স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার মোল্লাকান্দিতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবিদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৪জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন। এ সময় বাদ যায়নি গবাদি পশুও।
মঙ্গলবার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের নোয়াদ্দা ও ঢালীকান্দিসহ ৪টি গ্রামে স্বপন মেম্বার ও মেজবাউদ্দিন মিজু মেম্বারের গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নারীসহ ১০ জনকে আটক করেছে। সংঘর্ষে আহতরা হলেন- নুর উদ্দীন সরকার (৫০), সোলেমান গাজী (৪০),আকরাম খান (৩২), আবু সাঈদ (৫৬), রহমত উল্লাহ (১৭), আবুল কালাম (৩৫), মো. সুজন (৩৫), গৃহবধূ তাসলিমা (৫০), শাহনাজ (৩০), কলেজ ছাত্র মো. সাকিলসহ (১৯) ২০ জন।
আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদ (৫৬), নূর উদ্দিন সরকার (৫০), সোলেমান গাজী (৪০) ও আকরাম খানকে (৩২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, সম্প্রতি মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও ইউপি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন দেওয়ান ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেজবাউদ্দিন ঢালীর মধ্যে বিরোধের জেরে হামলা-পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছিল।
এরই জেরে মঙ্গলবার ভোরে স্বপন দেওয়ানের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক লোক নোয়াদ্দা ও ঢালীকান্দি এলাকাসহ ৪টি গ্রামে হামলা চালায়। এ সময় মেজবাউদ্দিন ঢালীকে না পেয়ে এলাকার নিরীহ মানুষরে ওপর হামলা চালায় তারা। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এ সময় গুলির ঘটনাও ঘটে। গুলিতে ৪জন আহত হয়েছে। গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা প্রায় পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়েছে।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বশাক বলেন, মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন থেকে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গুলিবিদ্ধ চারজনকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র দ্বারা শরীরে আঘাত ও ককটেল বিস্ফোরণে আঘাতপ্রাপ্ত রয়েছে।
এ ব্যাপারে মেজবাউদ্দিন ঢালী জানায়, এলাকায় আমার নিরীহ মানুষদের ওপর আচমকা হামলা চালায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী স্বপন বাহিনী। এ দিকে স্বপন দেওয়ান জানান, বাজারে আসলে তার ওপর হামলা চালানো হয়। পরে আমার লোকেরা পাল্টা হামলা চালায়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় অভিযুক্তদের গ্রেফতারে চিরুনি অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল খন্দকার আশাদুজ্জামান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নারীসহ ১০জনকে আটক করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
