ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইজিবাইকের আইন লঙ্ঘনে বৃদ্ধি পাচ্ছে জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৯:৪৩, ২৫ জুন ২০১৯

 ইজিবাইকের আইন লঙ্ঘনে বৃদ্ধি পাচ্ছে জনদুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের নগরীতে পরিণত হয়েছে বরিশাল। ৫৮ বর্গ কিলোমিটার নগরীর সিংহভাগ সড়ক দখল করে আছে তিন চাকার ইজিবাইক। এ সব যান চালকদের নেই লাইসেন্স কিংবা ইজিবাইক পরিচালনার কোন অভিজ্ঞতা। ফলে আইন লঙ্ঘন করে অনভিজ্ঞ চালকরা ব্যস্ততম সড়কের মাঝখানে গাড়ি রেখেই যত্রতত্রভাবে যাত্রী ওঠানামা করানোর কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজটের পাশাপাশি ছোট-বড় দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। সূত্রমতে, আইন লঙ্ঘন করে স্থানীয়ভাবেই তৈরি হচ্ছে এ সব অটোরিক্সা। যা বিক্রি করা হচ্ছে চড়ামূল্যে। দিনে দিনে অটোরিক্সা শৃঙ্খলার বাইরে চলে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ। বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনে তালিকাভুক্ত অটোরিক্সার সংখ্যা দুই হাজার ৬১০টি। তবে বাস্তবে চলাচলকারী অটোরিক্সার পরিসংখ্যান জানা নেই নগর ভবন কিংবা নগর পুলিশের। তাদের ধারণা বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে নগরীতে চলাচলকারী অটোরিক্সার সংখ্যা পাঁচ হাজারেরও অধিক হবে। যা দিন-রাত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গোটা নগরী। জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশন থেকে দেয়া দুই হাজার ৬১০টি অটোরিক্সার টোকেন ব্যবহার করে নগরীতে দ্বিগুণ অটোরিক্সা চলাচল করছে। কোনটিতে অবৈধভাবে ভুয়া টোকেন ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার কিছু অটোরিক্সার চালক কৌশলে টোকেট হারানোর ভুয়া তথ্য দিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে সেই কপি গাড়িতে লাগিয়ে প্রকাশ্যেই চলাচল করছে। জানা গেছে, নগরীর রূপাতলী থেকে কালিজিরা, সাগরদী বাজার থেকে টিয়াখালী সড়ক, নবগ্রাম রোড, বারৈজ্যার হাট, কাউনিয়া মরকখোলার পোল থেকে কাগাশুরা এবং হাটখোলা সড়কে চলাচল করছে এসব অবৈধ অটোরিক্সাগুলো। জানা গেছে, উচ্চ আদালতের দায়ের হওয়া একটি রীট এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বিশেষ করে নগরীর সদর রোড এলাকায় হলুদ অটোরিক্সা প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। বর্তমানে রাজনৈতিক প্রভাবে ওইসব হলুদ অটোরিক্সাগুলো পুনরায় সদররোডে অবাধে চলাচল করায় নগরীর প্রাণকেন্দ্রে (সদর রোড, ফজলুল হক এভিনিউসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে) যানজট লেগেই রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীতে যেসব অটোরিক্সা চলাচল করছে তার সিংহভাগ চালকের নেই লাইসেন্স বা কোন প্রকার অভিজ্ঞতা। সিটি কর্পোরেশন এবং ট্রাফিক আইন অনুযায়ী কোন শিশু, কিশোর অটোরিক্সার চালক হতে পারবে না। লাইসেন্সধারী চালককে অবশ্যই প্যান্ট পরে নিতে হবে। চালকের দুই পাশে কোন যাত্রী বহন করতে পারবে না। আইনে এমনটি থাকলে বাস্তবে তার কোন অস্থিত্ব পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ব্যস্ততম সড়কের পাশে যত্রতত্রভাবে অটোরিক্সা থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা এবং সড়ক আটকে স্ট্যান্ড বানিয়ে মানুষের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। একারণে যানজট ও দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। সুশীল সমাজের মতে, শুধুমাত্র চলাচলেই সীমাবদ্ধ নয়। সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাবে থামানো যাচ্ছে না অটোরিক্সা নির্মাণের কাজ। নগরীর ভাটারখাল, কেডিসি, বান্দ রোড এবং শিশু পার্ক কলোনিসহ বিভিন্নস্থানের ওয়ার্কশপে তৈরি হচ্ছে অটোরিক্সা। যা চড়ামূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকা আয় করলেও সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। প্রকাশ্যে এমন আইন লঙ্ঘন করা হলেও রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
×