ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরে যমুনার পানি বিপদসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত

প্রকাশিত: ০৮:৪৫, ১৬ জুলাই ২০১৯

জামালপুরে যমুনার পানি বিপদসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে ১৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২০১৭ সালের যমুনার পানির উঠেছিল সর্বোচ্চ ১৩৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। এবারের বন্যায় উপজেলা সদরসহ আটটি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন প্লাটফরম ও রেললাইনে পানি উঠায় মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ঢাকা ও ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা আন্ত:নগর তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনসহ সকল ট্রেন ইসলামপুর পর্যন্ত চলাচল করছে। জানা গেছে, বন্যার পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন, উপজেলা পরিষদ, দেওয়ানগঞ্জ থানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার পাঁচটি ওয়ার্ডের সম্পূর্ণ এলাকা এবং বাকি চারটি ওয়ার্ডে আংশিক বন্যা কবলিত হয়েছে। উপজেলা পরিষদের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর, সোনালী ব্যাংকসহ সকল সরকারি বেসরকারি দপ্তরে বন্যার পানি উঠায় প্রশাসনিক কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। পৌরসভাসহ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে অন্তত: দুই লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। চিকাজানী, চুকাইবাড়ী, বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে অধিকাংশ বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্যার্তরা খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যাকবলিত এলাকায় সকল নলকূপ ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্যের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বন্যায় দেওয়ানগঞ্জ-সাননন্দবাড়ী-রাজিবপুর সড়কসহ অভ্যন্তরীণ গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের চরখোলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও চরখোলাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি ভবন বন্যার পানির তোড়ে ধসে বিলীন হয়ে গেছে। বন্যার কারণে উপজেলার ১৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার্তদের জন্য আটটি আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ৯৯০টি বন্যার্ত পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার ৫৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। শুকনো খাবারের আরো দুই হাজার প্যাকেট তৈরি করা হচ্ছে। আমন ধানের বীজতলা, আউশ ধান, পাট ও অন্যান্য সবজিসহ প্রায় তিন হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণরূপে পানিতে তলিয়ে গেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে।
×