ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সার্ভার জটিলতায় সৌদি ভিসা পেতে ভোগান্তি

প্রকাশিত: ১০:২১, ১৮ জুলাই ২০১৯

সার্ভার জটিলতায় সৌদি ভিসা পেতে ভোগান্তি

আজাদ সুলায়মান ॥ সৌদি আরবের সার্ভার জটিলতায় ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকায় প্রায় দেড়শত হজ যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন। তাদের এখন পরবর্তী ফ্লাইটের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। তবে হজ অফিস জানিয়েছে- এ সঙ্কট ছিল মাত্র দু’দিন। এখন ঠিক হয়ে গেছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকেই সার্ভার সক্রিয় হওয়ায় ভিসা ইস্যু স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এদিকে এ ধরনের জটিলতা বা বিড়ম্বনা এড়াতে ফ্লাইটের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সকল হজ এজেন্সিকে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ভিসা প্রাপ্তিতে কোন সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে সৌদি দূতাবাস (গুলশান) এবং পরিচালক হজ ঢাকাকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রমের শৈথিল্য প্রদর্শন করা হলে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং ২০২০ সালের হজ মৌসুমের হজযাত্রী প্রেরণে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। জরুরী এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৯ সালে হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী এজেন্সিসমূহের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, এ বছর হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়াকরণে সৌদি সরকার কর্তৃক নতুন নিয়ম প্রবর্তন করায় ভিসাপ্রাপ্তিতে সময় প্রয়োজন হচ্ছে। তাই হজ ফ্লাইটের যৌক্তিক সময়ের আগে ভিসার কার্যক্রম সম্পন্ন করা প্রয়োজন। উল্লেখ্য এ বছরই প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে অনলাইন ভিসা। এ জন্য এজেন্সিগুলোর পাসপোর্ট নিয়ে আগের মতো আর ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসে ধর্ণা দিতে হয় না। এজেন্সিগুলো তাদের যাত্রীদের জন্য সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি (যাকে বলা হয় মুফা) পাবার পর অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। এতে সৌদি আরব থেকেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভিসা অনুমোদন দেয়া হয়। তারপর ঢাকায় বসে শুধু অনলাইনে সেই ভিসার প্রিন্ট নিতে হয়। গত ৪ জুলাই থেকে এভাবেই চলে আসছিল ভিসা সংগ্রহের কাজ। এতে এ বছর এজেন্সি ও হজ অফিসের সার্বিক ঝক্কি ঝামেলা অনেকটাই কমে আসে। কিন্তু গত রোববার থেকে হঠাৎ সৌদি আরবের নিজস্ব সার্ভার সেøøা হয়ে পড়ায় ঢাকার চাহিদা মোতাবেক ভিসা প্রাপ্তির কাজে ব্যাঘাত ঘটে। পরদিন সোমবার সার্ভারই বন্ধ হয়ে পড়ায় ভিসা সংগ্রহের কাজ একেবারের বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই দু’দিনের ফ্লাইট নির্ধারিত থাকার পরও ভিসা না পাওয়ায় তারা হজে যেতে পারেনি। তারা বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে হজ অফিসে এসে জানতে পারেন তাদের ভিসা হয়নি। ফলে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। হজ অফিস জানিয়েছে, মীনা, মিডিয়া ও অপর একটি এজেন্সীর প্রায় দুইশত হজযাত্রীকে ফ্লাইট বাতিল করতে হয়। এ নিয়ে হজ অফিসার সাইফুল ইসলাম ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসে হজযাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি তুলে ধরেন। পরদিন মঙ্গলবার বেলা দু’টোর দিকে সৌদি সার্ভার সক্রিয় হয়। তারপর থেকে ভিসা প্রদান শুরু হয়। এ সময় আটকে পড়া হজযাত্রীদের স্বজন পুরানো ঢাকার ইয়াহিয়া বলেন, ভিসা না হওয়ায় বেলা দু’টোর ফ্লাইটে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু দু’টোর সময় সার্ভার চালু হওয়ায় তাৎক্ষণিক ভিসার প্রিন্ট নিয়ে বিকেল পাঁচটার ফ্লাইটে ৭৭ জনকে পাঠানো সম্ভব হয়। জানা গেছে, মীনা নামের একটি এজেন্সির ৬৭ জন হজযাত্রী এখনও যেতে পারেননি। তাদের ফ্লাইট ছিল সোমবার। পরবর্তী ফ্লাইট কবে নাগাদ হবে সেটা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি এজেন্সি। এ বিষয়ে হজ অফিসার সাইফুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, একটা ফ্লাইট মিস করলে পরবর্তী ফ্লাইট পাওয়াটা কিছুটা জটিল হয়ে পড়ে। কারণ এবার কিন্তু কোন ফ্লাইটই আগের মতো রিসিডিউলের সুযোগ খুব একটা নেই। তবে এ ভুলটা তো আমাদের নয়। সেজন্য আমরা বিমান ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সকে চিঠি দিয়েছি যাতে তাদের ফ্লাইট মিস করার জন্য কোন ধরনের জরিমানা বা পেনাল্টি না করে। এ প্রসঙ্গে সাইফুল ইসলাম বলেন, শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো না করে এজেন্সিগুলো যদি অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকেই ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম সম্পন্ন করে রাখত- তাহলে সৌদি আরবের সার্ভার কাজ না করলেও এই ক’জন হজযাত্রী ঠিকই সময়মতো ফ্লাইটে যেতে পারত। সেজন্য মন্ত্রণালয় থেকে জরুরী নির্দেশনা এসেছে অন্তত সাতদিন আগেই যেন এজেন্সিগুলো ভিসার আবেদন করে ফেলে। চলতি বছর সরকারী ও বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় মোট বাংলাদেশী হজযাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন। ইতোমধ্যে ৭৩ হাজার ১৩৫ জন হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এ পর্যন্ত ভিসা ইস্যু হয়েছে ৯৩ হাজার ৬২ জনের।
×