ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ২৫ জুন ২০১৯

 স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে

প্রত্যেকেই একটা স্বপ্ন নিয়ে প্রায় বিশ বছরের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবনের ইতি টানে। কারও স্বপ্ন ভাল কোন কর্মক্ষেত্রে যোগদান করা, কারও স্বপ্ন নিজেকে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে উপস্থাপন করা। কেউ আবার পরাধীন না হয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পথে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এই লালিত স্বপ্ন পূরণের পথ অসংখ্য প্রতিবন্ধকতাযুক্ত। এই কঠিন-দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েই নিজেকে সফল হতে হবে। তীব্র প্রতিযোগিতাময় এই পৃথিবীতে অবিরাম সাধনা ও নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়েই সফলতার পথে হাঁটতে হবে। তবে এই সাধনা অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে হতে হবে, সঙ্গে কর্মদক্ষতা থাকাও গুরুত্বপূর্ণ। বিখ্যাত রম্য-অভিনেতা মিস্টার বিন নামে পরিচিত রোয়ান এটকিনসন বলেছেন, ‘To be Successful, you dont need a beautiful face, what you need is skillful mind and ability to perform. সফল হওয়ার কিছু নিয়ম ও দক্ষতা অর্জনের উপায় এখানে আলোকপাত করা হলো : লক্ষ্য নির্ধারণ : আপনার জন্য উপযুক্ত দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। আপনার কাজের ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট থাকুন ও কাজেরই ভাল দিকটিকে ভালবাসুন। দার্শনিক কনফুসিয়াস বলেছিলেন, Choose a job you love, and you will never have to work a day in your life. কাজ শুরু করার পূর্বে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন, তার জন্য নির্ধারিত সময় রাখুন এবং সেই সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। পরবর্তীতে কাজের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করুন। ব্যক্তিত্ব নিরূপণ : সফল হতে হলে নিজ ব্যক্তিত্ব যাচাই করা প্রয়োজন। এ জন্য এমবিটিআই নামের পরীক্ষা দিয়ে বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিগত দৃঢ়তা নিরূপণ করতে পারেন। আত্ম উন্নয়ন : আপনার ক্যারিয়ার এবং কাজের প্রতি মনোযোগী হতে মানসিক প্রশান্তি ও উন্নতি দুটিই প্রয়োজন। সকল নেতিবাচকতা, হতাশা, দুশ্চিন্তা সরিয়ে যতই সততার সঙ্গে কাজ করা যাবে, ততই নিজের সফলতা বা ক্যারিয়ার নিয়ে আত্মতৃপ্ত হওয়া যাবে। আমেরিকান সাংবাদিক, লেখক জার্মানি কেন্ট ইতিবাচকতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘Convince yourself everyday that you are worthy of a good life. Let go of stress, breathe. Stay positive, all is well.’ বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানো : আপনার সাধ্যের মধ্যে যে কোন বিষয়ে নিজের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা করুন। তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংক্রান্ত স্কিল বাড়ান এবং সময় ও আগ্রহ নিয়ে শিখুন। কোন ক্ষেত্রে দুর্বলতা থাকলে ধৈর্য নিয়ে তা কাটানোর চেষ্টা করুন। সামাজিক সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ : আমরা অল্প বয়স থেকেই স্বেচ্ছাসেবায় উৎসাহের সঙ্গে অংশ নিই। এটি ক্যারিয়ার গঠনের পথে বাঁধা না হয়ে বরং এই পথকে সুগম করে। সমাজসেবক কেবল কোন সম্প্রদায়কেই সহায়তা করে না, এটি আপনাকে মানুষের মতো বেড়ে উঠতে প্রেরণা দেয়। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে যা আপনাকে সামাজিক যোগাযোগ ক্ষেত্র তৈরিতে উৎসাহ প্রদান করে। চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি গ্রহণ করুন : চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলে আত্মবিশ্বাসের জন্ম হয়, যা আপনাকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও আপনার মাঝে নেতৃত্বের গুণাবলী তৈরিতে সাহায্য করে। কোন কাজকে কঠিন ভেবে এড়িয়ে যাবেন না, চ্যালেঞ্জ নিয়ে অব্যাহত চেষ্টা করলে আপনার যোগ্যতা প্রমাণিত হবেই। সময়ের সদ্ব্যবহার করুন : আমরা সর্বদাই সময়ের মূল্য নিয়ে জেনে আসছি, কিন্তু সময়কে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে ভুলে যাই। যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবে, সেই স্বাভাবিক নিয়মে এগিয়ে থাকবে। কার্যকরী লোকেরা তাদের সময়কে আরও কার্যকরীভাবে ব্যবহার করে নিশ্চিত করে যে তারা এমন কাজগুলোই করে যা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। ধৈর্যধারণ করা : ধৈর্যধারণ বা সহিষ্ণুতা শুধু একটি সদগুণ নয়, এটি একটি দক্ষতা যা আপনাকে প্রতিনিয়ত চর্চা করতে হবে। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন এ সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘He that can have Patience can have what he will. সময়ের সদ্ব্যবহারকারীরা কখনোই তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করার চেষ্টা করেন না। তারা প্রয়োজনীয় সময় নিয়ে যথাযথভাবে কাজ করতে পছন্দ করেন। অতীত থেকে শিক্ষা নেয়া : অতীতের ভুল বা রেকর্ড অন্যান্য দক্ষতাকে বজায় রাখতে সাহায্য করে যেমন- আত্ম-সচেতনতা, লক্ষ্য নির্ধারণ, ফোকাসড হওয়া, প্রতিনিধিত্ব করা ইত্যাদি। আইরিশ লেখক আব্রাহাম ব্রাম স্টোকার বলেছেন, ‘We learn from failure, not from success. ক্যারিয়ার- সেমিনারে অংশগ্রহণ : ক্যারিয়ার সম্পর্কিত জিজ্ঞাসা ও প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিভিন্ন সেমিনারে উপস্থিত থাকা জরুরী। প্রয়োজনে ট্রেনিং সেন্টারের শরণাপন্ন হতে হবে।
×