ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নাট্যোৎসবে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে ॥ ড. চঞ্চল সৈকত

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ২৫ জুন ২০১৯

নাট্যোৎসবে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে ॥ ড. চঞ্চল সৈকত

দেশের গুণী একজন নাট্যকর্মী নাট্যকার, নির্দেশক, মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং দক্ষ সংগঠক ড. চঞ্চল সৈকত। নাট্য সংগঠন নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বলের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। পাশাপাশি একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে কর্মরত। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় চলছে ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসব’। এই উৎসব এবং সংস্কৃতি অঙ্গনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। আইটিআই ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসব’ কেমন হলো? ড. চঞ্চল সৈকত : ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসব’ এর মাধ্যমে ঢাকার মঞ্চে একাধিক বিদেশী নাটক উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন দেশের নাট্যামোদী দর্শকরা। বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত এই উৎসবে সহযোগিতা করছে শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। উৎসবের সহ আয়োজক ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ। এ উৎসবে মঞ্চায়িত হচ্ছে ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের নাটক। উৎসবে সেমিনার এবং কর্মশালারও আয়োজন করা হয়েছে। আমি মনে করি এই উৎসবের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমাদের সংস্কৃতি বিশ্বের অন্য সংস্কৃতিকর্মীরা জানার সুযোগ পাচ্ছে। যা সংস্কৃতির ভাবাবেগকে ভীষণভাবে প্রবাহিত করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের শিল্পচর্চা স্বতস্ফুর্ত ও ক্লান্তিহীনভাবে এগিয়ে চলছে। থিয়েটারকে শেকরের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সম্পৃক্ত করছে। নিজের মৃত্তিকা থেকে থিয়েটারের মুল উপাদান খুজে নেয়াই এই উৎসবের মুল উদ্দেশ্য। নানা শ্রেনী পেশা ও ধর্ম বিশ্বাসের মানুষ যখন দর্শক সারিরে বসে থিয়েটার উপভোগ করেন। এতে যে ভাবাবেগটি তৈরি হয় তার ভাষাটি তৈরি হয় সার্বজনীন। যা এই উৎসবের মধ্য দিয়ে আবার পরিস্ফুটিত হয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশের থিয়েটার অনেক সুউচ্চ স্থানে অবস্থান করছে। এই উৎসবে বিদেশী শিল্পী অতিথিদের আবেগের বহি:প্রকাশ থেকেই তা অনুমেয়। বাংলাদেশ সরকারের কাছে থেকে আমরা আশ্বাস পেয়েছি যে এই উৎসব প্রতি দুই বছর পর পর অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশা করছি প্রতি দুই বছর পর এই রকম উৎসবে মাতবে আমাদের দেশের নাট্য ও সংস্কৃতিকর্মী। বিশ্বের নানা দেশের সংস্কৃতি কর্মীদের মিলনমেলায় মুখর হয়ে উঠবে আমাদের নাট্য তথা শিল্প অঙ্গন। মঞ্চ নাটকের দর্শক বাড়াতে এই ধরণে উদ্যোগ কতটা জরুরী বলে মনে করেন? ড. চঞ্চল সৈকত : অবশ্যই জরুরী। উৎসব যত বেশি করা যাবে দর্শকরা ততবেশি মঞ্চমুখী হবেন। তবে আপনাকে জানিয়ে রাখি মঞ্চ নাটকের দর্শক বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। শুধু ফেডারেশন নয় আমি মনে করি এজন্য নাট্য দলগুলোকেও ফেডারেশনের পাশাপাশি কাজ করে যেতে হবে। জোরালোভাবে বলতে চাই দর্শক সঙ্কট নিরসনে নিয়মিতভাবে মান সম্পন্ন নাটক মঞ্চস্থ করতে হবে। থিয়েটার নিয়ে আপনার বর্তমান ব্যস্ততা কেমন? ড. চঞ্চল সৈকত : আমার দল নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল আমার নির্দেশনায় ‘ব্রেন ওয়াশ’ নাটকের নিয়মিত প্রদর্শনী করছে। পাশাপাশী দলের অন্য একটি প্রযোজনা ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ নাটকে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে নিয়মিত অভিনয় করছি। দলের আগামী প্রযোজনার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে যার নির্দেশনার দায়িত্ব পালন করছি আমি। এছাড়া বর্তমানে আমি বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের আন্তর্জাতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। নির্দেশনা, রচনা নাকী অভিনয়, কোনটাতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন? ড. চঞ্চল সৈকত : অভিনয়, নির্দেশনা ও রচনা এই তিনটি বিষয়ের অভিজ্ঞতা আমার আছে। তিন রকম অভিজ্ঞতা মনে হলেও মূল বিষয়টি হলো নাটক করা। নাটক করতে গিয়ে সেটা অভিনয় হোক, রচনা হোক, নির্দেশনা হোক বা সাংগাঠনিক দায়িত্ব পালন হোক আমার মনে হয় আমি শিল্প সৃজনের সঙ্গে যুক্ত একজন নাট্যকর্মী। এখানে আসলে আলাদা করে ভাবার অবকাশ আমার মনে কখনও কাজ করেনি। মূল বিষয় যেটি কাজ করেছে তা হলো আমি থিয়েটার করছি। সৃজনশীল নাট্যকর্মী তৈরিতে মূল ভূমিকা কার? ড. চঞ্চল সৈকত : প্রসঙ্গটি আমি মোটেও এড়িয়ে যেতে চাই না। তবে শুধু এটুকু বলতে চাই আমাদের দেশে নাট্যচর্চা একটি পরম্পরা ব্যাপার। সিনিয়রদের মধ্য থেকেই এটা আসে। আমাদের সিনিয়রদের দেখে যেমন আমরা শিখেছি আমাদের জুনিয়ররাও তেমনি আমাদের দেখে শিখছে। এছাড়া বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের উদ্যোগে নিয়মিত লেকচার ওয়ার্কশপ, অভিনয় কর্মশালাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নতুন নতুন নাট্যকর্মী তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। -সাজু আহমেদ
×