ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে রাস্তা থেকে তুলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ॥ পলাতক ধর্ষক

প্রকাশিত: ০৯:২২, ৫ জুলাই ২০১৯

ঠাকুরগাঁওয়ে রাস্তা থেকে তুলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ॥ পলাতক ধর্ষক

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ স্কুলে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ীতে ফেরার সময় ১ম শ্রেনীর এক স্কুলছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর ওই স্কুলছাত্রীকে মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় স্কুলছাত্রীর বাড়ীতে ফেলে রেখে গেছে ধর্ষক সুজন আলী (২০) ও সহযোগিরা এবং ঘটনাটি প্রকাশ করলে মেরে ফেলবে বলে ভয়ভীতিও দেখিয়েছে তারা। অজ্ঞান অবস্থায় স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছেন তার পরিবারের লোকজন। মেয়েটি বর্তমানে সেখানে অসুস্থ্য অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এ ঘটনায় ধর্ষক সুজন আলীকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়ে ধর্ষকের মা জরিমন বেগম (৪৭) ও বোন ইয়াসমিন আক্তারকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ। স্কুলছাত্রীর ভাই জানান, বৃহস্পতিবার কালমেঘ আর আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে দশম শ্রেণির দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ীতে ফেরার সময় রাস্তা থেকে মুখ চেপে ধরে নিয়ে যায় সুজন আলী ও তার পরিবারের লোকজন। বাড়ীতে ধর্ষণের সময় চিৎকার করলে স্কুলছাত্রীকে বেধরক মারপিট করে তারা। এরপর অজ্ঞান হয়ে পড়লে মোটরসাইকেলে করে বাড়ীতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে আসে স্কুলছাত্রীকে। স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, গত ৩ মাস ধরে আমার নাবালিকা মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছিল সুজন আলী। বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে সুজন। ধর্ষক সুজন আলী ও তার পরিবারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে স্কুলছাত্রীর মা জানান, মেয়েকে ধর্ষণের পর বাড়ীতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে গেছে। আবার শাসিয়ে গেছে বিষয়টি নিয়ে যেন আইনের আশ্রয় না গ্রহণ করি। কোথায় বাস করছি আমরা। দেশে কি আইন বলতে কিছু আছে? বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি মোসাব্বেরুল হক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমজাদ হোসেন জানান, স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় সুজন আলী, তার বাবা ইসলাম উদ্দীন, মা জরিমন বেগম, বোন ইয়াসমিন আক্তার এবং সহযোগি প্রতিবেশী ফরহাদ হোসেনকে আসামী করে মোট ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ওই স্কুলছাত্রীর বাবা। পুলিশ ধর্ষকের মা ও বোনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া ধর্ষক ও বাকী আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপর অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আশা করছি খুব শ্রীঘ্রই ধর্ষক আটক হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে গত ১৮ জুন গৃহবধুকে ধর্ষণের পর দুই বন্ধু সেই ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অপরাধে ধর্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। পুলিশ সাদ্দাম হোসেনকে আটক করলেও অপর বন্ধু এখনও পলাতক রয়েছে। গত ২১ জন একই উপজেলায় ষষ্ঠ শ্রেনির ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে রুহুল আমিন (১৮) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামরা হলেও এখন পর্যন্ত ওই যুবক গ্রেফতার হয়নি। হঠাৎ করেই এলাকায় ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা জায়গায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন ধর্ষণ মামলাগুলোর দ্রুত বিচার কার্যক্রম এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবেই এ ধরণের ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
×