ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাসের হারে মেয়েরা, জিপিএ-৫-এ ছেলেরা এগিয়ে

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ১৮ জুলাই ২০১৯

 পাসের হারে  মেয়েরা,  জিপিএ-৫-এ  ছেলেরা এগিয়ে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হারে এগিয়ে গেছে মেয়েরা। আর জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে ছেলেরা। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশের পর বিশ্লেষণে এই চিত্র উঠে আসে। এছাড়াও গত বছরের চেয়ে এ বছর বেড়েছে জিপিএ-৫ এর সংখ্যাও। বুধবার সকাল দশটায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। এ সময় বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরাও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফল হস্তান্তরের পর দুপুর সাড়ে বারোটায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। ফলে দেখা গেছে মেয়েদের পাসের হার বেশি। মেয়েদের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ অন্যদিকে ছেলেদের পাসের হার ৭১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায় ছেলেরা জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪ হাজার ৫৭৬ জন যেখানে মেয়েরা জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২২ হাজার ৭১০ জন। এই বছর উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। যাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। গত বছর এ পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৬ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২৯ হাজার ২৬২ জন। সেই অনুযায়ী এবার পাসের হার বেড়েছে ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। এছাড়া জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১৮ হাজার ২৪ জন। রাজধানীর ভিকারুননিসার জিপিএ-৫ পাওয়া এক শিক্ষার্থী জানান, আমার অনেক বন্ধুরাই ভাল রেজাল্ট করেছে। পাসের হারে আমরা যেমন এগিয়ে গিয়েছি সেরকমভাবে জিপিএ পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলে ছাত্রদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমরা দুইভাবেই এগিয়ে থাকতাম। এখন ভবিষ্যতের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভাবব। ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১ হাজার ৮০৭ শিক্ষার্থী। বাকি ৫ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থী অন্যান্য বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ রয়েছে ঢাকা বোর্ডে ১৮ হাজার ১৮৭। এর মধ্যে ছেলে ৯৭৮৭ এবং মেয়ের সংখ্যা ৮৪০০ জন। এরপরেই রয়েছে রাজশাহী বোর্ড। মোট ৬৭২৯ জনের জিপিএ-৫ এর মধ্যে ছেলের সংখ্যা ৩৫৪১ এবং মেয়ের সংখ্যা ৩১৮৮। দু’একটি বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে থাকলেও সার্বিক ও মোট ফলে ছেলেরাই এগিয়ে গেছে। এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে ৮ হাজার ৯৮৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। গত ১ এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় ১১ মে। এরপর ১২ মে থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ২১ মে শেষ হয়। এইচএসসি ও সমমানে সব বোর্ডে পাস করেছে ৯ লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ শিক্ষার্থী। তার মধ্যে সাধারণ আটটি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১ হাজার ৮০৭ জন। যা গত বছর ছিল ৬ লাখ ৯১ হাজার ৯৫৮ জন এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ২৫ হাজার ৫৬২ জন। সেই হিসাবে এবার জিপিএ-৫ ও পাসের হার বেড়েছে। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার এইচএসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৫৫ দিনের মধ্যে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষকদের কঠোর প্রচেষ্টার কারণে আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই ফল প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছি। জিপিএ-৫ ও পাসের হার নিয়ে মন্ত্রী বলেন, চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হার ও জিপিএ-৫ বেড়েছে। তবে শুধু পাসের হার ও জিপিএ-৫ বাড়লে ভাল মানুষ তৈরি হয় না। শিক্ষার্থীদের মানবিক গুণে গুণান্বিত হতে হবে। নীতি নৈতিকতা নিয়ে বড় হতে হবে। স্বদেশ প্রেমে উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
×