ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি ॥ খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ

ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

প্রকাশিত: ১০:৪২, ১৩ জুলাই ২০১৯

 ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে বন্যা  পরিস্থিতির অবনতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অব্যাহত ভারি বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উত্তরে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এদিকে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির এক সভায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। ফলে সরকারের পক্ষ থেকে বন্যা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে শুকনা খাবার ও মেডিক্যাল টিম। খোলা হয়েছে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এদিকে সারাদেশের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনেও একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে প্রতিদিন বন্যার সার্বিক অবস্থা এবং তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে বলে মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বৃষ্টির পর দেশের কয়েক অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দেয়ায় মাঠ পর্যায়ে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ভারতে ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে যাওয়ায় দেশে যমুনার পানি আরও বাড়বে। বিহারে গঙ্গার পানি বাড়ায় বাংলাদেশে পদ্মা অববাহিকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড যদিও জানিয়েছে সারাদেশে মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে রয়েছে। ভারি বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তবে তারা জানিয়েছে এখন পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বড় বন্যার আশঙ্কা এই মুহূর্তে নেই। তারা জানান, সাধারণত পদ্মা, মেঘনা, যমুনার পানি এক সঙ্গে বাড়লে তা বড় বন্যার অশনি সঙ্কেত হয়ে দেখা দেয়। এই মুহূর্তে সমতলের সব নদীর পানি বাড়লেও বড় তিনটি নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সারাদেশের ওপর ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ভারি বর্ষণের কারণে প্রধান প্রধান নদীসমূহের সমতলে পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তারা জানায়, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এ কারণে উজান থেকে নেমে আসার পানির কারণে দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। এদিকে বৃষ্টিপাতের কারণে ইতোমধ্যে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপদসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ার বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নদী তীরবর্তী এবং চর এলাকায় বসবাসকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশুদ্ধ পানি এবং খাবার সঙ্কট দেখা দিয়েছে বন্যার্তদের মাঝে। এদিকে শুক্রবার দুপুর থেকেই রাজধানীতে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। ফলে মতিঝিল, আমরামবাগ, মিরপুর ১০, চিড়িয়াখানা, ১ নম্বর মানিক মিয়া এভিনিউসহ ঢাকা নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে যান চলাচলে বেশ বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। সিএনজিচালিত পরিবহনগুলো পানিতে বিকল হয়ে পড়ে। ফলে শুক্রবার ছুটির দিনের ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় কোথাও কোথাও। আবার অনেক এলাকায় পরিবহন সঙ্কট দেয়া দেয়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সকাল ৬টা থেকে বেলা ৫টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাঙ্গামাটিতে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে আরও দুদিন রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগের ওপর ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী সোমবার থেকে বৃষ্টি কমে আসতে পারে। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ী ধসের আশঙ্কা করা হয়েছে আবহাওয়া অফিসের এক সতর্ক বার্তায়। এদিকে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ১০ জেলায় বন্যা পস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার এবং নীলফামারী জেলায় বন্যা পরিস্থির অবনতি হয়েছে। ভারতে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে যমুনা নদীতে পানি আরও বাড়বে। পাশাপাশি বিহারে গঙ্গার পানি বাড়ায় বালাদেশে পদ্মা অববাহিকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, দেশের নদ-নদীগুলোর ৬২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে, এর মধ্যে ২৬টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সেসব পয়েন্টে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ৫৫১ সেন্টারকে ঝুঁকিমুক্ত করতে কাজ করা হচ্ছে। মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জামালপুরে ভাঙ্গনের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে এবং লালমনিরহাটে তিস্তা নদীতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে, এগুলো মোকাবেলায় কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী দুদিন সারাদেশের ওপর ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদী পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। তারা জানায়, বাংলাদেশে মৌসুমি বায়ু সল্ডিয় থাকার কারণে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪-৮৮মি.