ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

প্রগতিশীলরা আতঙ্কে

চবি ক্যাম্পাসে জামায়াত শিবিরের তৎপরতা রহস্যজনক

প্রকাশিত: ১০:২২, ১৮ জুলাই ২০১৯

 চবি ক্যাম্পাসে জামায়াত  শিবিরের তৎপরতা রহস্যজনক

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ এক মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হয়ে গেল। কিন্তু দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণকালীন একজন ভিসি পেল না। এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। প্রো-ভিসি রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন ভিসির। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ দফতরের প্রধান পদে ভারপ্রাপ্তরাই দায়িত্ব চালিয়ে নিচ্ছেন। এ ধরনের পরিস্থিতিতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির সমর্থিত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলেই একাট্টা হয়েছে। বিগত দশ বছরের মধ্যে এ পরিস্থিতি দেখা যায়নি। ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশ পরিস্থিতি অনেকটা নাজুক অবস্থার দিকেই ধাবিত হচ্ছে। ভিসির রুটিন দায়িত্ব পালনকারী প্রো-ভিসি ড. শিরীন আখতার গত সোমবার রাতে মহানগরীর একটি রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিকদের কাছে সুষ্ঠুভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন। ক্যাম্পাসের ভেতরে জামায়াত-শিবিরের কট্টরপন্থীরা সরকারী বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন দুর্বলতার কারণে এত তেজোদীপ্ত মনোভাবে পৌঁছেছেন তা রহস্যাবৃত। জামায়াত-শিবির সমর্থিত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শিবিরের ক্যাডারদের সঙ্গে সক্রিয় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও অফিসে জামায়াত-শিবির সমর্থকরা দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় অবস্থানে রয়েছে। এখন আকস্মিকভাবে সরব। ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সাফল্যের কারণে সাধারণ মানুষ সরকারবিরোধী প্রচারে কর্ণপাত করছে না। অথচ, গণভিত্তি নেই জামায়াত শিবির সমর্থকরা সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার ও গুজব ছড়ানোর কূটকৌশল অবলম্বন করে চলেছে। এরা ক্যাম্পাসের ভেতরে বিভিন্ন মসজিদকে আগের মতো বেছে নিয়েছে। বিশেষ করে আসর ও মাগরিব নামাজের পর শিবিরের জেহাদী কর্মীরা ধর্মীয় আলোচনার নামে মসজিদে বৈঠক করে কর্মপরিকল্পনা তৈরিতে তৎপর। ফলে ক্যাম্পাস অভ্যন্তরে প্রগতিশীল চিন্তা শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অতিসম্প্রতি গবেষণা সেমিনারের নামে কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আজাদ ক্যাম্পাসে আসেন সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে। ছাত্রত্ব না থাকা সত্ত্বেও তিনি কিভাবে পিএইচডি ডিগ্রী প্রাপ্তিপূর্বক কনফারেন্স করে গেলেন তা সকলের কাছে উদ্বেগের পাশাপাশি কৌতূহলের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্র জানায়, রাষ্ট্রে এখন মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সরকার ক্ষমতায়। কিন্তু জামায়াত-শিবির সমর্থকরা হঠাৎ করে এমন আচরণ দেখাচ্ছে যাতে ধারণায় আসছে এ বিশ্ববিদ্যালয় কি বিচ্ছিন্ন কোন দ্বীপ? গত ১৩ জুন বিদায়ী উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করেন প্রো ভিসি ড. শিরীন আখতারকে। এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রো ভিসিকে ভিসির রুটিন দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা প্রদান করে। এ রুটিন দায়িত্ব পালনের এক মাস অতিক্রান্ত হয়েছে ইতোমধ্যে। প্রো ভিসিকে যেমন পূর্ণকালীন ভিসি করা হয়নি, তেমনি নতুন কাউকেও দায়িত্ব দেয়া হয়নি। ক্যাম্পাস সূত্রে বলা হচ্ছে, এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ। এ ক্যাম্পাসে শিবির ও স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির সমর্থিতদের শক্তির নীরব প্রদর্শন একটি অশুভ লক্ষণ।
×