ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক কার রেসিংয়ে বাংলাদেশের প্রথম ঐতিহাসিক সাফল্য অভিকের

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৭ জুন ২০১৯

  আন্তর্জাতিক কার রেসিংয়ে বাংলাদেশের প্রথম ঐতিহাসিক সাফল্য অভিকের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অভিক আনোয়ার বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছেন প্রথম ও ঐতিহাসিক এক সাফল্য। ভারতে অনুষ্ঠিত ‘ইন্ডিয়ান টুরিং কার ন্যাশনাল চ্যম্পিয়নশিপ’-এ সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করেন (লাভ করেন উইনিং ট্রফি ও ৫০ হাজার ভারতীয় রুপি)। এটাই তার প্রথম আন্তর্জাতিক সাফল্য। সেই সঙ্গে বাংলাদেশেরও। এই প্রতিভাবান রেসার বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত একমাত্র মোটর স্পোর্টস প্রতিযোগিতা ‘র্যালি ক্রস’-এ ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে হ্যাটট্রিক বিজয় অর্জন করেন। ২০১৭ সাল থেকেই তিনি ভারতে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জেতার চেষ্টা করে আসছিলেন। দুবারই বিফল হন। এবার তার সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। করেছেন বাজিমাত। একেই হয়তো বলে ‘দান দান, তিন দান!’ মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরের ছেলে, বর্তমানে ঢাকার বনানী নিবাসী ও গাড়ি ব্যবসায়ী অভিক কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। জনকণ্ঠের সঙ্গে একান্ত আলাপনে তিনি জানান, ‘তৃতীয় বারের চেষ্টায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ভীষণ ভাল লাগছে। এতে করে আগামীতে আরও সাফল্য পাবার জন্য আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেল। সবচেয়ে বড় ব্যাপার- বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে আনতে পেরেছি। আশা করি আমাকে দেখে এদেশের নতুন প্রজন্মের কার রেসাররাও অনুপ্রাণিত হবে এবং আমার মতো আরও আন্তর্জাতিক সাফল্য বয়ে আনবে।’ শিরোপা জেতার পরদিনই দেশে ফেরেন ৩২ বছর বয়সী অভিক। জানান, ‘নিজ পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই আমার সাফল্যে দারুণ রোমাঞ্চিত ও গর্বিত। আমার সাফল্যে আমার বন্ধু ক্রিকেটার তামিম ইকবাল নিজের ফেসবুকে আমাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছে। অভিকের পুরো পরিবারই হচ্ছে ক্রীড়া এবং সংস্কৃতি অঙ্গনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বড় ভাই তৌফিক আনোয়ার-ও কার রেসার। ঘরোয়া কার রেসিংয়ে দু’বারের রানারআপ। নৃত্যশিল্পী ছোট বোন তাহমিনা আনোয়ার আনিকা নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় ৩ বার ও জাতীয় প্রতিযোগিতায় ৭ বারের চ্যাম্পিয়ন। অভিনেত্রী জয়া আহসান অভিকের স্ত্রী রিমিতা ফরিদের কাজিন। রিমিতা একটি জাতীয় সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসক, যাকে এ বছরই বিয়ে করেন অভিক। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে কার রেসিংয়ে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা ওড়ান ওই বছরের ১৯ জুলাই ভারতের মাটিতে, মাহফুজুর রহমান তুষার। তিনি সেবার অংশ নেন ‘জিকে টায়ার কার রেসিং কম্পিটিশন ফর্মুলা এলজিবি ফোর রাউন্ড ওয়ান এ্যান্ড টু’ প্রতিযোগিতায়। ২২ প্রতিযোগীর মধ্যে তিনি হন ১১তম। তুষারের দেখানো পথ ধরে এবার অভিক অংশ নিয়ে মুখ উজ্জ্বল করলেন বাংলাদেশের। এনে দিলেন গর্ব করার মতো চোখ ধাঁধানো সাফল্য। অবশ্য তুষারের ইভেন্ট ছিল ভিন্ন। তিনি খেলেন ফর্মুলা কার নিয়ে। আর অভিক খেলেন র্যালি কার নিয়ে। জনকন্ঠকে তুষার বলেন, ‘প্রথম বাংলাদেশী কার রেসার হিসেবে আমি বিদেশের মাটিতে প্রথম অংশ নিয়েছিলাম। আমাকে দেখে পরবর্তীতে আরও তিনজন কার রেসিংয়ে আসতে উৎসাহী হন। তাদেরই একজন অভিক প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশেকে সাফল্য এনে দিয়েছেন। এজন্য তাকে উষ্ণ অভিনন্দন। আশা করি আগামীতেও তিনি এভাবে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করবেন।’
×