মি.) থেকে অতি ভারি (৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারি বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ী এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারি বৃষ্টির কারণে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং ভারতের অসম ও মেঘালয় রাজ্যে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ৪৮ ঘণ্টায় যমুনা নদীর জামালপুর জেলায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের সুরমা, কুশিয়ারা, কংস, সোমেশ্বরী, ফেনী, সাঙ্গু, মাতামুহুরি, হালদাসহ প্রধান নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি ॥ এদিকে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থপনা এবং ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, দুর্গত জেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে সাড়ে ১৭ হাজার মেট্রিকটন চাল এবং ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও দুই কোটি ৯৩ লাখ নগদ টাকা। দুয়েক দিনের মধ্যে এসব জেলায় ৫০০টি করে তাঁবু এবং মেডিক্যাল টিমের পৌঁছে যাবে। ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মেডিক্যাল টিম গঠন করেছে এবং প্রচুর পরিমাণে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট প্রস্তুত রেখেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত জনগণকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে সব ধরনের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জনদের নেতৃত্বে টিম গঠন করা হয়েছে যাতে পানিবাহিত রোগ বিস্তার রোধ করা যায়। খাদ্যগুদামের কর্মরতদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আশা করি, এই বন্যায় আমরা মানুষের জীবন রক্ষা করতে তো পারবই, গবাদিপশু এবং খাদ্য শস্যেরও নিরাপত্তা দিতে পারব। তিনি জানান, রবিবার থেকে ডিসি সম্মেলনের কারণে ভারপ্রাপ্ত ডিসি হিসেবে যারা দায়িত্বে থাকবেন তাদের কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দায়িত্ব পালনের জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নীলফামারী ॥ তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটেছে। শুক্রবার বিকেল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে। এতে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমা ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল হতে তিস্তার পানি বিপদসীমা ২৪ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। বিকেল ৬টায় আরও ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়। লালমনিরহাট ॥ বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছেন তিস্তা পাড়ের নদী তীরবর্তী হাজার হাজার মানুষরা। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। পানি তোড়ে ব্যারেজ থর থর করে কাঁপছে। স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ী ঢলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গত চারদিনের ভারি বৃষ্টি। কুড়িগ্রাম ॥ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল আর বৃষ্টির পানিতে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমা ২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমা ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাঙ্গামাটি ॥ পাহাড়ী ঢল ও টানা বর্ষণে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি, বলকল, লংগদু, নানিয়াচর, বরকল ও জুরাইছড়ি উপজেলার নিম্নাচল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এসব উপজেলায় প্রায় ৫ হাজারের অধিক লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় এখনও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কক্সবাজার ॥ উখিয়ায় পাহাড়ী ঢলে দুই রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উখিয়া হাকিমপাড়া ১৪ নং রোহিঙ্গা শিবির থেকে পাহাড়ী ঢলে ভাসমান অবস্থায় লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলো উখিয়ার ১৪ নং হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের ১৬ নং ব্লকের আবদুস সালামের দুই পুত্র আনোয়ার সাদেক (৭) ও আনোয়ার ফয়সাল (৬)। সিলেট ॥ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও টানা বর্ষণে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। সুরমা কুশিয়ারা, সারী গোয়াইন পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বাঁশখালী ॥ টানা বর্ষণে শঙ্খ নদীর পানির স্রোতে শতাধিক পাকা দালান, বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। আশ্রয়হীন পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। অনেকেই অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়েছে শঙ্খ নদীর বাঁধের ওপর, রাস্তার ধারে, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে আরও সহস্রাধিক পরিবার। যে কোন সময় নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে ভাঙ্গনের মুখে থাকা বাড়িঘর। এ এলাকার কয়েকশ পরিবার শঙ্খ নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। ফটিকছড়ি ॥ বন্যার পানিতে ডুবে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীতে পৃথক ঘটনায় ইমাম হোসনে (৭) নামে এক শিশু ও আদনান (১৬) নামে এক ছাত্রের প্রাণহানি ঘটেছে। রংপুর ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর থেকে জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে শুক্রবার বিপদ সীমার ২৩ সেঃ মিঃ ওপর দিয়ে প্রবাহিত করছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তায় পানি বাড়ায় রংপুরের কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া, পীরগাছা উপজেলায় নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে তিস্তার তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। ফলে ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
×