ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতি ॥ জাতিসংঘ প্রতিবেদনের বিরোধিতা মাদুরো সরকারের

প্রকাশিত: ০১:২৩, ১৮ জুলাই ২০১৯

ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতি ॥ জাতিসংঘ প্রতিবেদনের বিরোধিতা মাদুরো সরকারের

অনলাইন ডেস্ক ॥ ভেনেজুয়েলা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের করা প্রতিবেদনে হতাশা প্রকাশ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ আরিয়াজা। সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরসের সঙ্গে দেখা করে এই হতাশা ব্যক্ত করেন রাজনৈতিক ও মানবিক সংকটে জর্জরিত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতিবেদনটি যেভাবে তৈরি ও ঘোষণা করা হয়েছে তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি আমরা। এর আগে দেশটির প্রেসিডন্ট নিকোলাস মাদুরোও ওই প্রতিবেদনের বিরোধিতা করেছিলেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতি জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের কাছে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি তৈরির জন্য ৫৫৮টি সাক্ষাতার নেওয়া হয় বলে জানান গবেষকরা। তারা জানান, গত বছর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ছিলো ৫ হাজার ২৮৭ জন। আর চলতি বছর এখন পর্যন্ত এই সংখ্যা ১৫৬৯ জন। এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জানায়, পুলিশ অপরাধীদের আটক করে গুলি করে এবং ঘটনা এমনভাবে উপস্থাপন করে যেন মনে হয় আসামি পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করেছিলো। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা্র বিস্ময়কর। তবে ভেনেজুয়েলার সরকারের দাবি, এই প্রতিবেদনে বিরোধী দলের পক্ষ নেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া নিয়েও অভিযোগ করেন। এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোও এই প্রতিবেদনের সমালোচনা করে জাতিসংঘে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, প্রতিবেদনটি ভারসাম্যহীন ও পক্ষপাতদুষ্ট। দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন পরিস্থিতি তুলে ধরতে রাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনও তথ্য নেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র কয়েকজন ব্যক্তির সাক্ষাতকার নেওয়া হয়েছে যাদের ওপর সাম্রাজ্যবাদী মিডিয়া কর্তৃত্ব ছিলো। সরকারের ‘স্বৈরাচার’ অভিযোগও অস্বীকার করেন মাদুরো। মাদুরো প্রশ্ন করেন, বিগত ২০ বছরে ২৩ বার জয়লাভ করা একটি রাজনৈতিক দলকে আপনি স্বৈরাচার বলতে পারেন? জনগণের নির্বাচিত সরকারকে আপনি স্বৈরাচার বলতে পারেন। যারা নৃগোষ্ঠী, শিশু, নারী ও বয়োজেষ্ঠদের অধিকার নিশ্চিত করেছে তাদের আপনি স্বৈরাচার বলতে পারেন? জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অরেজাও ওই প্রতিবেদন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের চেষ্টা করছে সরকার। সাংবাদিকদের তিনি জানান, গুতেরেসও েএই শান্তি আলোচনায় সহায়তার পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছেন। ২০১৫ সাল থেকে খাবার ও চিকিৎসার অভাবে সৃষ্ট মানবিক সংকট থেকে বাঁচতে ৪০ লাখ ভেনেজুয়েলান দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে। নির্বাচনি কারচুপির অভিযোগ আর অর্থনৈতিক সংকটের বিরুদ্ধে এ বছরের শুরুতে ভেনেজুয়েলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের সুযোগে ২৩ জানুয়ারি নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদো। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে অবৈধ দাবি করে নিজেকে বৈধ অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন তিনি। এক ভিডিও বার্তায় আকস্মিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেন গুইদো। ভিডিওতে তার সঙ্গে সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যকেও দেখা যায়। এই অভ্যুত্থানে সমর্থন ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে কথিত ওই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা নস্যাতের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। তিনি বলেন, ভেনেজুয়েলা কখনোই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে মাথানত করবে না।
×