ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘পাসওয়ার্ড’ ছবির গান নকলের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ৪ জুলাই ২০১৯

‘পাসওয়ার্ড’ ছবির গান নকলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিনেমা নকলের অভিযোগের সমালোচনার রেশ এখনও কাটেনি। ‘পাসওয়ার্ড’র টিম ছবিটিকে সফল দাবি করে সব সমালোচনাই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। নকল নিয়ে প্রশ্ন এলেই তার ছবি সফল তাই সবাই হিংসা করছে- এমন মুখস্থ উত্তর দিয়ে তৃপ্তি খুঁজে নিচ্ছেন। গল্প, লোকেশন, দৃশ্য, নায়কের স্টাইল ও লুক, ছবির নাম নকলের পর এবার ছবিটির বিরুদ্ধে উঠেছে গানের সুর নকলের অভিযোগ। আর এ অভিযোগ করলেন দেশের জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন। শনিবার বিকেলে শওকত আলী ইমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে এই অভিযোগ আনেন। সেখানে তিনি লেখেন- শেষ পর্যন্ত আমার গান ভারত থেকে নকল করিয়ে এনে আবার আমার দেশেই রিলিজ করলেন কেন এই প্রশ্নের উত্তর আমি শওকত আলী ইমন একটু জানতে চাই। একটু অনুমতি নিয়ে নিলে খুশি হতাম। চলতি বছরের ১৮ মার্চ ‘ইমন শওকত’ ইউটিউবে রোজিনা খানের কণ্ঠে ও মিজানের কথায় ‘চন্দ্র তারা’ শীর্ষক একটি গান প্রকাশ হয়। ওই গানের সুরের সঙ্গে ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিতে কোনালের কণ্ঠে ‘আগুন লাগাইলো’ গানটির সুরের মিল খুঁজে পেয়েছেন ইমন। সেজন্যই তিনি নকলের অভিযোগ এনেছেন বলে জানান। এদিকে ‘পাসওয়ার্ড’ ছবির ‘আগুন লাগাইলো’ গানের সুর নকলের অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে ছবির পরিচালক মালেক আফসারী বলেন, আমার ছবিটি সফল। এখন অনেক কথাই হবে। তাছাড়া আমি শওকত আলী ইমনের গানটি শুনিনি। সেটা শুনলে বলতে পারব এ বিষয়ে। গানটি শোনার পর মালেক আফসারী গানটি নকল বলে স্বীকার করেন। তবে এই নকল গানের জন্য তিনি কোনভাবেই দায়ী নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সেইসঙ্গে দেশের গানের সুর চুরি করে ভারতের যে সঙ্গীত পরিচালক ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিকে সমালোচনার মুখে ফেলল সেই সঙ্গীত পরিচালক লিংকনকেও অভিযুক্ত করছেন না তিনি। তার ভাষ্য, ছবি সফল হয়ে গেছে তাকে নিয়ে এখন টানাটানি করে লাভ নেই। ছবির সাফল্যটাকে সবাই উপভোগ করুন। দুটি গানের সুরে মিল আছে দাবি করে এই নির্মাতা বলেন, আমি কিছুক্ষণ আগে গানটি শুনলাম। শওকত আলী ইমনের গানের সুরের সঙ্গে এই গানটির মিল আছে। যে গানটির সুর করেছে সেই এর জবাব দিতে পারবে তিনি কেন এমনটি করলেন। আমি আর কি বলব। তাছাড়া গানটি প্রকাশ হয়েছিল ছবি মুক্তিরও আগে। এতদিন পর্যন্ত শওকত আলী ইমন জানতেন না যে তার গান চুরি হয়েছে। তিনি নিজেই যেহেতু সেটা টের পেলেন এতদিন পর আমি তো গানের বাইরের মানুষ, আমি কিভাবে জানব যে আমার গানের সঙ্গীত পরিচালক কোথায় থেকে সেটি নকল করেছেন। আমি জানতে চাইও না। যেহেতু সিনেমাটি সুপারহিট হয়েছে তাই বিষয়টি নিয়ে কথা উঠেছে। এই ছবি ও ছবির গান হিট না হলে কেউ এই গান নিয়ে কোন কথাই বলত না। আমার ছবিটি হিট করেছে, আমি এই আনন্দের মধ্যে আর বাম হাত ঢুকাতে চাই না। আপনার গানটির সুর সঙ্গীত করেছেন একজন ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক। আপনার দেশের একজন পরিচালকের গান নকল করে আপনাকে ও আপনার প্রযোজককে ঠকালো, আপনার কি কোন অভিযোগ নেই তাকে নিয়ে? উত্তরে মালেক আফসারী বলেন, না, তার প্রতিও আমার কোন অভিযোগ নেই। যেহেতু ছবি হিট করেছে তাই তাকে নিয়েও আমার কোন আক্ষেপ নেই। যে কোনভাবেই হোক, ছবিটি সাকসেসফুল হয়েছে, ছবিটি দিয়ে বন্ধ হলের তালা খুলেছে, আয় হয়েছে, অনেকের মুখে হাসি ফুটেছে। এ ছবি বাংলা সিনেমার জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট। এটাকে নকলের দায়ে, অমুক, তমুকের দায়ে আমি দূষিত করতে চাই না। ছবিটি সফল হয়েছে দাবি করলেও কত টাকা আয় করেছে তার সুনির্দিষ্ট কোন হিসাব এই পরিচালক দিতে পারেননি। এদিকে দেশের সঙ্গীত পরিচালকের গানের সুর নকল করে ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিতে গান ব্যবহার করার জন্য প্রযোজক শাকিব খানও সমালোচনার মুখে পড়েছেন। সঙ্গীতাঙ্গনের অনেকেই দেশের প্রযোজক ও পরিচালকের এমন দায়হীন কর্মকান্ডে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা সিনেমায় এই নকলের নষ্ট রাজত্ব দমানোর জন্য সেন্সরবোর্ড তথা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
×