ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা প্রত্যর্পণে আন্তর্জাতিক তদারকি চান মাহাথির

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ২৫ জুন ২০১৯

  রোহিঙ্গা প্রত্যর্পণে আন্তর্জাতিক তদারকি চান মাহাথির

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তদারকিতে হওয়া উচিত। যাতে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরার পর শাস্তির মুখোমুখি না হয়। রবিবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার সংবাদ মাধ্যম মালয়মেল। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। জাতিগত নিধনের ভয়াবহ বাস্তবতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশটি বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও জাতিসংঘের হিসাবে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ এখনও সেখানে থেকে গেছে। দ্য গার্ডিয়ানের হিসাব অনুযায়ী, রাখাইনে থাকা অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। ২০১২ সালে রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর বাস্ত্যুচ্যুত হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য স্থাপন করা হয় আইডিপি ক্যাম্প। তখন থেকেই এই ক্যাম্পে সহায়তা দিয়ে আসছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গা ও কামান জনগোষ্ঠীর প্রায় এক লাখ ২৮ হাজার সদস্য এসব ক্যাম্পে বসবাস করে। তবে তাদের চলাফেরায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রেখেছে মিয়ানমার সরকার। ২০১৭ সালে এসব ক্যাম্প বন্ধ করার অঙ্গীকার করে মিয়ানমার সরকার। তবে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি। উল্টো অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতদের পরিস্থিতি দিনকে দিন আরও অবনতির দিকে গেছে। জাতিসংঘ এই সামরিক অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে আখ্যা দেয়। মাহাথির জানান, ৩৪তম আসিয়ান সম্মেলনে তিনি রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছেন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেনারেল আয়ুথ চ্যান ও-চা। মাহাথির বলেন, আমি রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে কথা বলেছি। রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যর্পণ প্রতিবেদনে অভিবাসী ও শরণার্থীদের প্রতিক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। শরণার্থীদের মত অবশ্যই বিবেচনায় নেয়া উচিত। কারণ তারা রাখাইনে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে আতঙ্কিত অবস্থার মধ্যে আছে। মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি রোহিঙ্গারা যখন মিয়ানমার ফিরে যাবে সেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তদারকি করবে এবং রাখাইন ও মিয়ানমারে যাতে তারা শাস্তির মুখোমুখি না হয় তা নিশ্চিত করবে। মিয়ানমারের নেত্রী আউং সান সুচির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহাথির বলেন, তিনি আমার পাশে বসে ছিলেন। বর্ণানুক্রমিকভাবে তিনি আমার পাশে বসে ছিলেন এবং এমনকি খেয়েছেন। তবে সম্মেলনে সুচির সঙ্গে কোন ব্যক্তিগত কথোপকথন হয়েছে কি না তা জানা যায়নি। মাহাথির বলেন, রাখাইন রাজ্য প্রসঙ্গে একমাত্র কথা বলেছে ইন্দোনেশিয়া। এই একটি বিষয় নিয়েই দেশটি কথা বলেছে। আমি অবশ্য সবসময়ের মতোই অনেক প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছি। খবর ইয়াহু নিউজের।
×