ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর পিট সিগারের প্রতি ভালবাসা

প্রকাশিত: ১০:১৭, ২৫ জুন ২০১৯

 প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর পিট সিগারের প্রতি ভালবাসা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুরের আশ্রয়ে প্রতিবাদী এক শিল্পীর নাম পিটার। তার প্রতিবাদের ভাষা ছিল সঙ্গীত। অন্যায়-অবিচার কিংবা শোষণের বিরুদ্ধে বন্দুকের বদলে গর্জে উঠেছে তার গান। মার্কিন মুলুকের মেঠো সুরকে সঙ্গী করে ঘুরে বেড়িয়েছেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। গত তেসরা মে ছিল এই নিপীড়িত মানুষের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের জন্মশতবার্ষিকী। এ উপলক্ষে সোমবার তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানায় ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী। আয়োজন করে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সে আয়োজনে ‘পিট সিগার সম্মাননা পদক’ প্রদান করা হয় পশ্চিমবঙ্গের লোক ও গণসঙ্গীতশিল্পী শুভেন্দু মাইতিকে। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন লেখক-গবেষক মফিদুল হক। ঋষিজ সভাপতি ফকির আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন গণসঙ্গীত দলের শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘জাগো জাগো সর্বহারা’ ও পিট সিগারের অমর গান ‘উই সেল ওভারকাম’ গান দুটি। এর পর অনুষ্ঠানস্থলে রাখা পিট সিগারের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অতিথিরা। রাশেদ খান মেনন বলেন, মানুষের অধিকারের গান গান গেয়েছেন। তার গানের কথাগুলো উচ্চকিত ছিল না। সাধারণ কথার গান দিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে বার্তা দিয়েছেন। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পিট সিগার সবসময়ের অনুপ্রেরণা। তিনি সারা বিশ্বের জন্য যা রেখে গেছেন, তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে রাখতে হবে। শুভেন্দু মাইতি বলেন, ১৯৯৬ সালে ভারতে এলো তার সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছিল। এটা আমার জীবনের জন্য পুণ্য। তিনি আমাকে শিখিয়েছেন, গণসঙ্গীত হলো লোকসঙ্গীতের আধুনিকতর রূপ। মফিদুল হক বলেন, পিট সিগার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিলেও, তিনি ছিলেন যুদ্ধবিরোধী। গানকে জীবনের ভেতরে নেয়া যায়; আবার জীবনকে গানের সঙ্গে মেলানো যায়- তিনি সেটি দেখিয়েছেন। ‘উই সেল ওভারকাম’ গানটি চার্চের গান। সে গানটিকে তিনি সংগ্রামী গান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। গোলাম কুদ্দুছ বলেন, গানের মাধ্যমে তিনি যে দাবির কথা বলেছেন, তার দাবিগুলো আজও প্রাসঙ্গিক। লোকশিল্পী হিসেবে মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে কত বড় যে ভূমিকা রাখা যায়, তা তার থেকে শিক্ষা নেয়া যায়। ফকির আলমগীর বলেন, পিট সিগার বিশ্বের সব নির্যাতিত মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে এবং তাদের মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে চিরকাল গান করে গেছেন। তার দেখানো পথ ধরে আমরা আজও মেহনতি মানুষের পক্ষে আওয়াজ তুলে যাচ্ছি। অনুষ্ঠানে একক কণ্ঠে সম্মাননাপ্রাপ্ত শিল্পী শুভেন্দু মাইতি গেয়ে শোনান সং অব সলিডারিটির বাংলা অনুবাদ ‘স্বাধীনতা আমাদের জন্মগত অধিকার’। ফকির আলমগীর গেয়ে শোনান ‘নাম তার জন হেনরি’, ‘থ্রো দ্যা উইন্টারস’, ‘বাংলার কমরেড বন্ধু’ ও ‘ওয়েলকাম, পিট সিগার’।
×