটি ছক্কার সৌজন্যে ১১২.৯৩ গড়ে। অথচ ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই ওয়ার্নারকে ফিরতে হতো। মাশরাফির বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন সাব্বির। ওয়ার্নারের রান ছিল তখন মাত্র ১০। জীবন পাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়েই এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন ওয়ার্নার। তার আগে জেসন রয় এবং এ্যারন ফিঞ্চের ১৫৩ রানই ছিল ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। রয়ের সেঞ্চুরিটিও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। আর লঙ্কানদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন ফিঞ্চ। এদিন আরও একটি রেকর্ড গড়েন ওয়ার্নার। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন ছয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ১৫০ কিংবা তারও বেশি রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড গড়েন এই ওপেনার। বাংলাদেশের বিপক্ষে দুর্দান্ত এই ইনিংস খেলে এবারের আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও বনে যান ওয়ার্নার। টুর্নামেন্টের প্রথম ৬ ম্যাচ থেকে তার সংগ্রহ ৪৪৭ রান। বাংলাদেশের ইনিংস শুরুর আগ পর্যন্ত ৩৯৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওয়ার্নারেরই সতীর্থ এ্যারন ফিঞ্চ। সমান ৬ ম্যাচ থেকে তার সংগ্রহে ৩৯৬ রান। এরপরই রয়েছেন সাকিব আল হাসান (৩৮৪)। ওয়ার্নারকে এদিন দারুণভাবে সঙ্গ দেন উসমান খাজাও। আউট হওয়ার আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৯ রানের ঝলমলে এক ইনিংস উপহার দেন তিনি। সেই সঙ্গে ওয়ার্নারের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ১৯২ রানের জুটি। এবারের বিশ্বকাপে যা যে কোন দলের সেরা জুটি। খাজার উইকেটও নিজের করে নেন সৌম্য সরকার। তবে এবার তালুবন্দী করেন মুশফিকুর রহীম। ওয়ার্নার-ফিঞ্চ-খাজারা দেখে শুনে খেললেও ক্রিজে নেমেই ঝড় তুলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ১০ বলেই ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন তিনি। তবে ম্যাক্সওয়েলকে খুব বেশিদূর এগোতে দেয়নি বাংলাদেশ। দলীয় স্কোর যখন ৩৫২ ঠিক তখনই রান আউটে কাটা পড়েন হার্ড-হিটার এই তারকা ব্যাটসম্যান। এখানেও ঘুরে ফিরে আসছে সৌম্য সরকার আর রুবেল হুসেনের নাম। এবারও যে বোলার ছিলেন সৌম্য। তার ওভারেই রান আউট করেন রুবেল। যিনি সৌম্যের নেয়া প্রথম দুই উইকেটে ক্যাচ ধরেছিলেন। সাইফউদ্দিনের বদলি হিসেবে এদিন মাঠে নামানো হয় রুবেল হোসেনকে। বল হাতে এদিন রুবেল কিছু করতে না পারলেও ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত দুটি ক্যাচ ধরেন। পাশাপাশি একটি রান আউটও করেন এই পেসার। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ৪৯তম ওভারেই হানা দেয় বৃষ্টি। তবে খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তা। ২৫ মিনিট পর আবারও মাঠে নামে দুই দল। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ৩৮১ রানে গিয়ে থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। মার্কাস স্টোইনিস ১৭ আর ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন এ্যালেক্স ক্যারি। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এদিন নিষ্প্রভ ছিলেন শুধুই স্টিভেন স্মিথ। মাত্র ১ রান করেই এদিন মুস্তাফিজুর রহমানের এলবিডব্লিউর শিকার হন তিনি। বিশ্বকাপের প্রথম পাঁচ ম্যাচ থেকে ২ জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ২টি ম্যাচে হেরেছে টাইগাররা। এছাড়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়। মোট ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে রয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। সেমিফাইনালে ওঠার আশা জিইয়ে রাখতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ জেতাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের সফল বোলার সৌম্য। ৮ ওভার বল করে ৫৮ রানের বিনিময়ে অস্ট্রেলিয়ার মূল্যবান তিন উইকেট দখল করেন তিনি। ৯ ওভারে ৬৯ রান খরচ করে ১ উইকেট লাভ করেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাকিব, মাশরাফি, মিরাজ, রুবেলরা এদিন বল হাতে নিষ্প্রভ ছিলেন।
×