স্টাফ রিপোর্টার ॥ উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় এবার শূন্য শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে। এ বছর ৪১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি, যেখানে গতবছর এরূপ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫৫। তবে এর বিপরীতে শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এ বছর ৯০৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। যেখানে গতবছর শতভাগ পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৪০০।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এই ফলকে ‘আশা জাগানিয়া’ বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে কোন শিক্ষার্থী পাস না করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আনা হবে নজরদারির মধ্যে বলে জানান। বুধবার সকাল দশটায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলের অনুলিপি আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে ফল ঘোষণা করা হয়।
এদিকে, চলতি বছরে এইচএসসি পর্যায়ে ৭৩.৯৩ ভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭,২৮৬ পরীক্ষার্থী। এদের মধ্যে দেশের আটটি শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসিতে পাসের হার ৭১.৮৫%। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১,৮০৭ জন। এ বছর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৮৮.৫৬ শতাংশ। যাতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২৪৩। আর কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৮২.৬২ শতাংশ। এতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২৩৬ জন।
কোন শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করতে পারেনি। এছাড়াও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীন সাতটি, দিনাজপুর বোর্ডের অধীন সাতটি, কুমিল্লা বোর্ডের অধীন তিনটি, চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করতে পারেনি। এছাড়াও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সাত প্রতিষ্ঠান ও ডিআইবিএস ঢাকার অধীন একটি প্রতিষ্ঠানেরও কেউ পাস করেনি।
যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কোন শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি সেগুলাকে নজরদারির মধ্যে আনা হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, কোন প্রতিষ্ঠান থেকে একজন শিক্ষার্থীও পাস করবে না- এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমরা চাই না। যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি সেগুলোকে নজরদারির মধ্যে আনা প্রয়োজন।
এদিকে, শতভাগ পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আটটি বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে। শতভাগ ফেল করার মতো শতভাগ পাসে এগিয়ে এই বোর্ড। ঢাকা বোর্ডের অধীন শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা রয়েছে ৫২টি। এছাড়াও রাজশাহী বোর্ডে ৩৪, কুমিল্লা বোর্ডে ৩১, দিনাজপুর বোর্ডে ২০, যশোর বোর্ডে ১৮, সিলেট বোর্ডে সাতটি, বরিশালে পাঁচটি এবং চট্টগ্রাম বোর্ডে চারটি প্রতিষ্ঠান শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
এছাড়াও, শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন ৬১৫, কারিগরি বোর্ডের অধীন ১২১ এবং ডিআইবিএস ঢাকার অধীন দুটি প্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে।
গত ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় মে মাসের মাঝামাঝি। পরীক্ষা শেষের ৫৫ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ করা হলো। আটটি সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরিসহ ১০টি শিক্ষা বোর্ড থেকে এ বছর ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে ৯ লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: