ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডের গ্রুপিং ড্রতে ‘ই’ গ্রুপের শীর্ষ দল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ১৭ জুলাই ২০১৯

ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডের গ্রুপিং ড্রতে ‘ই’ গ্রুপের শীর্ষ দল বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বুধবার মালয়েশিয়ার কুয়াললামপুরে হয় ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডের গ্রুপিং ড্র। ‘ই’ গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। এই গ্রুপে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে যাদের পেয়েছে, তারা হলো : আফগানিস্তান, ভারত, ওমান এবং ২০২২ বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ কাতার। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দ্বিতীয় পর্বের লড়াই শুরু হবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর থেকে। বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে তাদের গ্রুপে ভারতকে চেয়েছিলেন। তার সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে অবশেষে। গ্রুপিং ড্রয়ের আগে নিজ দেশে ছুটি কাটাতে যাওয়া বাংলাদেশ কোচ বলেছেন, ‘আমি খুবই খুশি। কারণ ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ আমাদের গ্রুপে পড়েছে। দারুণ একটা অভিজ্ঞতা হবে আমাদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচগুলোতে। কাতারের পাশাপাশি ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচটিও হবে আমার জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা। তাছাড়া আমি চেয়েছিলাম ভারত আমাদের গ্রুপের পড়ুক।’ এশিয়ার ৪০ দেশ নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্ব এই গ্রুপিং ড্র। দলগুলোকে ভাগ করা হয় আটটি গ্রুপে। প্রতি গ্রুপে পড়ে ৫টি করে দল। প্রতি গ্রুপ থেকে একটি করে চ্যাম্পিয়ন দল উন্নীত হবে তৃতীয় রাউন্ডে। এছাড়া আট গ্রুপে সেরা চারটি রানার্সআপ দলও নাম লেখাতে পারবে পরের পর্বে, যারা সরাসরি খেলবে এএফসি এশিয়া কাপেও। এছাড়া রানার্সআপ বাকি চারটি দল অংশ নেবে এশিয়া কাপ বাছাইপর্বের তৃতীয় পর্বে। উল্লেখ্য, প্রাক-বাছাইপর্বে লাওসকে হারিয়ে কাতার ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বে ওঠার যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। ছুটি কাটিয়ে শিগগীরই ঢাকায় ফিরলেই জেমির অধীনে লাল-সবুজ বাহিনী অনুশীলন শুরু করবে। জানা গেছে, দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা ৪০ দলকে রাখা হয়েছিল পাঁচটি পটে। সেখানে বাংলাদেশ ছিল ৫ নম্বর পটে। তারা ছাড়াও এই পটে ছিল ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপাল, কম্বোডিয়া, মঙ্গোলিয়া, গুয়াম ও শ্রীলঙ্কা। মজার ব্যাপার হচ্ছে-দুই চিরশত্রু ইরাক এবং ইরান পড়েছে একই গ্রুপে (‘সি’)! একইভাবে আরেক দুই চিরশত্রু উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়াও পড়েছে একই গ্রুপে (‘এইচ’)! ড্রয়ের পর ‘এ’ গ্রুপে চীন, সিরিয়া, ফিলিপিন্স, মালদ্বীপ এবং গুয়াম, ‘বি’ গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া, জর্দান, চাইনিজ তাইপে, কুয়েত এবং নেপাল, ‘সি গ্রুপে ইরান, ইরাক, বাহরাইন, হংকং এবং কম্বোডিয়া, ‘ডি গ্রুপে সৌদি আরব, উজবেকিস্তান, ফিলিস্তিন, ইয়েমেন এবং সিঙ্গাপুর, ‘ই’ গ্রুপে বাংলাদেশ, ওমান, ভারত, আফগানিস্তান এবং কাতার, ‘এফ গ্রুপে জাপান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, মায়ানমার এবং মঙ্গোলিয়া, ‘জি’ গ্রুপে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া ও ‘এইচ’ গ্রুপে দক্ষিণ কোরিয়া, লেবানন, উত্তর কোরিয়া, তুর্কমেনিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। গত ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইয়ে অস্ট্রেলিয়া, জর্দান ও কিরগিজস্তানের মতো শক্তিশালী দল পড়েছিল বাংলাদেশের গ্রুপে। সে তুলনায় এবার তাদের প্রতিপক্ষ তুলনামূলক সহজই। তাছাড়া এই দলগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের খেলাও হয়েছে অনেক। জেমি ডে বলেছেন, ‘গ্রুপ পর্বে যাদের আমরা মোকাবিলা করবো, তারা সবাই কঠিন প্রতিপক্ষ। আমাদের চেয়ে শক্তিশালী। তাই এই চার দলকে টপকে পরের রাউন্ডে ওঠার আশা আমরা করছি না। আমরা নিজেদের সেরা খেলাটাই খেলার চেষ্টা করবো। গ্রুপ পর্বের এ ম্যাচগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের খেলোয়াড়রা নিজেদের আরও ভাল খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে নিতে পারবে।’ গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে এক নম্বর পট থেকে উঠেছিল কাতারের নাম। কিন্তু গ্রুপ চূড়ান্ত হওয়ার পরই বাংলাদেশের নাম ৫ নম্বর থেকে তুলে বসানো হয় এক নম্বরে। এক নম্বর হওয়া কাতারকে বসানো হয় পাঁচে। এর কারণ কাতারের অনুরোধ। কাতারের এই চাওয়ার কারণ ছিল আগামী বছরের কোপা আমেরিকা, যেখানে অতিথি দেশ হিসেবে অংশ নেয়ার কথা তাদের। আসরটি অনুষ্ঠিত হবে ১২ জুন থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের কিছু ম্যাচ আছে ওই সময়েও। তবে গ্রুপের ৫ নম্বর দলের খেলা শেষ হয়ে যাবে ১০ জুনের মধ্যে। তাই কাতারের বিশ্বকাপ ম্যাচ আর কোপায় অংশ নেয়ার সময়টা আর সাংঘর্ষিক থাকছে না, এজন্যই কাতারের এমন অনুরোধ। তাই নিজ গ্রুপে বাংলাদেশই এখন গ্রুপের শীর্ষ দল। তারা প্রথম ম্যাচ খেলবে ১০ সেপ্টেম্বর।
×