ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

প্রকাশিত: ১০:৫২, ১৬ জুলাই ২০১৯

 দক্ষিণ কোরিয়ার  প্রধানমন্ত্রীর  ঢাকা ত্যাগ

ঢাকা ও সিউলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক-বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদারের লক্ষ্যে এখানে তিনদিনের সরকারী সফর শেষে দক্ষিণ কোরীয় প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়োন সোমবার ঢাকা ত্যাগ করেছেন। বেলা সাড়ে ১১ টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। এ সময় তাকে বিদায় জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। খবর বাসসর। বিদায়ের আগে, বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল কোরীয় প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এর আগে সকালে, লি রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পূষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা এবং নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার এ্যান্ড অটিজমের জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন তাকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে অভ্যর্থনা জানান। তিনি কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে জাতির পিতার ইতিহাস সম্পর্কে ব্রিফ করেন। রবিবার লি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে দ্বিপক্ষীয় বেঠক করেন। এ সময় কোরিয়ার বাজারে সকল বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের অনুমতির বিষয়টি বিবেচনার জন্য ঢাকার পক্ষ থেকে সিউলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। বৈঠককালে শেখ হাসিনা সফররত দক্ষিণ কোরীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি রোহিঙ্গা সঙ্কটের আশু শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য একটি হুমকি। এ সময় কোরীয় প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে দক্ষিণ কোরিয়া সম্ভাব্য সবকিছু করবে বলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন। লি আরও বলেন, তার সরকার দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশী পণ্যের শুল্ক-ও-কোটা মুক্ত প্রবেশের ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রস্তাব বিবেচনা করবে। দক্ষিণ কোরীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে একটি ‘সম্ভাবনাময় দেশ’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোরিয়া ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে’ বিনিয়োগ করতে পারে। এটা জি টু জি ও পিপিপি মডেলের আওতায় সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ কেন্দ্র। দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং কূটনীতি ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে তিনটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। লি রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গে রবিবার দেখা করেন। এ সময় তিনি বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের রূপকল্প-২০৪১’র লক্ষ্য পূরণে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় এদেশের পাশে থাকবে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী কোরিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এ্যাসোসিয়েশন (কেআইটিএ) এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) রাজধানীতে যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। লি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, কোরিয়া দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষত জ্বালানি, অবকাঠামো, আইসিটি ও হাইটেক খাতগুলোকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
×