ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে রিকশা উপহার

প্রকাশিত: ০৮:২২, ১৮ জুলাই ২০১৯

 গাজীপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে রিকশা উপহার

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরে চোলাই মদ প্রস্তুত ও বিক্রি ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে চার জনকে চারটি রিকশা উপহার দেওয়া হয়েছে। এসময় চোলাই মদ ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছে একই গ্রামের ৭০টি পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে রিকশাগুলো হস্তান্তর করা হয়। জিএমপি’র সদর থানার ওসি সমীর চন্দ্র সূত্রধর জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বনগ্রামের প্রায় ৭০টি পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবৎ চোলাইমদ তৈরি এবং বিক্রি হয়ে আসছিল। পুলিশ একাধিকবার ওই এলাকায় অভিযান বিপুল পরিমান দেশীয় চোলাই মদসহ মদ তৈরির কারখানা ও তৈরির সরঞ্জামাদি ধ্বংস করলেও নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবারও গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে বনগ্রামে অভিযান চালিয়ে ১০০টি ড্রামভর্তি চোলাইমদ ও মদ তৈরির সরঞ্জামাদি উদ্ধার ও ধ্বংস করা হয়। এসময় ড্রামগুলো আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, পুলিশ পর্যায়ক্রমে ব্যাপক অভিযান চালনোর একপর্যায়ে বনগ্রাম এলাকার নারী-পুরুষরা মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক ও সুস্থ্য জীবনে ফিরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করে। ইতোমধ্যে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে উঠোন বৈঠক করে মাদক ব্যবসায়ীদের স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনে ফিরে আসার আহবান জানান। এ সময় পুলিশ কমিশনার তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য পুনর্বাসনসহ সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। এতে সাড়া দিয়ে ওই গ্রামের চোলাই মদ ব্যবসায়ী শতাধিক নারী-পুরুষ পুলিশ মেট্টোপুলিশ কমিশনার মোঃ আনোয়ার হোসেনের নিকট আত্মসমর্পন করে দেশীয় চোলাই মদ প্রস্তুত ও বিক্রয় করবে না বলে অঙ্গীকার করে। এরই ধারাবাহিকতায় চোলাই মদ ব্যবসা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা ওই গ্রামের ৪ ব্যাক্তিকে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সদর থানা ক্যাম্পাসে আনুষ্ঠাণিকভাবে প্যাডেল চালিত ৪টি রিকশা উপহার দেয়া হয়। পুলিশের এ উদ্যোগে অন্যদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। চোলাই মদ ব্যবসা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা অন্যদেরকেও পর্যায়ক্রমে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে স্বাবলম্বী হতে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়াও ইতোপূর্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভিন্ন মামলার ব্যাপারেও আইনী সহায়তা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পুলিশের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। চোলাই মদ প্রস্তুত ও বিক্রি ছেড়ে রিকশা উপহার পাওয়া ব্যাক্তিরা হলেন- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বনগ্রাম এলাকার চন্দ্র মোহনের ছেলে সুশীল বর্মণ (৩৫), ধীরেন্দ্র বর্মণের ছেলে দুর্জয় বর্মণ(২২), দেবেন্দ্র বর্মণের ছেলে মঙ্গল বর্মণ (৪৫) এবং হীরেন্দ্র চন্দ্র বর্মণের ছেলে বিশ্বনাথ চন্দ্র বর্মণ (৪৮)। রিকশা হস্তান্তর অনুষ্ঠাণে অন্যান্যর মধ্যে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার আবু লাইচ ইলিয়াস মোহাম্মদ জিকু, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুঞ্জুরুল ইসলাম ও সদর থানার ওসি সমীর চন্দ্র সূত্রধরসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
×