ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পিপলস লিজিংয়ের বিনিয়োগকারীরা কোন টাকাই পাবে না

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ১৫ জুলাই ২০১৯

পিপলস লিজিংয়ের বিনিয়োগকারীরা কোন টাকাই পাবে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেনার দায়ে অবসায়ন হতে যাওয়া পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের অবসায়নে শেয়ারহোল্ডাররা ১ টাকাও পাবে না। এ কোম্পানিটিতে বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগকৃত অর্থের পুরোটাই লোকসান হবে। কোম্পানিটির আর্থিক হিসাব বিশ্লেষণে এ তথ্য পাওয়া গেছে। পিপলস লিজিংয়ে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারে চলতি বছরের ৩১ মার্চ ঋণাত্মক সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৬৭.৬৬ টাকায়। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটিতে ১০ টাকার প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ তো নেই, বরং ঋণাত্মক। এছাড়া কোম্পানিটির এমন কোন স্থায়ী সম্পদ নেই, যার বাজার দর আর্থিক হিসাবে উল্লিখিত দরের চেয়ে বেশি হতে পারে। ফলে ঋণাত্মক সম্পদ ধনাত্মক হওয়ার কোন সুযোগ নেই। একইসঙ্গে শেয়ারহোল্ডারদের প্রাপ্তিরও কোন সুযোগ নেই। দেখা গেছে, পিপলস লিজিংয়ের স্থায়ী সম্পদের মধ্যে কোন জমি নেই। রয়েছে অফিস প্রিমিসেস (ফ্ল্যাট), গাড়ি, কম্পিউটার, টেলিফোন সিষ্টেম, এয়ার কুলার, রেফ্রিজারেটর, জেনারেটর, অফিস ইক্যুপমেন্ট, আসবাবপত্র, ক্রোকারিজ ও সফটওয়্যার। ১৫ কোটি ১ লাখ টাকা দিয়ে ওইসব সম্পদ কেনা হয়। তবে ওইসব সম্পদ ব্যবহারের ফলে অবচয়জনিত কারনে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরে দাম কমে আসে ৭ কোটি ৭ লাখ টাকায়। যা বর্তমানে আরও নিচে নেমে এসেছে। এছাড়া ওইসব সম্পদের মধ্যে জমি না থাকায় বাজার দর বর্তমানের চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। যাতে ঋণাত্মক সম্পদ ধনাত্মক হবে না। পিপলস লিজিংয়ে ২৮৫ কোটি ৪৪ লাখ ৫ হাজার ৯৭০ টাকার পরিশোধিত মূলধনে শেয়ার সংখ্যা রয়েছে ২৮ কোটি ৫৪ লাখ ৪০ হাজার ৫৯৭টি। এই শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানিটির ঋণাত্মক সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৯৩১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ২০০৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পিপলস লিজিংয়ে মোট শেয়ারের মধ্যে ১৯ কোটি ১৫ লাখ ৩১ হাজার বা ৬৭.১০ শতাংশই সাধারন বিনিয়োগকারীদের হাতে। এ শেয়ারগুলোর সর্বশেষ প্রতিটির বাজার দর ৩ টাকা অনুযায়ি মোট বিনিয়োগমূল্য ছিল ৫৭ কোটি ৪৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা। তবে অবসায়নের মাধ্যমে এই বিনিয়োগমূল্য শূন্যতে নেমে আসবে। কোম্পানিটিতে বাকি শেয়ারের মধ্যে ২৩.২১ শতাংশ উদ্যোক্তা/পরিচালক, ৮.৭৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ও ০.১৯ শতাংশ বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে। ফলে কোম্পানিটির অবসায়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে সাধারন বিনিয়োগকারীরা। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনে পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ জুন পিপলসের অবসায়নে সরকার সম্মতি দিয়েছে। এ অবসায়নের সিদ্ধান্ত হবে আদালতে, এ জন্য আইনজীবীও নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ। যা রবিবার থেকে কার্যকর করা হয়েছে।
×