ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হত্যা রহস্যের দ্বার খুলে দিল একটি গামছা

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ১০ জুলাই ২০১৯

হত্যা রহস্যের দ্বার খুলে দিল একটি গামছা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ একটি গামছার সূত্র ধরে একটি ক্লুলেস হত্যাকান্ডের মোটিভ উদ্ধারসহ হত্যাকারীদের চিহ্নিত করেছে পুলিশ। গ্রেফতারও করেছে আসামীদের। সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের চন্দ্রাবতী খিলা গ্রামে ঘটেছে এ হত্যার ঘটনা। জানা গেছে, চন্দ্রাবতী খিলা গ্রামের অটোরিক্সা চালক আব্দুল ছোবান (৫০) গত শনিবার রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন (রবিবার) বিকেলে পার্শ্ববর্তী উত্তর বিল সলঙ্গী গ্রামের একটি পরিত্যক্ত উঁচু ভিটায় মাটি চাপা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। কিন্তু প্রথমদিকে ওই হত্যাকান্ডের কোন ক্লু খুঁজে পাচ্ছিল না নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশ। এমনকি তার স্বজনরাও এ বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারছিল না। মাটির নিচ থেকে লাশ উদ্ধারের সময় লাশের সঙ্গে একটি গামছা পাওয়া যায়। পরে ওই গামছাটিকে সূত্র ধরেই অনুসন্ধান শুরু করে পুলিশ। অনুসন্ধানে তারা নিশ্চিত হয় উদ্ধার হওয়া গামছাটি একই এলাকার এমদাদ(২৫) নামে এক রাজমিস্ত্রির। এমদাদ সবসময় তার সঙ্গে এই গামছাটি রাখতো। পরে এমদাদকে গ্রেফতার করা হলে সে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং রাসেল(২৪) নামে আরও একজন জড়িত বলে তথ্য দেয়। পরে রাসেলকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) নাজমুল হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘লাশের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া গামছাটিই তদন্তের মোড় খুলে দিয়েছে। এ কারণে সহজেই ক্লু-লেস ঘটনাটির মোটিভ উদ্ধার এবং আসামীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।’ নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘অপরাধীরা অপরাধ করার সময় মনের অজান্তেই কোনো না কোনো চহ্নি রখেে যায়। অপরাধ বিজ্ঞানের ভাষায় এটিকে বলা হয় ‘সিগন্যাচার এ্যাসপেক্ট’। ওই গামছাটিও এমন একটি উদাহরণ।’ পুলিশি অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই এলাকার এক ব্যক্তি এমদাদ ও রাসেলকে দিয়ে আব্দল ছোবানকে হত্যা করে। তদন্ত এবং গ্রেফতারের স্বার্থে ওই ব্যক্তিটির নাম প্রকাশ করছে না পুলিশ। এদিকে এমদাদ ও রাসেল দু’জনই পরষ্পরের বন্ধু। তারা নিহত আব্দুল ছোবানের সঙ্গে আগে থেকেই ঘনিষ্ট। ছোবানকে তারা ওই গামছা দিয়েই শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
×