ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস বন্ধে পশুর হাটে থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তা

প্রকাশিত: ১০:১৮, ১৮ জুলাই ২০১৯

 চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস বন্ধে পশুর হাটে থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তা

শংকর কুমার দে ॥ এবারের পবিত্র ঈদ-উল-আযহা (কোরবানির ঈদ) সামনে রেখে সারাদেশ থেকে রাজধানীতে পশুর আমদানি সুষ্ঠু ও সচল রাখাসহ সব ধরনের চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস বন্ধে তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে পশুর হাটে। এবারের কোরবানির ঈদ সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার। পশু ব্যবসায়ী এবং বিক্রেতারা যেন বেচাবিক্রি করে নিরাপদে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যেতে পারেন সেজন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এবার ঈদ উপলক্ষে রাস্তার পাশে গরু, ছাগলসহ সব ধরনের পশুর হাট বসানো নিষিদ্ধ করাসহ কোন ধরনের চাঁদাবাজি হলে টেলিফোনে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদ সামনে রেখে আগে থেকেই সারাদেশ থেকে কোরবানির পশুর আমদানি অব্যাহত রাখতে পুলিশকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। রাজধানীর পশু হাটগুলোতে বিশেষ করে গাবতলী, বাদামতলী, আফতাবনগর, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর বছিলা, আগারগাঁ তালতলা পশুর হাটের সরেজমিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। সরকারের তরফ থেকে এসব হাটে পশু চিকিৎসক, সহকারী নিয়োগ দেয়া হচ্ছে পশুর সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, এবার পশু ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা যাতে করে লেনদেনের সময় জাল টাকা বিস্তার চক্রের শিকার না হয় সেজন্য জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে পশুর হাটে। হাটগুলোতে পর্যাপ্ত পানি, শৌচাগার ও ক্রেতা-বিক্রেতার বিশ্রামের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পকেটমার, প্রতারক, চাঁদাবাজদের অত্যাচার রুখতে হাটগুলোতে পুলিশ ও র‌্যাবের নিয়মিত টহল দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, এবারের কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পশুর হাটগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, পুলিশ ও র‌্যাবের কন্ট্রোলরুম, ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন, জাল টাকা চিহ্নিতকরণ মেশিন সরবরাহসহ পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পশুবাহী ট্রাক ও ট্রলারে টানাহেঁচড়া করার খবর পেলেই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কোরবানির ঈদে রাজধানীর অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে নিয়মিত এবং প্রয়োজনে ব্লক রেড চালানোর নির্দেশনা রয়েছে। এলাকাভিত্তিক অপরাধীর তালিকা তৈরি করে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা হবে। পশু ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও তাদের নগদ অর্থ পরিবহনে নিরাপত্তা দেয়া হবে। একই সঙ্গে জাল টাকা তৈরি চক্রের হোতাদের ধরতেও সাদা পোশাকে মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায়ে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যে কোন মূল্যে কোরবানির ঈদের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের প্রতি কঠোর বার্তা পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সন্ত্রাসীদের কোরবানির ঈদে প্রধান টার্গেট থাকে পশুর হাট ও ব্যবসায়ীরা। পশুরহাট ও চামড়া ব্যবসা কেন্দ্র করে চাঁদাবাজিসহ হত্যাকা-ের মতো ঘটনাও ঘটায় তারা। এছাড়া অজ্ঞান ও মলম পার্টির তৎপরতা রোধে এসব চক্রের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালাতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পশুর হাটে গরু-ছাগল-মহিষের পাইকারি বিক্রি শুরু হয়েছে। এবারের পশুর হাট রাজধানীর জনবহুল এলাকা থেকে একটু দূরে দেয়ার চেষ্টা করেছি, যাতে পশুরহাটের জন্য যানজটের সৃষ্টি না হয়। হাটগুলোতে সুস্থ ব্যবস্থাপনা রাখতে ইজারাদারদের ও যানজটের যাতে সৃষ্টি না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
×