ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মাতৃভাষা সংরক্ষণে পদক দেবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ২৫ জুন ২০১৯

  মাতৃভাষা সংরক্ষণে পদক  দেবে বাংলাদেশ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মাতৃভাষা সংরক্ষণ-বিকাশে বিশেষ অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক পদক দেবে বাংলাদেশ। এজন্য ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক নীতিমালা, ২০১৯’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পাশাপাশি ‘বাংলাদেশে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১৯’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি) জনপ্রশাসন নিয়ে যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটি ‘ঢালাও’ হিসেবে মন্তব্য করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি ওরকম নয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ নামে নতুন পদক চালু করা হচ্ছে। প্রতি দুই বছরে এই পদক দেয়া হবে। জাতীয় ক্ষেত্রে দুটি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুটি পদক দেয়া হবে। পদকের মূল্যমান ধরা হয়েছে জাতীয় ক্ষেত্রে চার লাখ টাকা, আর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার ডলার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার, প্রসারের জন্য এই পুরস্কার দেয়া হবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালকের নেতৃত্বে একটি বাছাই কমিটি থাকবে। মনোনয়ন কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী। একুশে ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে এই পুরস্কার দেয়া হবে। বিকেএসপি আইন চূড়ান্ত অনুমোদন ॥ ‘বাংলাদেশে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১৯’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৮৩ সালের অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করা হচ্ছে। খসড়া বাংলাদেশে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) আইন অনুযায়ী বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ সদস্য উপস্থিত থাকলে কোরাম হবে, বছরে দুইবার সভা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীর দায়িত্বে যিনি থাকবেন তিনি হবেন বোর্ডের চেয়ারম্যান। ২০ সদস্যের পরিষদ হবে। সদস্যদের মেয়াদ তিন বছর। এছাড়া বাংলাদেশ ও স্পেনের মধ্যে স্বাক্ষরের জন্য উপস্থাপিত সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তির খসড়া অনুমোদন সংক্রান্ত ইতিপূর্বে গৃহীত মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। শফিউল আলম বলেন, ২০১৪ সালে একটি সিদ্ধান্ত হয় স্পেন সরকারের সঙ্গে এসব ক্ষেত্রে চুক্তি করতে চায়। পরে স্পেন জানায়, তারা শুধু সংস্কৃতি বিষয়ে চুক্তি করতে চান, শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক বিষয়ে চুক্তি করবেন না। সংস্কৃতি বিষয়ের চুক্তিটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। টিআইবির প্রতিবেদন সঠিক নয় ॥ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি) জনপ্রশাসন নিয়ে যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটি ‘ঢালাও’ হিসেবে মন্তব্য করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি ওরকম নয়। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ কথা বলেন। রবিবার ‘জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচার : নীতি ও চর্চা’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। সেখানে তারা বলেছেন, জনপ্রশাসনে পদায়ন ও পদোন্নতিতে রাজনৈতিক বিষয় প্রাধান্য পাচ্ছে, মেধা উপেক্ষিত হচ্ছে। এমনকি বিধিমালায় না থাকলেও পদোন্নতিতে গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘রিপোর্টটি আমি দেখিনি এখনও। আমাদের হ্যান্ডওভার করেনি। নিউজে যেটুকু আসছে, আপনারা যেমন জানেন আমিও জানি। তবে তারা যেটা ঢালাওভাবে বলেছেন, (পরিস্থিতি) ওরকম নয়। আমাদের কাজগুলো ওরকম নয়। টিআইবি বলেছে, বিধিবিধান অনুযায়ী চাকরিতে যোগ দেয়ার জন্য কোন কর্মকর্তাকে সম্পদের হিসাব দিতে হয়। এরপর প্রতি ৫ বছর পর পর এই তথ্য আপডেট হবে। এটা করা হচ্ছে না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, এটা আমরা দিয়েছি, অনেক দিন চাওয়া হয়নি। চাওয়া হলে দিতে হবে। এটা নিয়ম। এটা জনপ্রশাসন হিসাব রাখে। ৫ বছর পর চাইবে দিবে, এটাই নিয়ম। না চাইলে দেয়ার কথা নয়। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়েও আপত্তি তুলেছে টিআইবি- এ বিষয়ে তিনি বলেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ মনে হয় এই সময়ে সবচেয়ে কম। আমরা অল্প কয়েকজন আছি। খুবই কম, মিনিমাম নাম্বার। টিআইবি আরও বলেছে, প্রশাসনে ওপরের দিকে বেশি পদোন্নতি দেয়া হয়, কিন্তু নিচের পদগুলো ফাঁকা থাকে- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমাদের রিক্রুটমেন্ট সেই পরিমাণ (শূন্য পদ) ফিলাপ করতে পারছে না। একজন সহকারী কমিশনার ৫ বছরের মাথায় ইউএনও হন। মাঝখানের পদগুলো ফাঁকা থেকে যায়। এ সমস্যা। তার যোগ্যতা হয় সে ইউএনও হন, সে তখন ছোট পদে কাজ করবে কেন?
×