ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ির তথ্য চায় হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ১০:১৬, ২৫ জুন ২০১৯

  ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ির তথ্য চায় হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফিটনেসবিহীন গাড়ি, রেজিস্ট্রেশন নবায়ন ছাড়া গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ছাড়া চালকের বিষয়ে বিআরটিএর কাছে জেলা ভিত্তিক গাড়ির নম্বর ও ড্রাইভারের নামসহ তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়া রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ি ও লাইসেন্স ছাড়া ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, মনিটরিং করা হচ্ছে কি না সেই বিষয়েও জানতে চেয়েছে আদালত। আগামী ২৩ জুলাই এই তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ সোমবার এই নির্দেশনা দেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন ফিরোজী। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। এই বিষয়ে আদালত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলামের মতামত নেন। এদিকে দেশের সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে না পারায় বিআরটিএর প্রতি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। এ তথ্য দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই রাব্বানীকে সোমবার তলব করেছিল হাইকোর্ট। সোমবার বিআরটিএর এই পরিচালক আদালতে হাজির হন। শুনানিতে বিআরটিএর পরিচালক আদালতকে জানান, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সারাদেশে লাইসেন্স নবায়ন করেনি ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯ গাড়ি। ঢাকায় এ সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩০৮টি। কিন্তু তিনি ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। পরে লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা গাড়ি ও চালকের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। বিআরটিএকে আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। দেশের সড়কের বেহাল দশা সম্পর্কে আদালত বলেছে, আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি কি দেশের সড়কে বেহাল দশার জন্য। সিঙ্গাপুরের দিকে তাকান। আমাদের কাছাকাছি সময়ে স্বাধীনতা অর্জন করার পরও তারা কত উন্নতি করেছে। সিঙ্গাপুরে কি বাংলাদেশের মতো দুর্ঘটনা ঘটে? বাংলাদেশে কেন এত দুর্ঘটনা ঘটছে? আমেরিকায় কি এমন দুর্ঘটনা ঘটছে? ইংল্যান্ডে কি ঘটছে? বিআরটিএ ছাড়াও দেশে পুলিশ আছে, পুলিশের নাকের ডগার ওপর দিয়ে এসব অনিয়ম হচ্ছে। বিআরটিএর পরিচালকের উদ্দেশে আদালত বলে, অফিসে বসে বসে মিটিং আর শুধু কি চা খাইলে হবে? দেশপ্রেম থাকতে হবে। বিআরটিএ কি করে? আমরা কেন ডাকব, তাদের (বিআরটিএ) ডাকতে হবে কেন? তারা (বিদেশীরা) পারছে, আমরা পারছি না কেন? আদালত আরও বলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে প্রায় ৪৮ বৎসর। দেশ এখনও শৃঙ্খলার মধ্যে আসছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, সরকারী চাকরিদের বেতন-ভাতা দ্বিগুণ করা হয়েছে, বাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ করা হয়েছে, গাড়ি পেয়েছেন তারপরও করাপশন কমছে না, এখনও আদালতকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে কেন? আমাদের সকলের জবাবদিহিতা থাকতে হবে। তিনি এই বিষয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও সিঙ্গাপুরের উদাহরণও দেন। এই বিষয়ে আদালত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলামের মতামত নেন।
×