ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএসইসির কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত

প্রস্তাবিত দরেই শেয়ার কিনতে হবে নিলামে অংশগ্রহণকারীদের

প্রকাশিত: ০৮:৫৬, ১৭ জুলাই ২০১৯

প্রস্তাবিত দরেই শেয়ার কিনতে হবে নিলামে অংশগ্রহণকারীদের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রস্তাবিত দরেই শেয়ার কিনতে হবে নিলামে অংশগ্রহণকারীদের। এছাড়া যে পরিমাণ শেয়ার কেনার জন্য দর প্রস্তাব করবে সেই পরিমাণ কিনতে হবে বলে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৬৯৩তম সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে নিলামে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দকৃত শেয়ার সম্পূর্ণ বিক্রি না হলে, সেই ইস্যু বাতিল করা হবে। এই পদ্ধতিতে বিডারদের নাম ও তাদের প্রস্তাবিত দর প্রদর্শন করানো যাবে না। আর বিডিংয়ের জন্য নিলামকারীদের শতভাগ অর্থ সংশ্লিষ্ট স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে শেয়ার সর্বোচ্চ দর প্রস্তাবকারী থেকে বিতরণ শুরু হবে, যা ক্রমান্বয়ে নিচের দিকে নামবে এবং যে মূল্যে বিতরণ শেষ হবে, সেটাই কাট অফ প্রাইস হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সেই মূল্য থেকে ১০ শতাংশ কমে শেয়ার ক্রয় করবেন। আর কাট অফ প্রাইসে যদি একাধিক বিডার থাকেন, তাহলে যে বিডার আগে বিড করবেন, তাকে আগে শেয়ার দেয়া হবে। কমিশন বুক বিল্ডিংয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হবে। অন্যদিকে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা ৪০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসাবে কোটা সুবিধা পেতে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ থাকতে হবে। এই বিনিয়োগের পরিমাণ কি হবে, কমিশন তা প্রত্যেক পাবলিক ইস্যুর সম্মতিপত্রে উল্লেখ করবে। অন্যথায় সংরক্ষিত শেয়ারের কোটা সুবিধা পাবেন না। পূর্বের ইস্যুকৃত মূলধনের ৮০ শতাংশ ব্যবহার না করে পাবলিক ইস্যুর প্রস্তাব করা যাবে না। আইপিওতের ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা বা পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ উত্তোলন করতে হবে। এক্ষেত্রে যেটির পরিমাণ বেশি সেই পরিমাণ তুলতে হবে। আর বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৭৫ কোটি টাকা বা পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ উত্তোলন করতে হবে। এক্ষেত্রেও যেটির পরিমাণ বেশি সেই পরিমাণ উত্তোলন করতে হবে। ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে সম্মিলিতভাবে আবেদন ৬৫ শতাংশের কম হলে ইস্যু বাতিল করা হবে। আর ৬৫ শতাংশের বেশি এবং ১০০ শতাংশের কম হলে, বাকি শেয়ার অবলেখক (আন্ডাররাইটার) গ্রহণ করবে। এদিকে আইপিওর আবেদনের সময় ইস্যুয়ারকে পূর্বে নগদে উত্তোলিত মূলধনের ক্ষেত্রে ব্যাংকের অথবা অডিটরের সার্টিফিকেট এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট দাখিল করতে হবে। আর নগদ ব্যতীত উত্তোলিত মূলধনের ক্ষেত্রে যৌথ মূলধনী কোম্পানির রেজিস্টারের সার্টিফায়েড ভেন্ডর এগ্রিমেন্ট এবং সম্পদের মালিকানা সংক্রান্ত টাইটেল ডকুমেন্ট কমিশনে জমা দিতে হবে। প্লেসমেন্ট শেয়ার দুই বছরের লকইন থাকবে ॥ প্লেসমেন্ট শেয়ার বা প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) পূর্ব ইস্যুকৃত শেয়ারে লক-ইন ২ বছর করে পাবলিক ইস্যু রুলসের সংশোধনীর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যা প্রসপেক্টাসের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ প্রকাশের দিনের পরিবর্তে লেনদেন শুরুর দিন থেকে গণনা করা হবে। তবে প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর পরে আইপিও অনুমোদনে ৪ বছরের বেশি সময় লাগা কোম্পানির ক্ষেত্রে ১ বছর লক-ইন করা হয়েছে। কমিশনের ৬৯৩তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উদ্যোক্তা/পরিচালক ও ১০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারণকারীদের জন্য ৩ বছর লক-ইন প্রযোজ্য হবে। এছাড়া উদ্যোক্তা/পরিচালক ও ১০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারণকারীদের হস্তান্তরকৃত শেয়ারে লক-ইন ৩ বছর, আইপিওর ৪ বছরে পূর্বে ইস্যুকৃত শেয়ারে ১ বছর, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রে ১ বছর ও বাকি অন্যসব শেয়ারে ২ বছর লক-ইন রাখা হবে। এর আগে ২৯ এপ্রিল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এক বৈঠকে আইপিওকালীন সকল শেয়ারে ৩ বছর লক-ইন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিএসইসি। মিউচুয়াল ফান্ডের আরআইইউ পদ্ধতি বাতিল ॥ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রে রিইনভেস্টমেন্ট ইউনিট (আরআইইউ) পদ্ধতি বাতিল করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। জানা গেছে, সভায় সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (মিউচুয়াল ফান্ড) বিধিমালা ৬৬ অনুযায়ী লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রে রিইনভেস্টমেন্ট ইউনিট (আরআইইউ) পদ্ধতি এখন থেকে বাতিল করা হলো। ফলে বেমেয়াদী এবং মেয়াদী উভয় ধরনের ফান্ডের ক্ষেত্রেই কেবল নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা যাবে। সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (মিউচুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এর বিধি ৯ (গ) এ উল্লিখিত বেমেয়াদী ফান্ডের উদ্যোক্তার লক-ইন বিষয়ে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা অনুযায়ী বেমেয়াদী ফান্ডের ক্ষেত্রে মেয়াদী ফান্ডের উদ্যোক্তার অংশ ফান্ড গঠনের তারিখ থেকে ১ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ এবং তৎপরবর্তীতে উক্ত ধারণকৃত অংশের অন্তত ১০ শতাংশ উদ্যোক্তা কর্তৃক ফান্ডের অবসায়ন পর্যন্ত সর্বক্ষণিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। এর ফলে মেয়াদী ও বেমেয়াদী ফান্ডের ভিন্নতা ছিল তা দূরীভূত হবে। ব্যাংক এশিয়ার বন্ড অনুমোদন ॥ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক এশিয়ার ৫শ’ কোটি টাকার ননকনভার্টেবল সাবোর্ডিনেটেড বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। জানা গেছে, ৭ বছর মেয়াদী এই বন্ডের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ননকনভার্টেবল, আনলিস্টেড, ফুলি রিডেম্বল, ফ্লোটিং রেটেড এবং সাবোর্ডিনেটেড বন্ড। ৭ বছরে বন্ডটি পূর্ণ অবসায়ন হবে।
×