ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

এহসান বিন মুজাহির

ধর্ষণরোধে সর্বোচ্চ শাস্তি

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ১৮ জুলাই ২০১৯

 ধর্ষণরোধে সর্বোচ্চ শাস্তি

সমাজে মূল্যবোধের অভাব, পারিবারিক অসচেতনতা, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকার কারণে দেশে নারী-শিশু ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা একের পর ঘটছে। প্রতিদিন দৈনিকসহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে চোখ বুলালেই ধর্ষণ, ধর্ষণ উত্তর নৃশংস হত্যার খবর চোখে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে নারী-শিশু ধর্ষণের লোমহর্ষক ঘটনা দেশকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে। নারীরা ঘরে, বাইরে, অফিস-আদালত, পথে, ঘাটে-বাসে তথা কর্মক্ষেত্রে কোথাও নিরাপদ নয়। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। শিশু, বালিকা, তরুণী, স্কুল-কলেজের ছাত্রী, শিক্ষিকা, গৃহবধূ, প্রতিবন্ধী, গার্মেন্টস কর্মী, ডাক্তার, জননী, এমনকি বৃদ্ধাও বাদ যাচ্ছে না ধর্ষণের শিকার থেকে। শিক্ষকের লালসারও শিকার হচ্ছে ছাত্রীরা। দিন দিন ধর্ষণের সংস্কৃতি বাড়ছে তো বাড়ছেই। মানুষ নামী হায়েনাদের হিংস্র ছোবল থেকে ৩ বছরের শিশু থেকে শুরু করে কেউই বাদ যাচ্ছে না। এসব ঘটনার মূলে প্রধানত সুস্থ সামাজিকীকরণের ব্যাপক অভাব এবং নৈতিক-সামাজিক অবক্ষয় দায়ী। যখন কোন অপরাধ করে কেউ পার পেয়ে যায় তখনই নতুন আরও অনেক অপরাধীর জন্ম হয়। কারণ তখন সম্ভাব্য অপরাধী দেখে কই কিছুই তো হলো না। তখন সে আস্ফালন করার সুযোগ পায়, সে অপরাধ করতে সাহসী হয়। তার ওপর যদি সে হয় কোন রাজনৈতিক দলের লোক তাহলে তো আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই এই দেশে নুসরাত জাহান রাফি, তনু, রিশা, আফসানা, নিতুদের চলে যেতে হয় অতৃপ্তি নিয়ে, আর আমাদের বেঁচে থাকতে হয় তাদের অভিশাপের বোঝা নিয়ে! সঠিক বিচারের মধ্য দিয়ে এ দেশে আইনের নজিরবিহীন শাসন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন এখনও অধরা! তনু, রিশা, আফসানা, নিতু এবং খাদিজা আখতার নার্গিস পর্যন্ত অসংখ্য ঘটনা আজ জ্বলন্ত সাক্ষী হয়ে আছে! তাদের বেলায় বলা যায় বিচারের বাণী-নীরবে নিভৃতে কাঁদে। অনেক দিন আগে ঘটে যাওয়া হত্যার যথার্থ বিচার বিলম্বিতই শুধু হচ্ছে না, বিচার কাঁদছেও। আর বিচার বিলম্বিত হচ্ছে তদন্তের ধীরগতি, তদন্ত আটকে যাওয়া, আবার বিষয়টি রাজনৈতিক হয়ে যাওয়াসহ নানা কারণে। অতীতে ঘটে যাওয়া ধর্ষণগুলোর প্রকৃত বিচার এবং উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় দেশে শিশু এবং নারী ধর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ধর্ষণের যথার্থ বিচার তথা দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতো না। খুব স্বল্প সময়ে তথা দ্রুত বিচার করে শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে ধর্ষণের মতো ঘটনা ধীরে ধীরে কমে আসবে। ধর্ষকদের শুধু গ্রেফতার আর জেল দিয়েই বিচার শেষ নয়; বরং এসব নরপশু ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করা হোক। শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার থেকে
×